۸ اردیبهشت ۱۴۰۳ |۱۸ شوال ۱۴۴۵ | Apr 27, 2024
হযরত ফাতিমা মাসুমা (সাঃআঃ)
হযরত ফাতিমা মাসুমা (সাঃআঃ)

হাওজা/ হযরত ফাতিমা মাসুমা (সাঃআঃ)-এর জন্ম থেকে শাহাদৎ পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত জীবনী

হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, পর্ব ২- ১০'ই রবিউস সানী হযরত ফাতিমা মাসুমা (সাঃআঃ)-এর শাহাদত দিবস।

১০'ই রবিউস সানী আহলেবায়েত (আঃ)-এর জন্য লোমহর্ষক মসিবত দিবস।

⁉১০'ই রবিউস সানী ইমাম হাসান আসকারী (আঃ)-এর জন্মদিন অথবা হযরত মাসুমা কোম-এর শাহাদাত দিবস।❓

ভারত ও পাকিস্তানে মুদ্রিত বেশিরভাগ বার্ষিক ক্যালেন্ডার ও ডায়েরিতে ১০'ই রবিউস সানী তারিখটি হযরত ইমাম হাসান আসকারী (আঃ)-এর পবিত্র জন্ম তারিখ লেখা হয়েছে এবং হযরত ফাতিমা মাসুমা (সাঃআঃ)-এর শাহাদাত ও মৃত্যু দিবসের দিকে কোন ইঙ্গিত করা হয়নি। বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে কোন তারিখে হযরত মাসুমা (সাঃআঃ)-এর শাহাদাত বা মৃত্যুর কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যায় না। অথচ ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানে মুদ্রিত প্রায় সমস্ত ক্যালেন্ডারে উল্লেখিত তারিখে হযরত মাসুমা কোম (সাঃআঃ)-এর শাহাদাত, ও মৃত্যু দিবস লেখা হয়েছে। তাই ১০'ই রবিউস সানী দিনটি আহলেবায়েত (আঃ) এবং মুহাম্মাদ (সাঃ) পরিবারের জন্য খুবই শোক ও দুঃখের দিন।

‼প্রথম ভুমিকা‼

ইমাম হাসান আসকারী (আঃ)-এর শুভ জন্মদিন পালনের ব্যপারে ইতিহাসের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। কিছু আলেমগণ রবিউল আওয়াল এবং কিছু আলেমগণ রবিউস সানী লিখেছেন।

ইমাম হাসান আসকারী (আঃ)-এর শুভ জন্মদিন উপলক্ষে আলেমদের মতামত।

হিজরী সন। ২৩০ থেকে ২৩৩ হিজরী লেখা হয়েছে।

পবিত্র মাস এবং দিন

কিছু আলেমগণ লিখেছেন, পবিত্র রমযান মাস (দিন নির্দিষ্ট করা হয়নি) যেমন মুহাম্মদ ইবনে ইয়াকুব কুলাইনী (রহঃ) (আল-কাফী নামক গ্রন্থে খন্ড ১ পৃষ্ঠা ৫০৩)

তাছাড়া (আয়য়ান আশ শিয়া নামক গ্রন্থে খন্ড ২ / পৃষ্ঠা ৪০ তেও উল্লেখিত তারিখটা বর্ণিত হয়েছে।

একই তারিখ শেখ মুফিদ (রহঃ) আল্লামা মজলিসী (রহঃ)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে আল ইরশাদ নামক গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেছেন। বিহারুল আনওয়ার খন্ড ৫০ পৃষ্ঠা ২৩৬.. এমাদ আল-তাবারী (তোহফাতুল আবরার পৃষ্ঠা ১৭১

রবি-উল-আওয়াল (নির্দিষ্ট দিন ও বক্তব্য সহ)

৬/ রবি-উল-আওয়াল।

যেমন ইবনে খালকান এক উক্তি অনুসারে ব্যাখ্যা করেছেন ওয়াফিইয়াতুল আয়য়ান খন্ড ২ পৃষ্ঠা ৯৪..

ইবনে তুলুন, আল আইম্মাতুল ইসনা আশর্ নামক গ্রন্থে পৃষ্ঠা ১১৩..

৮'ই রবিউল আওয়াল।

যেমন কাজী সৈয়দ নুরুল্লাহ শুস্ত্রী শহীদ সালিস (আহকাক্ব-উল-হক্ব / খন্ড ১৯ পৃষ্ঠা ৬২১..

