۳۱ فروردین ۱۴۰۳ |۱۰ شوال ۱۴۴۵ | Apr 19, 2024
ইরানের সামরিক শক্তি
ইরানের সামরিক শক্তি

হাওজা / ইরানের সামরিক শক্তি অপ্রচলিত ও অপ্রথাসিদ্ধ রণকৌশল ও কৌশলগত স্থান সমূহে (অধিষ্ঠিত) প্রক্সি সমূহের মাধ্যমে জোরদার ( ও সমৃদ্ধ ) হয় ।

হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, হোর্মূয্ প্রণালীর মতো বাবুল মান্দাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । ভূমধ্যসাগর তথা ইউরোপ থেকে ভারত মহাসাগরে যাতায়াতের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত সামুদ্রিক বাণিজ্যিক রুটের প্রবেশদ্বার বা ফটক হচ্ছে এই বাবুল মান্দাব ।

এই বাবুল মান্দাবের মাধ্যমেই ইউরোপ পূর্ব আফ্রিকার সাথেও যুক্ত এবং এ পথেই পূর্ব - পশ্চিমের বাণিজ্য বা আন্তর্জাতিক ব্যবসা বাণিজ্যের সিংহভাগ সুসম্পন্ন হয় বলে এ প্রণালীকে বিশ্বায়নের শাহরগ বা প্রধান ধমণীও বলা হয়। আবার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াও এ প্রণালীর মাধ্যমে ইউরোপের সাথেও যুক্ত । তাই এ রুট অর্থাৎ বাবুল মান্দাবের নিরাপত্তার ওপর বহুলাংশে বিশ্ব বাণিজ্য নির্ভরশীল ।

বাবুল মান্দাবে যে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বিশ্ব বাণিজ্য ও অর্থনীতির ওপর মারাত্মক বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বিশেষ করে তা যদি মুক্ত নৌ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে । তাই বাবুল মান্দাবের নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব পাশ্চাত্য তথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অত্যন্ত অপরিসীম । আর এ কারণেই হুথিরা ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পাশ্চাত্য - ইঙ্গ - মার্কিন - ইসরাইল - সৌদি - আমিরাতী আক্ষের সমর্থনপুষ্ট জেনারেল আবদু রব্বিহ্ মনসূর্ আল - হাদী সরকার হুথিদের নেতৃত্বাধীন আনসারুল্লাহর হাতে পদচ্যুত হলে পাশ্চাত্য বিশেষ করে ইংঙ্গো মার্কিন ইসরাইলী শয়তানী ইবলীসী অক্ষের প্রত্যক্ষ সাহায্য , মদদ ও পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে সৌদি - আমিরাতের নেতৃত্বাধীন তথাকথিত ৩৩ জাতি জোট ইয়েমেন এবং আনসারুল্লাহ সরকার ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৬ মার্চ সর্বাত্মক আগ্রাসন ও যুদ্ধ শুরু করে যা ৭ বছর পার হয়ে যাওয়ার পর আজও অব্যাহত আছে ।

