হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, মরুভূমির লাল সূযটা দিগন্তের ওপারে মুখ লুকানো। সে হয়তো লজ্জায় দুঃখে পালিয়ে বাঁচল। ইমাম শিবিরের করুণ আহাজারী, হয়তো তারও সহ্য হয়নি। পিপাসায় কাতর প্রাণ উষ্ঠাগত।
কচি শিশুদের দুঃখে, পাষাণ হৃদয়ও বিচলিত হয়। কিন্তু নরাধম এজিদ বাহিনীর হৃদয়ে কোন দয়ামায়া নেই। তিনদিন ধরে নবীবংশের প্রিয়জনরা পানিও পাচ্ছে না। দুরাত্মা এজিদ পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।
একি নিষ্ঠুরতা! ইমাম বাহিনীর সবাই পরম ধৈর্যের সাথে, তাদের জীবনের শেষ রাতটি ইবাদত বন্দেগীতে কাটালেন। অন্তপুরে নারী শিশুদের করুণ কান্নার ধ্বনি। কারবালার সেই রাত্রীকে আরো ভারী করে তুলেছিল।
গভীর নিশীথের মরু হাওয়া যেন অশুভ সংকেত নিয়ে ছুটে গেল কোন অজানার পথে। এরপর আযানের ধ্বনী যেন হৃদয়কে স্পর্শ করলো। এই সুমধুর ধ্বনী করুণ আর্তনাদ হয়ে যেন বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিল তোমরা কে কোথায় আছো, দেখে যাও আজ কি ঘটতে চলেছে! বর্ণিত আছে হযরত আলী আকবরের কন্ঠস্বর ছিল মহানবী (সঃ) এর অনুরুপ। তার কন্ঠে আজানের ধ্বনী এমনকি এজিদ বাহিনীর মাঝেও বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু পিশাচদের মাঝে তার কোনো প্রতিক্রিয়া হয়নি।
এজিদের দলের প্রতিক্রিয়া, হৃদয়স্পন্দন না হলেও তা বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ ধরে মুসলমানদের হৃদয়ে ধ্বনিত হচ্ছে।
কেবল মুসলমানই নয়, যুগ যুগ ধরে কারবালার মর্মগ্রাহী ঘটনা ভিন্নধর্মী অর্থাৎ অমুসলিমদের হৃদয়কেও নাড়িয়ে যাচ্ছে। সেই আবেগ ও টান থেকেই বহু অমুসলিম ইরাকের কারবালা জিয়ারতে এসেছেন, আসছেন।
কারবালার করুণ কাহিনী নিয়ে যুগে যুগে বহু অমুসলিম তাদের আবেগ-অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। কারবালার শিক্ষাকে নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করেছেন, সে অনুভূতি আবার লিখে প্রকাশও করেছেন। তেমনি একজন ভারতীয় হিন্দু ধর্মালম্বী সাংবাদিক সৌরভ ষড়ঙ্গী! কলকতার নামকরা পত্রিকা আনন্দবাজারে লেখা তার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কারবালার হৃদয়বিদারক ঘটনা ও মর্মগাঁথা। কারবালার ঘটনা এভাবেই ছুঁয়ে যাক প্রতিটি সজাগ ও বিবেকবান হৃদয়।
লেখা: রাসেল আহমেদ রিজভী