তাবারসী (তাজ আল-মাওয়ালিদ / পৃষ্ঠা ১০৫) শাবরাবী (আল ইত্তেহাফ বিহুব্বিল আশরাফ পৃষ্ঠা ৩০৫..

রবি-উল-আওয়াল এর শেষ তারিখ।

যেমন ইবনে খালকান এক উক্তির মাধ্যমে এর ব্যাখ্যা করেছেন। (ওয়াফিইয়াতুল আয়য়ান খন্ড ২ পৃষ্ঠা ৯৪..

রবি-উস-সানী (দিন নির্দিষ্ট করা হয়নি)

যেমন মুহাম্মদ বিন ইয়াকুব কুলাইনী (রহঃ) (আল-কাফি খন্ড ১ পৃষ্ঠা ৫০৩)

আবু জাফর তাবারী (দালায়েল আল-ইমামাহ/পৃষ্ঠা ৪২৩)

শেখ মুফিদ (রহঃ) (আল-ইরশাদ পৃষ্ঠা ৩১৫)

শেখ তুসী (রহঃ) (আল-তাহযীব আল-আহকাম / খন্ড ৬ পৃষ্ঠা ৯২)

আল্লামা হিল্লী (রহঃ) আল মুস্তাজাদ মিন কিতাবিল ইরশাদ পৃষ্ঠা ৩৪৩..

শহীদ আল আওয়াল (দুরুস, পৃষ্ঠা ১৫৪)

তাবারসী এক উক্তির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেছেন (তাজ-উল-মওয়ালিদ পৃষ্ঠা ১০৫)

ইবনে তুলুন (আল আইম্মাতুল ইসনা আশর্ পৃষ্ঠা ১১৩)

মুহাম্মদ ইবনে ইসহাক হামভী (আনিস আল-মুমিনিন ২৩০)

রাবিউস সানী (নির্দিষ্ট দিন ও ব্যাখ্যা সহ)

চতুর্থ রবিউস সানী।

যেমন আল্লামা মজলিসী (রহঃ) একটি উক্তি অনুযায়ী ব্যাখ্যা করেছেন। (বিহারুল আনওয়ার খন্ড ৫০ পৃষ্ঠা ২৩৬)

কাফয়ামী (আল মিসবাহ লিল কাফয়ামী পৃষ্ঠা ৫১১)

বিহারুল আনওয়ার খন্ড ৫০ পৃষ্ঠা ২৩৮)

মোল্লা হোসায়েন কাশী (তারিখ এ মোহাম্মদী পৃষ্ঠা ৭৭)

৮'ই রবিউস সানী।

যেমন মাসয়ুদী (ইস্বাতুল ওয়াসিয়া

তাবারসী (এ'লাম আল-ওয়ারা / খন্ড ২ পৃষ্ঠা ১৩১)

খতিব বাগদাদী (তারিখ এ বাগদাদ খন্ড ৭ পৃষ্ঠা ৩৬৬ এবং আহক্বাক্ব-উল-হক্ব খন্ড ১২ পৃষ্ঠা ৪৫৮..

ফাতাল নিশাপুরী (রওযাতুল অয়েযীন পৃষ্ঠা ২৭৬)

ইবনে শহরে আ'শোব (আল-মানাক্বিব খন্ড ২ পৃষ্ঠা ৪৫৮)

ইবনে আল-সাব্বাগ (ফসুলুল মুহিম্মা পৃষ্ঠা ২৮৪)

১০'ই রবিউস সানী।

শেখ মুফিদ রহঃ প্রণীত (মাসার আল-শিয়া পৃষ্ঠা ৬৬)

শেখ তুসী রহঃ (মিসবাহ-উল-মুতাহাজ্জীদ পৃষ্ঠা ৭৯২)

এ সমস্ত উক্তির বিপরীতে স্বয়ং হযরত ইমাম হাসান আসকারী (আঃ) এর উক্তি রয়েছে যে, আমার জন্ম রবিউস সানী তে হয়েছে। আবু জাফর তাবারী দালায়েলুল ইমামাহ নামক গ্রন্থে নিম্নলিখিত হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

