হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতার হাসপাতাল আরজি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার রাজ্য সচিবালয় অর্থাৎ নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’। কিন্তু নবান্ন অভিযানকে ঘিরে সহিংস হয়ে উঠেছে রাজ্যের সড়কগুলো।
দুপুরের পর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রাজ্য সচিবালয় (নবান্ন) ঘেরাও করে হাজার হাজার মানুষ। এ সময় পুলিশের সাথে ব্যাপক সংঘর্ষ হয় আন্দোলনকারীদের। খবর আনন্দবাজার ও এনডিটিভি।
মূলত নবান্ন হল রাজ্য সচিবালয়। এখান থেকেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার কাজ করে। এটিতে মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য শীর্ষ মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের অফিস রয়েছে। আর এটি ঘেরাওয়ের অভিযান ঘোষণা দিয়েছিল ছাত্রসমাজ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, নবান্ন অভিযানের অনুমতি দেয়নি রাজ্য পুলিশ। বিক্ষোভে সহিংসতার আশঙ্কায় অনুমতি দেয়নি বলে জানিয়েছে তাঁরা।
এমনকি নাশকতা করা হবে এমন প্রমাণ থাকায় সকাল থেকেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের দপ্তর ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয় পুলিশ। সারা কলকাতাজুড়ে মোতায়েন করা হয় ৬ হাজারের বেশি পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের বাধা দিতে ১৯টি পয়েন্টে ব্যারিকেডও দেওয়া হয়।
তবে সব বাধা উপেক্ষা করে নবান্ন অভিযান শুরু হলে কলকাতার রাস্তায় বিশৃঙ্খলপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারগ্যাসের সেল ও জলকামান ব্যবহার করে দাঙ্গা পুলিশ।
বাধা পেয়ে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে লক্ষ্য করে পাল্টা ইট-পাথর নিক্ষেপ করতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। কয়েকটি পয়েন্টে ব্যারিকেড ভেঙে সামনে এগোতে থাকে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী।
এ সময় অনেক বিক্ষোভকারীকে ব্যারিকেডের উপরে উঠে স্লোগান দিতে দেখা যায়। এছাড়া মিছিল এবং জমায়েত থেকেও স্লোগান উঠছে, “দাবি এক, দফা এক, মমতার পদত্যাগ।” বিক্ষোভকারীদের অনেকের হাতে থাকা কালো পোস্টারেও এই স্লোগান দেখা যায়।
এদিকে বিক্ষোভে গ্রেপ্তারের ঘটনাও ঘটেছে বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার। পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা প্রদীপ ঘোড়ুই নবান্ন অভিযানে এসে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। তবে তিনি আন্দোলনকারী নন, চাকরী করেন বলে দাবি জানান।
এদিকে এদিকে মঙ্গলবার সকালে বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, ‘বিক্ষোভে অংশ নেওয়া চার ছাত্রকে গতকাল মধ্য রাত থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।‘ এ সময় তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশ বাহিনী দিয়ে এই ছাত্রদের তুলে নিয়ে গেছে বলেও অভিযোগ জানান।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে বলেছে, আজকের কর্মসূচি ঘিরে বড় ধরনের সহিংসতা ও হত্যাচেষ্টার ষড়যন্ত্র করছিল ছাত্ররা। জননিরাপত্তার স্বার্থে কয়েকজন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের পরিবারকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
গত ৯ আগস্ট কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজে ৩১ বছর বয়সী এক নারী চিকিৎসক ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হন। এরপর বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো কলকাতা। আজ মঙ্গলবার আরজি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে সচিবালয় অভিমুখে মিছিলের ডাক দেয় ‘ছাত্র সমাজ’।