۳۱ فروردین ۱۴۰۳ |۱۰ شوال ۱۴۴۵ | Apr 19, 2024
পাপিষ্ঠ ইয়াজিদ
পাপিষ্ঠ ইয়াজিদ

হাওজা / মুয়াবিয়া ইবনে ইয়াজিদের মৃত্যু নিয়ে অনেকের কৌতুহল রয়েছে। কিভাবে এবং কোন অবস্থাতে এ নরাধম ও পাপিষ্ঠ ব্যক্তি কদর্যপূর্ণ জীবনের ইতি ঘটেছিল, সে সম্পর্কে জানার আগ্রহের কোন কমতি নেই।

মোহাম্মাদ মিজানুর রহমান

৬১ হিজরীর মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক ঘটনার মূল নায়ক মুয়াবিয়ার পুত্র পাপিষ্ঠ ইয়াজিদ। তারই নির্দেশে রাসূলের (সা.) প্রাণপ্রিয় নাতি ইমাম হুসাইন (আ.) ও তার পরিবারবর্গ নির্মমভাবে শাহাদত বরণ করেছিলেন। নরাধর ইয়াজিদের মৃত্যু সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে।

মুয়াবিয়া ইবনে ইয়াজিদের মৃত্যু নিয়ে অনেকের কৌতুহল রয়েছে। কিভাবে এবং কোন অবস্থাতে এ নরাধম ও পাপিষ্ঠ ব্যক্তি কদর্যপূর্ণ জীবনের ইতি ঘটেছিল, সে সম্পর্কে জানার আগ্রহের কোন কমতি নেই। তাই আমরা পাঠকদের জ্ঞাতার্থে ইয়াজিদের মৃত্যুর ঘটনা তুলে ধরছি। অবশ্য এ নরাধমের মৃত্যু সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে, সেগুলোর মধ্য থেকে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও সর্বজন বিদিত ঘটনাটি নিম্নে তুলে ধরছি-

নির্ভরযোগ্য ইতিহাস গ্রন্থসমূহে বর্ণিত হয়েছে যে, ইয়াজিদ তার লোকজন নিয়ে একদা শিকারের উদ্দেশ্যে রাজপ্রাসাদ ছেড়ে জঙ্গলে প্রবেশ করে। ইয়াজিদ এতই জঙ্গলের গভীরে প্রবেশ করে যে, সেখান থেকে শহরের দুরুত্ব প্রায় তিন দিনের বেশি হয়েগিয়েছিল। এমন সময় সে একটি চমৎকার হরিন দেখতে পেল। যেহেতু সে একজন দাম্ভিক ও অহংকারি ব্যক্তি ছিল, সেহেতু তার সাথে থাকা লোকদেরকে বলত যে, আমি একাই এ হরিনটি শিকার করব। তোমরা কেউ আমার সাথে এস না।

এ কথা বলে সে শিকারের উদ্দেশ্যে হরিনটিকে ধাওয়া করে। হরিনটিও প্রাণ বাচার জন্য পালাতে থাকে। এভাবে ইয়াজিদ হরিনটির পিছু নিতে থাকে। এক পর্যায়ে সে জঙ্গলের গভীরে এবং নিজের লোকদের থেকে পৃথক হয়ে যায়।

এমন সময় তার চরমভাবে পিপাসিত হয়ে পড়ে। হঠাৎ দেখতে পেল যে, জঙ্গলের মধ্যে একটি কুয়া থেকে জনৈক ব্যক্তি পানি তুলছে। ইয়াজিদ লোকটির কাছে এসে নিজেদের পিপাসার কথা জানিয়ে পানি চাইল। লোকটিও তার পিপাসা নিবারনে কিছু পানি দিল। লোকটি যেহেতু তাকে চিনতো না, সেহেতু লোকটি ইয়াজিদকে কোন ধরনে গুরুত্ব কিংবা সম্মান না করেই পানি দেয়। লোকটি ভেবেছিল যে, সে নিছক একজন আরব যাযাবর ও হরিণ শিকার শিকারী। এ কারণে ইয়াজিদ দম্ভের সুরে বলল: তুমি যদি জানতে যে আমি কে, তাহলে অনেক সম্মানের সাথে আমাকে পানি দিতে।

তখন লোকটি জিজ্ঞাসা করল: তুমি কে হে ভাই?

ইয়াজিদ বলল: আমি মুয়াবিয়ার পুত্র এবং বর্তমান শামের শাসক।

এ কথা শোনার পরই লোকটি চিৎকার দিয়ে বলল: তাহলে তুই সে পাপিষ্ঠ ইয়াজিদ; যে রাসূলের (সা.) দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (আ.) ও সাথীদের নির্মমভাবে শহীদ করেছে। আল্লাহর শপথ! তুই আল্লাহ ও রাসূলের শত্রু। তুই মানুষরূপী পশু। তোকে হত্যা করা জরুরী।

লোকটি তখন নিজের কাছে থাকা তরবারি দিয়ে ইয়াজিদের উপর হামলা করল। কিন্তু তরবারির আঘাত ঘোড়ার গায়ে লাগে ফলে ঘোড়াটি দৌড়াতে শুরু করে। ইয়াজিদ তখন ঘোড়ার পিঠে বসেছিল, ঘোড়ার উন্মাদ দৌড়ানোর কারণে সে ঘোড়ার পিঠ থেকে পড়ে যায়। কিন্তু তার পা ঘোড়ার লাগামে আটকে যায়। এদিকে ঘোড়াটি উন্মাদ দৌড় এবং অপরদিকে ঘোড়ার লাগামে ইয়াজিদের পা আটকে যাওয়াতে সে মাটি ঘষতে থাকে। এভাবে জঙ্গলের কাটা, গাছের শিকর আর উচু-নিচু ঢিলাতে ইয়াজিদের সমস্ত শরীর ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায়। এক পর্যায়ে সে পিপাসিত ও ছিন্নভিন্ন শরীর নিয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করে। এভাবে পাপিষ্ঠ ও নরাধম ইয়াজিদের করুন মৃত্যু ঘটেছিল।

ইয়াজিদের মৃত্যু সম্পর্কে শেইখ সাদুক তার গ্রন্থে অপর একটি ঘটনায় লিখেছেন যে, ইয়াজিদ এক রাতে অতিরিক্ত মদ পান করে ঘুমায়। কিন্তু সকালে তার লোকজন দেখতে পেল সে মৃত্যু বরণ করেছে এবং তার চেহারা আলকাতরার মত কাল বর্ণের হয়ে গেছে।

উল্লেখ্য মুয়াবিয়া ইবনে ইয়াজিদ ঐতিহাসিক কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার মাত্র তিন বছর নয় মাস ক্ষমতার মসনদে থাকার পর ৬৪ হিজরীতে ৩৮ বছর বয়সে জাহান্নামে গমণ করে।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .