হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ছাত্র-জনতার গণবিস্ফোরণের মুখে সোমবার পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় বিরোধী রাজনৈতিক দলের ওপর হামলা এবং সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদেরদের অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। এই খবরে উদ্বেগ তৈরি হয় সীমান্তঘেঁষা ভারতের পশ্চিমবঙ্গজুড়েও।
তবে যত না খবর, তার চেয়ে সামাজিকমাধ্যমে বেশি ছড়িয়েছে গুজব। দেশটির কিছু কিছু সংবাদমাধ্যমের অতিরঞ্জিত ভিত্তিহীন সংবাদপ্রচারে দর্শক পাঠকদের মাঝে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিরূপ প্রভাব পড়া শুরু করেছে। এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের নাগরিক সমাজের মাঝে বার্তা দিয়েছে রাজ্য পুলিশ।
এতে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ জানিয়েছে, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক খবর প্রচার হচ্ছে। এসব খবরকে একতরফা বলছে তারা। এতে ফাঁদে পা না দিতে আহ্বানও জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ।
মঙ্গলবার সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ লিখেছে, ‘শান্ত থাকুন, শান্তি বজায় রাখুন। কিছু স্থানীয় টিভি চ্যানেলে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যেভাবে রিপোর্টিং হচ্ছে, তা খুবই দৃষ্টিকটুভাবে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক, এবং ভারতের প্রেস কাউন্সিলের নিয়মাবলীর পরিপন্থি’।
‘দর্শকদের অনুরোধ, এই ধরনের কভারেজ দেখার সময় নিজস্ব বিচারবিবেচনা প্রয়োগ করুন, এবং মাথায় রাখুন যে চ্যানেলের দেখানো ফুটেজের সত্যতা কিন্তু কোনও নিরপেক্ষ তৃতীয় সংস্থা দিয়ে যাচাই করা নয়। একতরফা বিদ্বেষমূলক এবং বিভ্রান্তিকর প্রচারের ফাঁদে পা দেবেন না। শান্ত থাকুন, শান্তি বজায় রাখুন’।
এদিকে বিএনপি-জামায়াতসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্ম থেকে চলমান অস্থির সময়ে সাম্প্রদায়িক হামলার নিন্দা জানানো হয়েছে। ছাত্র সমাজের উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সম্প্রীতি রক্ষায় জোরদার প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগের দ্বিতীয় দিন সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। পদত্যাগের পর দুপুরে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে করে ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি।
দিল্লি থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের হিন্দন বিমানঘাঁটিতে অবতরণের পর গতকাল সন্ধ্যায় ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল তার সঙ্গে দেখা করেছেন। সেখান থেকে হাসিনার গন্তব্য কোথায় তা এখনো স্পষ্ট নয়।