كَانَ‏ مَوْلِدِي‏ فِي‏ رَبِيعٍ‏ الْآخِرِ سَنَةَ اثْنَتَيْنِ‏ وَ ثَلَاثِينَ وَ مِائَتَيْنِ مِنَ الْهِجْرَةِ

উল্লেখিত বক্তব্য ও হাদীসের আলোকে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, ইমাম হাসান আসকারী (আঃ)-এর জন্মের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র দশম রবিউস সানী উক্তিকে প্রাধান্য দেওয়া সঠিক নয়, কারণ এর বিপরীতে আলেমদের অন্য মতামতও রয়েছে।

⁉এই সমস্ত বক্তব্যগুলোর মধ্যে কোনটি গ্রহণ করা উচিত ⁉

যাতে আমরা মিলাদ অনুষ্ঠান উদযাপন করতে পারি এবং তার সাথে শোক প্রকাশও করতে পারি।

সুতরাং এ সকল বক্তব্যের মধ্যে রবিউস সানীর চতুর্থ তারিখই সর্বোত্তম ও উপযুক্ত। তার প্রমাণ হলঃ

১) ৪র্থ রবিউস সানী উক্তিটি মোতলাক এবং মোকায়েদ উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, তাই এই বক্তব্য অনুসরণ করা যাবে। (মোতলাক অর্থাৎ স্বয়ং ইমাম হাসান আসকারী আঃ এর বক্তব্য এবং যে দশজন আলেম ও গবেষক যাঁরা মোতলাক বলেছেন যে, পবিত্র জন্মদিন ও বরকত কেবল রবিউস সানীতে। আর রবিউস সানীর তারিখ ও দিনটি উল্লেখ করেননি। আর মোকায়েদ অর্থাৎ কোন কোন আলেম মাস ও দিন উভয়ই উল্লেখ করেছেন অর্থাৎ রবিউস সানী মাসের ৪ তারিখ)।

২) ৮'ই রবিউস সানী উক্তির বিপরীতে হযরত ফাতিমা যাহরা (সাঃআঃ)-এর শাহাদাতের একটি রেওয়ায়েত রয়েছে এবং উক্ত কথার বিপরীতে হযরত ফাতিমা মাসুমা কোম (সাঃআঃ)-এর শাহাদাতের একটি রেওয়ায়েত রয়েছে। আর ১০'ই রবিউস সানী উক্তির বিপরীতে হযরত ফাতিমা মাসুমা (সাঃআঃ)-এর শাহাদাতের কথা উল্লেখ রয়েছে। সুতরাং উল্লেখিত দুটি উক্তিকে ইমাম হাসান আসকারী (আঃ)-এর শুভ জন্মদিন বলা ঠিক হবে না। কারণ দুটি উক্তির বিপরীতে আহলেবায়েত (আঃ)-এর শোক ও দুঃখের রেওয়ায়েত বর্ণিত হয়েছে। তাই সাধারণতঃ নিয়ম হল, দুঃখের সংবাদকে সুখ সংবাদের উপর প্রাধান্য দেওয়া হয়। তাই আহলেবায়েত (আঃ)-এর শোক ও দুঃখের রেওয়ায়েত আনন্দের রেওয়ায়েতের উপর অগ্রাধিকার রাখে।

৩) রবিউস সানী মাসের চতুর্থ তারিখ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে, আপনি দ্বন্দ্ব ও মতবিরোধ এড়াতে পারবেন, যার ফলস্বরূপ শুভ জন্মদিনের মাহফিল এর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। আর ৮ ও ১০ রবিউস সানী তে শোক দিবসের ব্যবস্থা যেতে পারে।

৪) তাই ৪র্থ রবিউস সানী মিলাদ ও শুভ জন্মদিন ইমাম হাসান আসকারী (আঃ), ৮ই রবিউস সানী ফাতিমা যাহরা (সাঃআঃ)-এর শাহাদাত (চল্লিশ দিনের রেওয়ায়েত অনুযায়ী) এবং ১০'ই রবিউস সানী হযরত ফাতিমা মাসুমা (সাঃআঃ)-এর শাহাদাতের তারিখ উল্লেখ করা হোক। চলবে........

আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মদ ওয়া আ'লে মুহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারাজাহুম ওয়াহ শুরনা মাআহুম ওয়াল আন আদুওয়াহুম।

অনুবাদ: হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা মাসুম আলী গাজী (নাজাফ ইরাক)

تبصرہ ارسال

You are replying to: .