মুস্তাক আহমদ
ইসলামিক ইতিহাসে আহলে বাইতের ইতিহাস যুক্ত হলে দুনিয়া সমৃদ্ধি হতো ৷
হাঁ কিছুটা হলেও ইসলামিক ইতিহাস উচ্চ শিক্ষায় যোগ করা সম্ভব হয়েছে, অনেকেই তা অধ্যায়ণ করে রীতিমত উচ্চ শিক্ষা অর্জন করছেন ৷
কিন্তু একটি কথা মনে রাখতে হবে ব্রাহ্মন্যবাদী ধর্মীয় ইতিহাস উচ্চা শিক্ষাতে এখনো যুক্ত করা সম্ভব হয়নি ৷
শিশুপাঠ্য পুস্তকে বাঁনর থেকে মানুষ সৃষ্টির কাল্পনিক গালগপ্প রীতিমত পড়াশোনা করা হলেও মাধ্যমিক লেবেলে সেই বাঁদর সৃষ্টির পড়াকে একজন দার্শনিকের মতবাদ হিসাবে জানানো হচ্ছে ৷
এই যে দ্বিচারিতার শিক্ষা আমাদের শেখানো হচ্ছে ..তা ব্যাপারে কারোর মনে প্রশ্ন নেই ৷
কেন আমাদের বাঁদরের দার্শনিক গালগপ্প গিলানো হলো ??
রামায়ন মহাভারত ইত্যাদির ইতিহাস আমাদের উচ্চ শিক্ষার জন্য পাঠ্য পুস্তকে যোগ করা সম্ভব হয়নি! কেন সম্ভব হলো না? এই প্রশ্ন কি কোনো সাধারণ হিন্দুর মনে আজও জেগেছে ?
তবে উচ্চ পাঠ্য পুস্তকে ইসলামের কিছু কিছু ইতিহাস প্রবেশ করেছে বটে, তবে তা ১০০% নির্ভেজাল ইতিহাস নয় ৷ কিছু সত্য কিছুটা গোঁজামিল ৷
তবে যে ইতিহাস প্রবেশ করানো হয়েছে, তার সাল খুঁজে পাওয়া যায় এবং ঐতিহাসিক ঘটনাও খুঁজে পাওয়া যায় এবং কিছুটা হলেও সত্যতা আছে। যা উচ্চ পাঠ্য বইয়ে লিপিবদ্ধ করা যায় বলে লিপিবদ্ধ করেছে, এবং ক্লাস রুমে পড়ানো হচ্ছে ।
আমাদের সমাজের অনেক হিন্দু ভাই রীতিমত পড়াশোনা করে কৃতকার্য হয়েছেন এবং ঐ পড়াশোনার উপরে রোজগারও করছেন ৷
তবে এটাও মনে রাখতে হবে, সেই ইতিহাসগুলি উচ্চপাঠ্য পুস্তকে লিপিবদ্ধ হয়েছে, যে ইতিহাসগুলি নবী (সঃ)-এর মত মহান ব্যক্তিত্ব জড়িত ৷ তিনি পৃথিবীতে এসেছেন,সংসার করেছেন এবং মৃত্যু বরণও করেছেন।
তাহলে চিন্তা করুন যে ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের প্রভাবে ইতিহাস আমাদের নিকট গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে এবং উচ্চ শিক্ষার জন্য 'ইসলামিক ইতিহাস' হিসাবে সিলেবাস তৈরী করা যায়, তাহলে তাঁর সঙ্গে সঙ্গে তাঁর আহলে বাইতের ইতিহাস একসাথে সংযুক্ত হলে আমাদের সমাজ কতটা সমৃদ্ধি হবে !!
অপরদিকে যাদের ইতিহাস উচ্চ পাঠ্য পুস্তকে এখনো লিপিবদ্ধ করা যায় নি বা করতে দ্বিধা লাগছে, তাহল রামায়ণ মহাভারতের কল্পনিক চরিত্র ৷
অর্থাৎ ইতিহাস পাওয়া যায়নি, তবে ব্রাহ্মন্য সংস্কৃতি কিছু মিলেছে, যা অশ্লীলতায় পরিপূর্ণ।
যেমন শিবলিঙ্গ বা কালী ঠাকুর নিয়ে নানান গল্প পাওয়া যায় যার সবটাই যৌনতায় ভরা।শিবলিঙ্গ, যোনি পূজা,ইত্যাদি।
এছাড়া পাওয়া যায় কতগুলি ব্রাহ্মন্য রচিত (পৌরাণিক) কাল্পনিক চরিত্র এবং তাদের যৌন কাহিনী, যাকে লীলাখেলা আখ্যা দিয়ে কিছুটা বৈধ্যতার লেবেল সাটানো হয়েছে ।
এবার আপনারাই বলুন এই যৌন সমৃদ্ধি চরিত্রগুলি কি উচ্চ শিক্ষার পাঠ্য পুস্তকে লিপিবদ্ধ সম্ভব ??
তাহলে এদিকে যেমন ব্রাহ্মন্য রচিত ইতিহাস উচ্চ শিক্ষায় যুক্ত সম্ভব নয়, তেমন ১৪০০ বছর পূর্বের উমাইয়া বা আব্বাসী খেলাফতির ইতিহাস আমাদের তেমন কিছু দিতে পারে নি ৷
উমাইয়া বা আব্বাসীদের রেখে যাওয়া জীবন প্রদ্ধতি বা তাদের মিশ্র সংস্কৃতি পুরোটা ইসলাম নয়৷
— হাঁ উমাইয়া বা আব্বাসী খলিফাদের জীবনেতিহাসে কিছুটা ইসলামের ছোঁয়া আছে মাত্র ৷ যেমন মুঘলদের ইতিহাস, এই মুঘলদেরও জীবনেতিহাস পুরো ইসলাম নয়, অর্থাৎ নির্ভেজাল ইসলাম নয় ৷ তাই এখন থেকে ভাবনার সময় এসেছে যে, বিগত দিনগুলিতে মুসলমান নামে যেসব রাজা বাদসা পৃথিবীতে শাসক হিসাবে এসেছিলেন তাদের মধ্যে ৯৮% রাজা বাদসার সৃংস্কৃতি, জীবনী, তাদের মিশ্র জ্ঞান, তাদের সংসার তাদের জীবন মৃত্যু, তাদের রচিত বই পত্র পত্রিকা ইত্যাদি ...নির্ভেজাল ইসলাম নয়,
নির্ভেজাল ইসলাম তো নবী (সঃ) ও তাঁর আহলে বাইতের ৷ তাঁর রেখে যাওয়া ১২ ইমামের ৷
— তাই এখন সময় এসেছে সেই নিষ্পাপ নির্ভেজাল মহাপুরুষের সংস্কৃতি, তাঁদের জ্ঞান, তাঁদের রচিত বই, তাঁদের রেখে যাওয়া জীবনেতিহাস তাঁদের রেখে যাওয়া প্রতিটি পদক্ষেপ আমাদের পৃথিবীকে সমৃদ্ধ করবে, নচেৎ সব আসতে আসতে ধ্বংস হবে ৷ মিথ্যা তো ধ্বংস হবার জন্যই ৷
দ্রষ্টব্য: হাওজা নিউজে প্রকাশিত সমস্ত নিবন্ধ লেখকদের ব্যক্তিগত মতামতের উপর ভিত্তি করে। হওজা নিউজের নীতি লেখকের মতামতের সাথে একমত হওয়া জরুরী নয়।