জলে - স্থলে - অন্তরীক্ষে সার্বিক কঠোর নিষেধাজ্ঞা ও অবরোধ আরোপ করে এবং ব্যাপক আক্রমণ ও ধ্বংস যজ্ঞ চালিয়ে রাজধানী সানার আনসারুল্লাহ প্রশাসন ও সরকারকে উৎখাত করতে পারে নি গোটা পাশ্চাত্য ( ন্যাটো ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ) এবং তাদের তল্পীবাহক সৌদি - আমিরাতের নেতৃত্বাধীন তথাকথিত এই ৩৩ জাতি জোট যদিও তারা ইয়েমেনকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে , লক্ষাধিক ইয়েমেনী পুরুষ , নারী ও শিশু শহীদ হয়েছে এবং মিলিয়ন মিলিয়ন ইয়েমেনী তীব্র খাদ্য সংকটের শিকার । পাশ্চাত্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাবুল মান্দাবের নিয়ন্ত্রণ আনসারুল্লাহর হাতে থেকে ছিনিয়ে নিজেদের হাতে নিতে চায় বলে এখনো তারা এ রক্তক্ষয়ী ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে । আর সৌদি আরব ও আরব আমিরাত এবং তাদের নেপথ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পাশ্চাত্য এ যুদ্ধে যে ব্যর্থ হয়েছে তা দিবালোকের মতো স্পষ্ট । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরান আক্রমণের হুমকি দিলেই ইরানও ইসরাইল ও মধ্য প্রাচ্যে অবস্থিত সকল মার্কিন ঘাঁটি ও তেলের স্থাপনা সমূহ আক্রমণ এবং হোরমূয প্রণালী বন্ধ করার পাল্টা হুমকি দেয় এবং ইরানের পক্ষে এ কাজ করা সম্ভব । শুধু হোর্মূয প্রণালী বন্ধ করা নয় বরং বাবুল মান্দাব প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ারও সামর্থ্য রাখে ইরান। আর এ বিষয়টা সিএনএনের এ লেখাটি থেকে বেশ ভালো ভাবেই বোঝা যায় । আর বিশ্ব অর্থনীতিতে এ দুই প্রণালীর গুরুত্ব অপরিসীম । বরং এ প্রণালীদ্বয় জীবন প্রাণ স্বরূপ ! তাই ইরানের আশেপাশের সকল দেশের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছড়ি ঘুরিয়েছে ও সামরিক হামলা চালিয়েছে এবং ইরাক ও আফগানিস্তানের মতো দেশ সামরিক কায়দায় জবরদখলও করেছে । কিন্তু আজ পর্যন্ত ইরান আক্রমণ করার সাহস পায় নি। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভালোভাবেই জানে যে এ কাজ করলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ বিশ্ব অর্থনীতি কোলাপ্স করবে এবং সমগ্র বিশ্বজুড়ে সুপার ক্রাইসিস ( মহাসংকট ) দেখা দেবে । যেহেতু ইরানের সাথে সামরিক সংঘাত ও যুদ্ধে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশী সেহেতু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেবল ইরান আক্রমণের হুমকি দেয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে । তবে রাহবার হযরত আয়াতুল্লাহ আল উযমা ইমাম খামেনেঈর দৃষ্টিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সাথে সাক্ষাৎ সামরিক যুদ্ধে জড়াবে না বরং অর্থনৈতিক যুদ্ধ ((যেমন: তীব্র কঠোর অর্থনৈতিক অবরোধ )) যা ৪২ বছর আগে থেকে শুরু হয়েছে কেবল সেটাই চালিয়ে যাবে ।

এ অবস্থা ও ময়দানি পরিস্থিতি থেকে আমরা মহান আল্লাহর সুন্নাত ও রীতি এবং ঐশী প্রতীজ্ঞার বাস্তব সত্যতা উপলব্ধি করতে পারি।

অনুবাদকের মন্তব্য : সিএনএনে প্রকাশিত লেখাটিতে লেখক ব্র্যাড লেন্ডেন ইরানের অপ্রচলিত অপ্রথাসিদ্ধ রণ কৌশলের চার উপাদানের পাশাপাশি আরেকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা হচ্ছে ইরানের ড্রোন ( পাইলট বিহীন প্লেন ) তা উল্লেখ করেন নি । এই ইরান ড্রোন শক্তি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , রাশিয়া ও চীনের পরে ৪র্থ স্থানে রয়েছে এবং ড্রোন ব্যবহারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরপরই ইরানের অবস্থান দ্বিতীয় ।

ইরানী ড্রোন এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের তীব্র মাথাব্যথা ও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ।

সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ পশ্চিম এশিয়ায় ( মধ্যপ্রাচ্যে )

