মুস্তাক আহমদ
হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, মিনাতেই কি আযাজিল শয়তান বসে আছে ? না তেমন কিন্তু নয়, তাহলে হাজ্বীদের কেন মিনাতে উপস্থিত হয়ে ছোট, মেজ ও বড় এই তিন শয়তান নাম করে পাথর নিক্ষেপ করতে হয় ? আসলে এটি একটি শয়তানকে পাথর মারার নামে তৌহিদ ও রেসালতের শত্রুদের দমন করার মানবিক চেতনার স্মৃতিকে জীবন্ত করা ৷
সেই চেতনাটি হলঃ
যুগে যুগে তৌহিদ ও রেসালতের শত্রুকে দমন করা ৷ এই শত্রুর বৈশিষ্ট অনুযায়ী দুই ভাগে বিভক্ত করা যায় ....(১) ব্যক্তিগত তিন শয়তানী নফসকে দমন করা, (২) জাতীয় তিন শয়তানকে দমন করা ৷ নিচে বিস্তারিত ভাবে আলোচনার অবকাশ রইলো ৷ আসুন দেখে নিই৷
(ক) এখন আমি ব্যক্তিগত তিন শত্রুর আলোচনা করবোঃ
ব্যক্তিগত ভাবে প্রত্যেক মানুষের নফসের মধ্যে তিনটি শত্রুতা কাজ করছে ৷ পর্যাক্রমে তারা হলঃ (১) বিচ্ছিন্নতা বোধ, (২) স্বার্থপরতা বা পুঁজিবাদী নোংরা মানসিকতা ও (৩) অজ্ঞতা অর্থাৎ মূর্খতা, অথচ নিজেকে পন্ডিত ভাবা ৷
এই তিনটি রোগ প্রত্যেক মানুষের মধ্যে এক মহামারী রোগ হিসাবে কাজ করছে ৷ এই তিনটি শত্রুর বিরুদ্ধে থাকা অর্থাৎ নিজের সঙ্গে পরিচয় লাভ করে নিজেকে বিবেকবান মানবিক চেতনার মধ্যে নিয়ে ইসার সংগ্রাম করতে হবে ৷ এর জন্য বিশ্ব মহাসম্মলনে উপস্থিত হয়ে একে অপরের সাথে মিলিত হয়ে দর্পনের মত নিজের এই তিনটি শত্রুর পরিচয়ে পরিচিত হতে হবে ৷ এবং মোকাবেলা করতে হবে ৷
(খ) এখন আমি জাতীয় তিন শত্রুর আলোচনা করবোঃ
যে যখন যে যুগে অবস্থান করবে সে সেই যুগের তৌহিদীদের শত্রুদের লক্ষ্য করে সংগ্রাম জারি রাখার জন্য মিনাতে তিন শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করতে হয় ৷
ইসলামের তৌহীদ ও রেসালতের তিনটি শত্রু যুগে যুগে তাদের শয়তানী পদক্ষেপ রেখে গেছে৷
আসুন আমরা ঐতিহাসিক ভাবে দেখে নিই তারা তিনজন কে কে !
(১) প্রথম শত্রু হল যে শক্তি প্রয়োগ করে ৷ ক্ষমতা প্রয়োগ তৌহিদ ও রেসালতবাদীদের পরাজিত করতে চাই ৷ প্রচন্ড ক্ষমতা দেখায় ৷ মানুষের ঐক্যকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়, সেনাবল জনবল প্রয়োগ করে এটা করে ৷ তাই এদের মূল নীতি হল Divied and Rule.
আজকের যুগের তৌহিদ ও রেসালতের সেই প্রথম শত্রু হল আমেরিকা ৷ এরাই হল বড়ো শয়তান ৷ মুসা আঃএর যুগে এই বড়ো শয়তানের পরিচয় হল ফেরাউন ৷
(২) দ্বিতীয় শত্রু হল পুঁজিবাদী শক্তি ৷ যারা ছবে বলে মানুষের টাকা লুটে পুঁজী করে ও টাকা শক্তিতে মানুষের ক্ষতি সাধন করে ৷ তারা আজকের পরিচয়ে ইহুদী৷ যারা আরবের জমি ঘর বাড়ি লুট করে ইজরাঈলে জবর দখল করে বিশ্বব্যাপী পুঁজিবাদী ব্যবসা করে আর সেই টাকা দিয়ে মানুষকে হত্যা করে ও জুলুম করে ৷ এরা হল মেজো শয়তান ৷ মুসা আঃ যুগে এই মেজো শয়তানের পরিচয় ছিল কারুণ ৷
(৩) তৃতীয় শত্রু হল অজ্ঞতা মূর্খতা, যারা মাথামোটা বেকুবের দল ৷ যাদের মূল বিষয় ধর্মকে পুঁজি করে ব্যবসা করা ৷ এরা উপরের দুই শয়তানের তাবেদার আলেম ৷ এদের হয়ে এরা কথা বার্তা বলে ৷ উপরের দুই শয়তানের অনূকূলে ফতোয়া ঝাড়ে ৷ এরা ধর্মব্যবসায়ী মুল্লা সম্প্রদায় ৷ এরা আমেরিকার বা ইহুদীদের হয়ে কথা বলে ৷ মুসা আঃএর যুগেও ফেরাউনের দরবারী আলেম ছিল ৷ যারা উপরের দুই বড়ো ও মেজো শয়তান নামক প্রভুর হুকুম তামিল করে মাত্র ৷ আজকের যুগের সেই ছোটো শয়তান হল আলে সৌদ ৷
আজকের যুগের এই তিন শয়তানের পরিচয়ে পরিচিত হতে হবে ৷ না হয়ে হজে গিয়ে মিনাতে বড় শয়তান, মেজো শয়তান ও ছোটো শয়তানকে পাথর মারার কোন স্বার্থকতা নেই ৷ এই স্মৃতিকে চেতনার মধ্যে আবদ্ধ করতে হবে ৷
দ্রষ্টব্য: হাওজা নিউজে প্রকাশিত সমস্ত নিবন্ধ লেখকদের ব্যক্তিগত মতামতের উপর ভিত্তি করে। হাওজা নিউজের নীতি লেখকের মতামতের সাথে একমত হওয়া জরুরী নয়।