۱۰ فروردین ۱۴۰۳ |۱۹ رمضان ۱۴۴۵ | Mar 29, 2024
ইমাম আলী ইবনুল হুসাইন যাইনুল আবিদীনের ( আঃ )
ইমাম আলী ইবনুল হুসাইন যাইনুল আবিদীনের ( আঃ )

হাওজা / হযরত ইমাম আলী ইবনুল হুসাইন ( আঃ ) ৩৮ হিজরীর ৫ শাবান মতান্তরে ৩৬ হিজরীর ১৫ জুমাদাল উলা জন্ম গ্রহণ করেন ।

হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, পর্ব ৯-  মুয়াবিয়া জাহান্নামের দিকে আহবানকারী বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা ( আমীর ):

সহীহ বুখারীতে বর্ণিত হয়েছেঃ আবূ সাঈদ বলেনঃ আমরা ( মসজিদে নববী নির্মাণ করার সময় ) একটি করে ইট বহন করছিলাম এবং আম্মার তখন দুটো করে ইট বহন করছিলেন । অতঃপর মহানবী ( সা. ) তাকে দেখে তার থেকে ধূলাবালি ফূঁ দিয়ে ঝেড়ে বললেনঃ আম্মারের জন্য আক্ষেপ ! তাকে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি হত্যা করবে এমতাবস্থায় যে সে তাদেরকে বেহেশতের দিকে আহবান জানাবে এবং তারা তাকে জাহান্নামের দিকে আহবান জানাবে । আম্মার তখন বলছিলেনঃ আমি মহান আল্লাহর কাছে ফিতনা থেকে আশ্রয় নিচ্ছি ( দ্রঃ সহীহ বুখারী , কিতাবুস সালাত , মসজিদ নির্মাণে পরষ্পর সহযোগিতার অনুচ্ছেদ , হাদীস নং ৪৪৭ , পৃঃ ১২৩ ) ।

    ইতিহাস থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে যে জাহান্নামী বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি আম্মারকে হত্যা করবে তারা ছিল মুয়াবিয়া ও তার দল যারা হযরত আলীর বিরুদ্ধে সিফফীনে  যুদ্ধ করেছিল এবং এ যুদ্ধেই আম্মার ইবনে ইয়াসির ঐ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাতে শাহাদত বরণ করেন । তাই নিঃসন্দেহে মুয়াবিয়া জাহান্নামী বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতা , প্রধান ও আমীর হওয়ায় জাহান্নামের দিকে সবচেয়ে বড় আহবানকারী ও সবচেয়ে বড় বিদ্রোহী । জাহান্নামের দিকে জনগণকে আহবান , সত্যপন্থী ন্যায়পরায়ণ হিদায়তপ্রাপ্ত ইমাম মাওলা পবিত্র কুরআনের সমকক্ষ ও নিত্যসঙ্গী সত্যের মূর্ত্য প্রতীক আলী ( আঃ ) সত্য ও পবিত্র কুরআন যার সাথে এবং সত্য ও পবিত্র কুরআনের সাথে যিনি তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ এবং আম্মারের মতো বহু অগণিত পূণ্যবান ব্যক্তিকে হত্যার মতো অমার্জনীয় অপরাধসমূহে অপরাধী মুয়াবিয়া ও তার দলবল ( আলফিআতুল বাঘিয়াহ  ) । মুয়াবিয়া সবসময় মহানবীর আহলুল বাইত বিশেষ করে ইমাম আলী , ইমাম হাসান , ইমাম হুসাইনের সাথে বিরোধিতা করেই গেছে এবং তাঁদের অনুসারী ও সমর্থকদেরকে হত্যা , বন্দী ও জ্বালাতন অব্যাহত রেখেছে । মুয়াবিয়াই মসজিদের মিম্বরসমূহে হযরত আলীকে ( আ.) গালি দেওয়ার জঘন্য ঘৃণ্য বিদাতের প্রচলন করেছিল এবং দীর্ঘ ৯০ বছর হযরত আলীকে মিম্বর ও মসজিদসমূহ থেকে গালিগালাজ দান অব্যাহত ছিল । হযরত আলী ও আহলুল বাইতের প্রতি ঘৃণা ও বিদ্বেষের উপর প্রৃজন্মের পর প্রজন্ম প্রতিপালিত হয়েছে । এ ছাড়া আরো বহু অগণিত ইসলাম বিরোধী বদ প্রথা ও বিদআতের প্রসার এবং অন্যায় ও জোর – জুলুম ছিল মুয়াবিয়া , ইয়াযীদ ও উমাভী ( বনী উমাইয়া ) খলীফাদের কালো আমলনামা । হক্কুল ইবাদ ( বান্দাদের অধিকার ) হক্কুন্ নাস ( জনগণের অধিকার ) নষ্ট , হরণ ও পামাল ( পদদলিত ) করার পাপ মুয়াবিয়া , ইয়াযীদ এবং সকল উমাভী খলীফাদের গর্দানের ( ঘার ) উপর রয়েছে যা থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় নেই অপরাধীদের কেবলমাত্র মালিক বা অধিকারীদের ( সাহিবুল হক্ক ) কাছে তাদের হৃত হক্ক ও অধিকার ফিরিয়ে দেয়া ব্যতীত । কখন কবে কোথায় এ সব জালেম শাসক ও খলীফা জনগণ ও আ্ল্লাহর বান্দাদের হৃত অধিকার ফেরৎ দিয়েছে তাদের ক্ষতি পূরণ করেছে ? এ সব পথভ্রষ্ট বিচ্যুত ধর্মবিরোধী উমাভী শাসক ও খলীফা আল্লাহর দ্বীনে ও উম্মাহর মাঝে ঘৃণ্য বিদআতসমূহের প্রচলন করেছে । হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস বলেছেনঃ তারা ( জনগণ ) আলীর প্রতি বিদ্বেষ ও ঘৃণা পোষণের কারণে ( রাসূলুল্লাহর ) সুন্নাত বর্জন ও ত্যাগ ( তরক) করেছে ।