ইরানের বর্ধনশীল সামরিক শক্তির কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভঙ্গুর ও ক্ষয়িষ্ণু অবস্থা ব্লুমবার্গের নিম্নোক্ত রিপোর্টে মার্কিন সেন্ট্রাল কম্যান্ড প্রধান জেনারেল ম্যাক্কেনযীর বক্তব্যে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে । যেহেতু

অত্র অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক প্রাধান্য ও শ্রেষ্ঠত্ব নি:শেষ হয়ে যাচ্ছে ও হ্রাস পাচ্ছে সেহেতু ইরান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দের জন্য নিত্য নৈমিত্তিক হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে !

জেনারেল ম্যাক্কেনযী সতর্ক করে দিয়েছেন যে ইরান কর্তৃক ক্ষুদ্র ও মাঝারী সাইজের গোয়েন্দা ও আক্রমণ কারী ড্রোনের বহুল ও ব্যাপক ব্যবহারের অর্থ দাঁড়ায় যে কোরিয়া যুদ্ধের পর থেকে এই প্রথম বারের মতো আমরা ( মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ) পুরোপুরি বিমান শক্তির শ্রেষ্ঠত্ব ছাড়াই কার্যক্রম ও কর্ম তৎপরতা চালাচ্ছি ! " ম্যাক্কেনযী বলেন : আমরা যে পর্যন্ত ইউএএস ( পাইলট বিহীন ড্রোন ) শনাক্ত করে তা পরাভূত ( ভূপাতিত ) করার নেটওয়ার্কড (নেটওয়ার্কভুক্ত ও সংঘবদ্ধ ) ক্ষমতা ও দক্ষতা অর্জন না করছি সে পর্যন্ত সুবিধা আক্রমণকারীদের ( ইরানী সশস্ত্র বাহিনী ) হাতেই ( বিদ্যমান ) থাকবে ।"

ইরানের ইসলামী বিপ্লবী সশস্ত্র বাহিনী মহান আল্লাহর উপর দৃঢ় ঈমান , তাওয়াক্কুল ( ভরসা ) নিয়ে এবং ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আল উযমা ইমাম খামেনেঈর দিকনির্দেশনা অনুসরণ করে স্মরণাতীতকালে সুদীর্ঘ ৪২ বছরের অধিক কাল ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত কঠোরতম নিষেধাজ্ঞা ও অবরোধের মধ্যেও এমন সামরিক শক্তি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে যে এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা বিশেষ করে ইসরাঈল এখন চোখে সর্ষে ফুল দেখছে এবং ভীত হয়ে পড়েছে । আর এটাই হচ্ছে মহান আল্লাহ পাকের ওয়াদা পবিত্র কুরআনে : যদি তোমরা মহান আল্লাহকে সাহায্য কর তাহলে তিনি তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পদ সমূহ দৃঢ় করে দেবেন ।

এসব সামরিক শক্তির ( ক্ষেপণাস্ত্র , ড্রোন , বোমারু বিমান , সাবমেরিন , যুদ্ধ জাহাজ , তোপ ট্যাং ইত্যাদি ) চেয়েও মহান আল্লাহর উপর ঈমান ,তাওয়াক্কুল( ভরসা ) ,নৈতিক মনোবল , উন্নত ও কার্যকর রণকৌশল , সামরিক প্রশিক্ষণ ও টেকনিক এবং মহান আল্লাহর সাহায্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও যুদ্ধ বিজয়ে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করে । অর্থাৎ এ সব হাতিয়ার ও অস্ত্রের চাইতেও এই ঈমান , তাওয়াক্কুল ও নৈতিক মনোবল অধিক শক্তিশালী যা ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর আছে এবং যা দুশমনদের নেই । (সমাপ্ত)

অনুবাদ : মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

২৫ দেই ১৪০০ সৌর হিজরী

১৫ জানুয়ারি ,২০২২

تبصرہ ارسال

You are replying to: .