রিপোর্ট: মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান
হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, এই হলো অত্যাধুনিক আল্ট্রা মডার্ন জাপানীদের চরিত্র ও আখলাক ! প্রকাশ্যে যদি ১০ জনে একজন যৌন হেনস্থার শিকার হয় তাহলে অপ্রকাশ্যে কী অবস্থা ?! জাপানীদের ঐতিহ্য বাহী শালীন পোশাক ছিল যা ইসলামী হিজাবের অনেকটা কাছাকাছি । কিন্তু পাশ্চাত্য অপসংস্কৃতির পাল্লায় পড়ে জাপানীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী এই শালীন পোশাক ছেড়ে দেওয়া এবং নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশায় এ ধরনের যৌন হেনস্থার শিকার হচ্ছে অধিকাংশ ক্ষেত্রে নারী ও মেয়েরা !! তথাকথিত নারীবাদ , নারী স্বাধীনতা ও নারী অধিকার কেন বিশেষ করে জাপানী নারী ও মেয়েদেরকে যৌন হেনস্থা থেকে রক্ষা করতে পারছে না ?!! এ ভাবে নারীদের প্রকাশ্যে উগ্র সংক্ষিপ্ত পোশাকে ( অর্ধনগ্ন ভাবে ) চলাফেরাই পুরুষদের উত্তেজনা ও লালসা বাড়িয়ে দেয় বলে ভুক্তভোগী নারী ও মেয়েরা প্রকাশ্যেই যৌন হেনস্থার শিকার হচ্ছে যার মানসিক আঘাত ও ট্রমার মারাত্মক প্রভাব ও দু: স্বপ্ন বহু অগণিত নারী ও মেয়েরা সারা জীবন ধরে বয়ে বেড়াবে। আশ্চর্য তথাকথিত আধুনিক পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যে যেমন : জাপানে মেয়েরা সংক্ষিপ্ত উগ্র অশালীন পোশাকে বাইরে বের হচ্ছে অথচ পুরুষরা গলা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত ঢেকে পোশাক পরে বাইরে বের হচ্ছে যেন পুরুষরা শালীন পোশাক ও হিজাব করছে এবং নারীরা অশালীন পোশাক পড়ছে ও বেহিজাব থাকছে। এ কেমন বিচার?! বরং নারীদের উচিত ছিল অন্তত পুরুষদের মতো শালীন পোশাক পরিচ্ছদ পরা । বরং পুরুষদের উচিত ছিল সংক্ষিপ্ত পোষাক পরা যেমন প্রাচীন কালের রোমান সৈন্যদের সংক্ষিপ্ত পোশাক। তখন রোমান নারী ও বেসামরিক পুরুষরা পুরোপুরি দেহ আবৃত কারী পোশাক পড়ত এবং বার বণিতা ও বিপথগামী ভ্রষ্টা রমণী ছাড়া রোমান নারীরাও মধ্যপ্রাচ্যের পর্দানশীন মুসলিম নারীদের মতো আবায়াহ , চাদর , হিজাব , মাকনা,হেড স্কার্ফ ও জিলবাব অর্থাৎ বুরকা পরিধান করত । এমনকি এ ধরনের হিজাব ও পোশাকের প্রচলন বিংশ শতাব্দীর শুরুতেও অধিকাংশ ব্রিটিশ নারীর মধ্যেও প্রচলিত ছিল। কিন্তু উগ্র নারীবাদ ও নারীদের বিবসনা করার নীতি বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশক থেকে খুব শক্ত ও জোরালো ভাবে প্রবর্তন করা হলে গত শতাব্দী ত্রিশের দশকে যুরার ( যুক্তরাজ্য ) অধিকাংশ নারীকে হিজাব ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয় । সেই পাশ্চাত্য বস্তুবাদী উগ্র অশালীন বেহিজাবী সংস্কৃতি ঐ একই সময় আধুনিকতার নামে ইরান , তুরস্ক, মিসর সহ মুসলিম বিশ্ব ও প্রাচ্যের বেশ কিছু দেশ যেমন : জাপান , কোরিয়া ও চীনে বলপূর্বক প্রবর্তন ও প্রচলন করা হয় । এর আগে ঐ সব দেশে নারীরা হিজাবের মতো ঐতিহ্যবাহী শালীন পোশাক পরত । আর এখন পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যে পুরুষরা হিজাব করছে !! যদি বলা হয় ইসলামে পুরুষদের হিজাব কী বা কেমন ? তাহলে দেখাতে হবে বর্তমান পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের পুরুষদের গলা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত সমস্ত দেহ আবৃতকারী পোশাক। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের পুরুষরা হিজাব পরিহিত ( মুহাজ্জাব ) এবং নারীরা অর্ধনগ্ন , বেপর্দা ও বেহিজাব ! এ কেমন আজব চিড়িয়া পশ্চিমারা ও প্রাচ্যীয়রা !! আসলে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য মুক্ত ও সুস্থ যুক্তি , বুদ্ধি , আখলাক ও বিবেকবোধহীন । আর যে বিবেকবোধ আছে বলে মনে করা হয় ঠিক সেটাও আসলে বস্তুবাদী স্বার্থের সাথেই একান্ত সংশ্লিষ্ট। যতক্ষণ এই বিবেকবোধ বস্তুবাদী স্বার্থ সংরক্ষণ করবে ততক্ষণ তা ঠিক আছে। আর বস্তুবাদী ভোগ , সুযোগ - সুবিধা ও স্বার্থ সংরক্ষিত না হলে বিবেকবোধ তখন বিদ্যমান থাকে না পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের । বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্যবাদী শাসন ও শোষণ, গণহত্যা , আমেরিকায় রেড ইন্ডিয়ান হত্যা ও নিধন , অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের গণহত্যা ও প্রজন্ম হত্যা , আগ্রাসন, যুদ্ধ এবং বর্তমানে ইসরাইল কর্তৃক গাযায় চলমান গণহত্যা , ১ম ও ২য় বিশ্বযুদ্ধ ও কোটি কোটি মানুষ হত্যা , বিংশ শতাব্দীর শুরুতে আগ্রাসন চালিয়ে কোরিয়া ও চীনে মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ হত্যা করেছিল এই জাপান। আবার ২য় মহাযুদ্ধের সময় এই জাপান কোরিয়া , চীন ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় অগণিত মানুষকে হত্যা করেছিল । যুদ্ধ চলাকালে জাপানীরা যুদ্ধবন্দীদেরকে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করে দেখত যে কোন্ পদ্ধতিতে সবচেয়ে কষ্ট ও যাতনা দিয়ে শত্রুকে হত্যা করা যায় ; এগুলো করে জাপানীরা পৈশাচিক আনন্দ পেত এবং মনের খেদ মিটাত । এখন কি এদের সেই পাশবিক খাসলত বদলেছে? না মোটেও বদলায় নি । পশ্চিমাদের এবং প্রাচ্যের জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সর্বাত্মক সাহায্য ও সমর্থন পেয়ে ইসরাইল গাজায় যে যুদ্ধ , আগ্রাসন, গণহত্যা ও সবধরণের যুদ্ধাপরাধ করছে তা থেকে প্রমাণ হয়ে যায় যে পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের নোংরা হিংস্র বুনো অসভ্য রক্তপিপাসু চেহারা ও স্বভাব চরিত্র মোটেও পাল্টায় নি । এই গত সপ্তাহে গান ভায়োলেন্সে মাযুরায়( যুক্তরাষ্ট্র ) ২৯০ জনের অধিক নিহত ও ৬৫০ এর অধিক আহত হয়েছে। এটা কী ? এটা কেমন বর্বরতা , অসভ্যতা , অমানবিকতা ও মনুষ্যত্বহীনতা ? নিজেরা নিজেরাই যদি নিজেদের এ ভাবে হত্যা করে তাহলে গাযায় , ইরাকে , আফগানিস্তানে , ভিয়েতনামে , লিবিয়ায় , ইয়ামানে , সোমালিয়ায়, সুদানে তো এরা ( পাশ্চাত্য ) গণহত্যা চালাবেই । এ জন্য এদেরকে ( পাশ্চাত্য ও প্রাচ্য ) যারা ভালো বলে ও প্রশংসা করে কিছু ওদের কিছু সৌজন্য ও ভদ্রতা দেখে তারা হয় ওদের ( পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের )প্রচার প্রোপাগান্ডায় ধোঁকা খেয়ে বোকা বনে গেছে ( অর্থাৎ সরলমনা গর্দভ ) বা ওদের মতোই এরাও জঘন্য সাক্ষাৎ শয়তান ও ইবলীস ।
অতএব প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য চরম নৈতিক অধঃপতনে আকণ্ঠ নিমজ্জিত। বিশ্বের যে কোন দেশে যুদ্ধ , অস্থিরতা , গোলযোগ, অশান্তি ও মৎস্যান্যায়ের জন্য দায়ী এ সব পশ্চিমা ও প্রাচ্য দেশীয় শক্তিগুলো। এদের সুধী ও সুশীল সমাজ কি ভেরেণ্ডা ভাঁজে ? তারা কি দেখে না যে এদের দেশের ভিতরে ও বাইরে বিভিন্ন দেশে এদের সরকার , কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব ও কর্পোরেশন গুলো - বহুজাতিক কোম্পানি গুলো কী করছে ? পশ্চিমা ও প্রাচ্যীয় সুধী সুশীল সমাজ কি বুদ্ধু বোবা কালা কুশীল সমাজে পরিণত হয়ে গেছে ?!!!