۶ اردیبهشت ۱۴۰۳ |۱۶ شوال ۱۴۴۵ | Apr 25, 2024
গ্রন্থ শিরোনাম : চল্লিশটি অমীয় বাণী। (সমস্যা সমাধানের জন্য বারোটি দোয়া সহ)  সংকলক : আল্লামা শেখ আব্বাস কুম্মী (রহঃ)।
মাওলানা মাসুম আলী গাজী

হাওজা / গ্রন্থ শিরোনাম : চল্লিশটি অমীয় বাণী। (সমস্যা সমাধানের জন্য বারোটি দোয়া সহ) সংকলক : আল্লামা শেখ আব্বাস কুম্মী (রহঃ)।

হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, অষ্টাদশ অমীয় বাণী। 

গ্রন্থ শিরোনাম : চল্লিশটি অমীয় বাণী।

(সমস্যা সমাধানের জন্য বারোটি দোয়া সহ) 
সংকলক : আল্লামা শেখ আব্বাস কুম্মী (রহঃ)।

বিষয় : কর্মজীবনের হিসাব সম্পর্কে। 

ইমাম মুহাম্মদ বাক্বির (আঃ) বলেছেন :
اَلْکَمَالُ کُلُّ الْکَمَالِ اَلتَّفَقَّهُ فِیْ الدِّیْنِ وَ الصَّبْرُ عَلَی النَّائِبَةِ وَ تَقْدِیْرُ الْمَعِیْشَةِ
"দ্বীনের বিষয়ে অনুধাবন করা,  প্রতিকূলতা ও দুর্যোগের মধ্যে ধৈর্য্য ধারণ করা এবং জীবনযাত্রার খরচ হিসেব করা সবচেয়ে বড় পূর্ণতা ও চরমোৎকর্ষ।"
তোহাফুল উক্বুল পৃষ্ঠা ২১৩..

শেখ আব্বাস কুম্মী (রহঃ) বলেন যে, শেষ বাক্যটির অর্থ হল, প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত মাসিক আয় অনুমান করে ব্যয় করা। সুতরাং কোন ব্যক্তির আয় যদি তিন টাকা হয় তাহলে প্রতিদিন এক টাকা (অর্থাৎ তার আয়ের এক তৃতীয়াংশ) ব্যয় করা উচিত, এর বেশি ব্যয় করা অনুচিত। সে যদি একদিন ভুল বশতঃ বেশি ব্যয় করে, তাহলে তার পরের দিন কম ব্যয় করা উচিত। যাতে মানুষের মাঝে হাত পাতা এবং ঋণ গ্রহণের অপমান এড়ানো যায়। 

ওস্তাদ (সেক্কাত-উল-ইসলাম) নূরী, মুস্তাদরাক আল-ওয়াসায়েল নামক গ্রন্থের শেষে উদ্ধৃত করেছেন যে, আল্লামা মুহাম্মাদ তক্বী মজলিসী (রহঃ)-এর মা ছিলেন বুদ্ধিমত্তা, খোদাভীরু, স্পষ্টবাদী এবং আধ্যাত্মিক দৃষ্টিসম্পন্ন নারী। তাঁর তাক্বওয়া সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে যে, তাঁর স্বামী মোল্লা মকসুদ আলী যখন সফরে যাচ্ছিলেন তখন নিজের পুত্র আল্লামা মুহাম্মদ তক্বী মজলিসী (রহঃ) এবং মোল্লা মুহাম্মদ সাদিক্ব-কে দ্বীনি শিক্ষা অর্জনের জন্য মোল্লা আব্দুল্লাহ শুশ্তারী এর কাছে নিয়ে যান এবং তাদের শিক্ষার যত্ন নিতে তাঁকে আহ্বান জানান। অতঃপর তিনি যাত্রা শুরু করেন। 
কিছু দিনের মধ্যে ঈদের উৎসব আসে, মোল্লা আব্দুল্লাহ আল্লামা মুহাম্মদ তক্বী মজলিসী (রহঃ)-কে তিন তুমান (ইরানি মুদ্রা) দিয়ে তাঁকে তাঁর আর্থিক প্রয়োজনে খরচ করতে বলেন। তিনি বলেন : আমি আমার মায়ের অনুমতি ও অবগত বিহীন এই অর্থ ব্যয় করতে পারব না। সুতরাং যখন তিনি নিজের মায়ের সেবায় আসেন, তখন তিনি পুরো ঘটনা সম্পর্কে তাঁকে ওয়াকিবহাল করেন। মা তাঁকে বলেন : তোমার বাবার একটা দোকান আছে যা থেকে চৌদ্দ টাকা (সেই যুগের মুদ্রা) লাভ হয় আর এটা তোমার খরচের সমান। সুতরাং যেটা আমি তোমার জন্য নির্দিষ্ট করেছি সেটা তোমার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তাই এখন তুমি যদি ওই তিন তুমান নিয়ে নাও তবে তোমার জীবনধারণের মধ্যে পার্থক্য বা পরিবর্তন এসে যাবে। আর সেই সাথে এই টাকাও শেষ হয়ে যাবে এবং তুমি তোমার প্রথম অভ্যাসটি ভুলে যাবে। ফলস্বরূপ তুমি তোমার স্বপ্ল খরচে ধৈর্য্যধারণ করতে পারবে না। যার ফলে আমিও মাঝে মাঝে বাধ্য হয়ে, তোমার দরিদ্রতার ব্যপারে অভিযোগ জানাতে মোল্লা আব্দুল্লাহ এবং অন্যদের কাছে যাব। আর তুমি জানো যে, এটা আমাদের গৌরব ও সম্মানের বিপরীত।
যখন মোল্লা আব্দুল্লাহ এ সম্পর্কে জানতে পারলেন তখন তিনি দুই ভাইয়ের জন্য দোয়া করেন এবং মহান আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রার্থনা কবুল করেন। আর সেই সাথে মহান আল্লাহ তাআলা তাঁদেরকে ইসলামের প্রচারক ও মহানবী (সাঃ)-এর দ্বীনের প্রসারকারীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেন এবং আল্লামা মজলিসী (রহঃ)-এর মতো একজন মূল্যবান ব্যক্তিকে মানুষের মাঝে আত্মপ্রকাশ করান। 