فَإِنّهُم قَد ترکو السنّة َ مِن بُغضِ عَلِيٌّ .

(দ্রঃ সুনানুন নাসাঈ , পৃঃ৫০৬ )

সুনানে নাসাঈর ব্যাখ্যাতা সিন্দী বলেছেনঃ আলী রাসূলুল্লাহর সুন্নাহর পাবন্দ ছিলেন এবং সুন্নাহ পালন করতেন ও মেনে চলতেন । আর তাই এরা ( জনগণ ও বনী উমাইয়া ) আলীর প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করার কারণে রাসূলুল্লাহর সুন্নাহ বর্জন ও ত্যাগ করেছিল ।

    মুকরী বলেছেনঃ বনী উমাইয়া যখন কোনো নবজাতকের ব্যাপারে শুনত যে তার নাম আলী তখন তাকে তারা হত্যা করত । ( দ্রঃ তাহযীবুত তাহযীব , খঃ ৭ , পৃঃ ৩১৯ )

     মুয়াবিয়া সিফফীনে যাওয়ার পথে শামবাসীদেরকে নিয়ে ( শুক্রবারের পরিবর্তে ) বুধবারে জুমআর নামায পড়েছিল । ( দ্রঃ মুরূযুয যাহাব , খঃ ৩ , পৃঃ ৪১ )

      মুয়াবিয়াকে আনুগত্য করার বিষয় শামবাসীদেরকে এতটা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে উন্নীত করেছিল যে তারা আলীকে অভিশাপ দেয়াটা সুন্নাহয় ( প্রথা ও রীতিনীতি ) পরিণত কর ফেলেছিল যে এর ( এ ঘৃণ্য প্রথার ) উপর ছোটরা বড় হয়েছে এবং বড়রা মৃত্যু বরণ করেছে । ( প্রাগুক্ত )

      হযরত আলীর (আঃ ) চিঠি নিয়ে সাসাআহ মুয়াবিয়ার কাছে গেলে মুয়াবিয়া তার সামনে গণ্যমান্য লোকের উপস্থিতিতে বললঃ যমীন আল্লাহর , আর আমি আল্লাহর খলীফা । অতএব আমি আল্লাহর মাল ( ধনসম্পদ ) থেকে যা নিব তা আমার এবং যা আমি ছেড়ে দিয়েছি অর্থাৎ নেই নাই সেটাও আমার জন্য জায়েয ছিল ।তখন সাসাআ বললেনঃ হে মুয়াবিয়া ! তোমার প্রবৃত্তি ( নফস ) যে জিনিসটা তোমার নয় অজ্ঞতা বশতঃ তা হস্তগত ও অধিকার করার আকাঙ্খা জাগায় তোমার মাঝে তাই পাপ করো না । ( প্রাগুক্ত , পৃঃ ৫২ )

     প্রখ্যাত সাহাবী আনাস ইবনে মালেক ( রাঃ ) বলতেনঃ রাসূলুল্লাহর যুগে যা প্রচলিত ছিল তা এখন আর দেখতে পাচ্ছি না ( বিদ্যমান নেই ) । তাকে জিজ্ঞেস করা হলঃ তাহলে নামায কী ( নামায কি অক্ষত ও অবিকৃত আছে ) ? তিনি বললেনঃ তাহলে নামাযের উপর তোমরা যা যা আনয়ন করেছ সে গুলো কী ছিল ? ( তোমরা নামাযেরও বারোটা বাজিয়েছ অর্থাৎ নামাযও বিকৃত করে ফেলেছ ) ( দ্রঃ সুনান-ই তিরমিযী , বাবুল ইতিসাম বিস সুন্নাহ )…চলবে…

লেখা: মুহাম্মাদ মুনীর হুসাইন খান

 

দ্রষ্টব্য: হাওজা নিউজে প্রকাশিত সমস্ত নিবন্ধ লেখকদের ব্যক্তিগত মতামতের উপর ভিত্তি করে। হওজা নিউজের নীতি লেখকের মতামতের সাথে একমত হওয়া জরুরী নয়। 

تبصرہ ارسال

You are replying to: .