উপকার : 

আপনার জানা উচিত যে, উল্লেখিত হাদীসটিতে মসিবত ও কঠিনত্বে ধৈর্য্যধারণে উৎসাহিত করা হয়েছে। যেহেতু বহু হাদীস ধৈর্য্যধারণের সংজ্ঞা এবং প্রশংসায় বর্ণিত হয়েছে। তাই এখানে আমি একটি রেওয়ায়েত ও উপাখ্যান উল্লেখ করা যথেষ্ট মনে করছি।
ইমাম জাফর সাদিক্ব (আঃ) বর্ণনা করেছেন :
"যখন কোন মুমিনকে কবরে প্রবেশ করা হয়, তখন নামায তার ডান দিকে এবং যাকাত তার বাম দিকে থাকে। কল্যাণকর কর্ম তার মাথার দিকে আর ধৈর্য্য একদিকে দাঁড়িয়ে থাকে। যখন প্রশ্নকারী দুই ফেরেশতা আসেন তখন ধৈর্য্য, নামায, যাকাত ও নেক আমলকে বলে : তোমার সঙ্গীর যত্ন নাও এবং তাকে রক্ষা কর। যখন তুমি অক্ষম হয়ে যাবে তখনও তার সাথে থাকবে।"

উপাখ্যান : 
কিছু ইতিহাসে বর্ণিত হয়েছে যে, কিসরা (ইরানের প্রাচীন নৃপতিগণের পদবী) হাকিম এর উপর বিশাল ক্ষুব্ধ হয়ে আদেশ দেন যে, একে একটি অন্ধকার জায়গায় বন্দী করে রাখ আর সেই সাথে শৃঙ্খল ও গলাবদ্ধে আবদ্ধ কর। এই অবস্থায় কয়েক দিন কেটে যায়। কিসরা একদিন তাকে দেখতে কাওকে পাঠালেন। ওই ব্যক্তি তাকে দেখতে এসে প্রত্যক্ষ করে যে, হাকিম শান্তি ও সন্তুষ্টির অবস্থায় আছে। তখন সে জিজ্ঞাসা করে যে, তুমি বিশাল কষ্ট ও মসিবতের সম্মুখীন আছো কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে যে, তুমি খুবই ভালো ও কুশল মঙ্গলে জীবন যাপন করছো (এর কারণ কি?)
হাকিম বলে, "আমি ছয়টি জিনিসের একটি খামির তৈরি করেছি, যা ব্যবহার করি। এজন্যই আমার সময় এত সুখের মধ্যে কেটে যাচ্ছে।

ওই ব্যক্তি বলে : ওই খামিরের ব্যপারে আমাকেও বল, যাতে মসিবত ও কষ্টের সময় আমিও তার সদ্ব্যবহার করতে পারি।
হাকিম বলে : ওই ছয়টি জিনিস হল :
1⃣ সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর ভরসা এবং নির্ভরতা।
2⃣ ভাগ্যে যা আছে তা অবশ্যই হবে। 
3⃣ যে ব্যক্তির পরীক্ষা করা হচ্ছে, ধৈর্য্যধারণ তার জন্য সর্বোত্তম জিনিস। 
4⃣ যদি ধৈর্য্যধারণ না করি তাহলে আমি কী করব?
5⃣ এই মসিবতের চেয়েও আরও কঠিন মসিবত আসতে পারে। 
6⃣ এক সময় থেকে অন্য সময় পর্যন্ত মুক্তি এবং স্বাধীনতার আশা আছে।

কিসরা'র রাজাকে যখন এ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করানো হয় তখন তিনি তাকে মুক্তির আদেশ দিলেন এবং তাকে সম্মান জানালেন।

আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মদ ওয়া আ'লে মুহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারাজাহুম ওয়াহ শুরনা মাআহুম ওয়াল আন আদুওয়াহুম।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .