۶ آذر ۱۴۰۳ |۲۴ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 26, 2024
হজরত ইমাম জাফর সাদিক (আ.)'র শাহাদত বার্ষিকী
হজরত ইমাম জাফর সাদিক (আ.)'র শাহাদত বার্ষিকী

হাওজা / ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রাণসঞ্জীবনী আলো বিকিরণকারী ক্ষণজন্মা এই মহাপুরুষ ছিলেন অনেক সুযোগ্য মনীষী, খ্যাতনাম আলেম, বিশেষজ্ঞ, গুণী ও বিজ্ঞানী গড়ার মহান কারিগর।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)’র পবিত্র আহলে বাইতের সদস্য হযরত ইমাম জাফর সাদিক (আ.) হচ্ছেন এমন এক ব্যক্তিত্ব যাঁকে ছাড়া ইসলামের ইতিহাস অসম্পূর্ণ। বিশেষ করে খাঁটি ইসলামী ফেকাহ শাস্ত্রের বিকাশ ও এর সংরক্ষণের জন্যে মুসলিম উম্মাহ ইমাম জাফর সাদিক (আ.)'র কাছে ঋণী।

ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রাণসঞ্জীবনী আলো বিকিরণকারী ক্ষণজন্মা এই মহাপুরুষ ছিলেন অনেক সুযোগ্য মনীষী, খ্যাতনাম আলেম, বিশেষজ্ঞ, গুণী ও বিজ্ঞানী গড়ার মহান কারিগর। তাঁর অসাধারণ নূরানী জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় মুসলিম জাহান হয়েছিলো স্বর্গীয় আলোয় উদ্ভাসিত এবং তাঁর সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ভূমিকায় ইসলামী ঐক্য হয়েছিল সংহত ও প্রাণবন্ত। তাই জ্ঞান ও ইসলামী ঐক্যের প্রদীপ্ত মশালবরদার হিসেবে ইসলামের ইতিহাসে ইমাম জাফর সাদিক (আ.)'র পবিত্র নাম মানুষের অন্তরের মণিকোঠায় আজো অক্ষয় হয়ে জ্বলছে এবং অনাদিকাল পর্যন্ত চিরজীবন্ত থাকবে। এই মহান ইমামের শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে সবাইকে জানাচ্ছি গভীর শোক ও সমবেদনা।

ইমাম জাফর সাদিক (আ.) তিরাশী হিজরীর ১৭ ই রবিউল আউয়াল পবিত্র মদীনায় জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ইমাম মুহাম্মাদ বাকের (আ.) ছিলেন নবী বংশের পঞ্চম ইমাম। পিতার শাহাদতের পর ৩১ বছর বয়সে ইমাম জাফর সাদিক (আ.) মুসলিম জাহানের ইমামতি বা নেতৃত্বের ভার গ্রহণ করেন। তিনি ১১৪ হিজরী থেকে ১৪৮ হিজরী পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহর হেদায়াতের দায়িত্ব পালন করেন।

ইমাম সাদিক (আ.) ছোটবেলায় প্রশিক্ষণ পেয়েছিলেন নবীবংশেরই আরো দু'জন মহান ইমামের কাছে। এঁদের একজন হলেন পিতা ইমাম বাকের (আ.) এবং অপরজন হলেন দাদা ইমাম জয়নুল আবেদীন (আ.)। সাদিক (আ.) তাঁর দাদার ইমামতির দশটি বছর দেখার সুযোগ পান। তাঁর জ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতা থেকে ইমাম সাদিক (আ.) অনেক কিছু অর্জন করেন। তাঁর পিতা যখন ইমামতির দায়িত্ব পান তখন তাঁর বয়স বারো বৎসর। ফলে পিতার কাছ থেকেও তিনি সার্বিক জ্ঞান লাভের সুযোগ পান। ১১৪ হিজরীতে ইমামতের গুরুদায়িত্ব বাকের (আ.) এর কাঁধে আরোপিত হয়।

অনন্য চরিত্র ও নৈতিকতার অধিকারী ইমাম সাদিক (আ.) ছিলেন অত্যন্ত দূরদর্শী , বিচক্ষণ ও মহাজ্ঞানী। তাঁর পিতার শাহাদতের পর মুসলিম জাহানে তিনিই ছিলেন জ্ঞানের সবচেয়ে বড় উৎস বা পরশমনি। আলোর প্রতি কীট-পতঙ্গের আকর্ষণ যেমন দুনির্বার তেমনি তাঁর জ্ঞান ও শিক্ষা-আন্দোলনের অনিবার্য নূরানী আকর্ষণ আকৃষ্ট করেছিল সেযুগের অধিকাংশ জ্ঞান-পিপাসু এবং পন্ডিতকে। এক্ষেত্রে উমাইয়া বা আব্বাসীয় শাসকগোষ্ঠীর প্রবল বাধাও বাঁধ-ভাঙ্গা জোয়ারের মধ্যে বালির বাঁধের মতোই ভেসে গেছে। হাদীস শাস্ত্রের ক্ষেত্রে বলা হয় ইমাম জাফর সাদিক (আ.)'র কাছ থেকে চার হাজার রাবী হাদীস সংগ্রহ করেছিলেন। ইমাম তাঁর ছাত্রদেরকে ফিকাহ, হাদীস ও তাফসীর ছাড়াও অংক ও রসায়ন শাস্ত্রের মতো বিভিন্ন বিজ্ঞানও শিক্ষা দিতেন।

বিখ্যাত ফকিহ মুহাম্মাদ বিন মুসলিম ও যুরারেহ, বিখ্যাত কালাম শাস্ত্রবিদ ও দার্শনিক হিশাম, ইরফান ও আধ্যাত্মিক শাস্ত্রের বিশিষ্ট পন্ডিত মুফায্যাল ও সাফাওয়ান এবং অংক ও রসায়ন শাস্ত্রের জগৎ-বিখ্যাত পন্ডিত জাবির ইবনে হাইয়ানের মতো ব্যক্তিত্বরা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন ইমাম জাফর সাদিক (আ.) 'র জ্ঞানের অমীয় ধারার স্পর্শে। এছাড়াও বায়েজীদ বোস্তামী, হাসান বসরী, ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালেক ও ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদের মতো বিশ্ববিশ্রুত মনীষীরা ইমাম জাফর সাদিক (আ.)'র কাছ থেকে জ্ঞান লাভ করে নিজেদের ধন্য করেছেন। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের অন্যতম ইমাম আবু হানিফা দুই বছর ইমাম জাফর সাদিক (আ.)'র ছাত্র ছিলেন। কথিত আছে ইমাম আবু হানিফা বলেছেন, সেই দুই বছরে আমি যা শিখেছি সারা জীবনেও আমি ততটা শিখতে পারিনি।

মালেকি ফিকাহর ইমাম মালেক ইবনে আনাসও ছিলেন ইমাম জাফর সাদিক (আ.) এর গর্বিত ছাত্র। তিনি বলেন-"সবসময় মৃদু হাঁসি ইমামের ঠোঁটে লেগে থাকতো। আমি তাঁকে কখনো অপ্রয়োজনীয় গল্প-গুজব করতে দেখে নি। তাঁর সমগ্র অস্তিত্ব জুড়ে ছিল আল্লাহর ভয়।”

ইমাম জাফর সাদিক (আ.)'র দৃষ্টিতে একজন ইসলামী আইনবিদ বা ফকীহর দুই রাকাত নামাজ একজন দরবেশ বা সাধকের সত্তুর হাজার রাকাত নামাজের চেয়েও উত্তম। কারণ, একজন ফকিহ বা ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞ তাঁর দূরদৃষ্টি ও বিচক্ষণতার কারণে সমাজের জন্যে অমূল্য সম্পদ এবং তিনি তাঁর জ্ঞান ও সচেতনতার মাধ্যমে মানুষকে বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা করেন।

বিন্দুর মাঝে সিন্ধুর গভীরতার মতো ইমাম জাফর সাদিক (আ.)'র সংক্ষিপ্ত অনেক বক্তব্যের মধ্যে রয়েছে জ্ঞান ও গভীর তত্ত্বের অমূল্য ভিত্তি। যেমন, তিনি বলেছেন, সমস্ত জ্ঞান মূলতঃ চারটি ক্ষেত্রে সিমীত। প্রথমতঃ প্রভু বা আল্লাহকে জানা। দ্বিতীয়তঃ এটা জানা যে আল্লাহ তোমার সাথে কি করেছেন এবং তোমাকে কতটা দয়া ও করুণায় সিক্ত করেছেন? তৃতীয়তঃ এইসব দয়া ও দাক্ষিণ্যের বিনিময়ে তিনি তোমার কাছে কি আশা করেন? চতুর্থতঃ এটা জানা যে কোন্ ধরনের গোনাহ ও ভুল তোমার আত্মা এবং প্রাণকে কলুষিত করবে?

মুসলমানরা যখন বিভিন্ন বিজাতীয় সংস্কৃতির সংস্পর্শে বা প্রভাবে অনেক নতুন প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছিল এবং চিন্তাগত বিভিন্ন বিষয়ে মতভেদে জড়িয়ে পড়েছিল তখন ইমাম জাফর সাদিক (আ.) তাদেরকে এইসব সংকট থেকে মুক্ত করার জন্যে চিন্তা ও গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করেন যা পবিত্র কোরআনেরই অন্যতম প্রধান দিক-নির্দেশনা।

ইমাম জাফর সাদিক (আ.) যে মহাসাগরের মত অগাধ জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন তা ছিল নবুওতী জ্ঞানেরই উত্তরাধিকার। আর এ ধরনের জ্ঞান আল্লাহর অতি নৈকট্যপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ছাড়া অন্য ব্যক্তিদের পক্ষে অর্জন অকল্পনীয় বা অসম্ভব। আর এ জন্যেই ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলতেন, “আমার বক্তব্য আমার পিতা তথা ইমাম বাকের (আ.)'র বক্তব্য, আমার পিতার বক্তব্য আমার দাদা তথা ইমাম জয়নুল আবেদীন (আ.)'র বক্তব্য, আমার দাদার বক্তব্য হচ্ছে আমীরুল মুমিনিন হযরত আলী (আ.)'র বক্তব্য এবং তাঁর বক্তব্য হচ্ছে রাসূল (সা.)'রই বক্তব্য, আর রাসূলে খোদা (সা.)'র বক্তব্য হচ্ছে মহান আল্লাহরই বক্তব্য। ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলেছিলেন, আমাদের তথা রাসূল (সা.)'র আহলে বাইতের কাছে রয়েছে ভবিষ্যতের জ্ঞান, অতীতের জ্ঞান, অন্তরে অনুপ্রাণিত বা সঞ্চারিত জ্ঞান, ফেরেশতাদের বাণী যা আমরা শুনতে পাই, আমাদের কাছে রয়েছে রাসূল (সা.)'র অস্ত্রসমূহ এবং আহলে বাইতের সদস্য ইমাম মাহদী (আ.)'র কাছে না পৌঁছা পর্যন্ত সেগুলো আমাদের হাতছাড়া হবে না। আমাদের কাছে রয়েছে হযরত মূসা (আ.)'র তৌরাত, হযরত ঈসা (আ.)'র ইঞ্জিল, হযরত দাউদ (আ.)'র যাবুর এবং মহান আল্লাহর পাঠানো অন্যান্য আসমানী কেতাব।” তিনি আরো বলেছেন, “এ ছাড়াও আমাদের কাছে রয়েছে হযরত ফাতেমা (সালামুল্লাহি আলাইহা)'র সহিফা যাতে রয়েছে সমস্ত ভবিষ্যৎ ঘটনার বিবরণ এবং পৃথিবীর শেষ ঘন্টা পর্যন্ত সমস্ত শাসকের নাম তাতে লেখা আছে। আমাদের কাছে রয়েছে আল জামী নামের দলীল, সত্তুর গজ দীর্ঘ ঐ দলীলে লেখা রয়েছে রাসূলুল্লাহ (সা.)'র নিজ মুখের উচ্চারিত ও নির্দেশিত বাণী এবং ঐসব বাণী আমীরুল মুমিনীন হযরত আলী (আ.) নিজ হাতে লিখেছিলেন। আল্লাহর শপথ! এতে রয়েছে মানুষের জন্যে কিয়ামত পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সবকিছু।”

ইমাম সাদিক ( আ. ) -এর সাংস্কৃতিক আন্দোলনের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে হলে তাঁর সমকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও অবস্থা সম্পর্কে সচেতনতা প্রয়োজন। ৩৪ বছরের ইমামতিকালে ইমাম সাদিক ( আ. ) সর্বমোট ৭ জন শাসকের শাসনকাল দেখেছেন। এদের মধ্যে ৫জন হলো উমাইয়া শাসক আর ২ জন আব্বাসীয়। এই দীর্ঘ সময়ে ইমাম দুটি কর্মসূচিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। একটি হলো অত্যাচারী শাসকদের জুলুম-অত্যাচারের বিরোধিতা এবং অপরটি হলো জনগণের চিন্তা চেতনার উন্নয়ন ও উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে সাংস্কৃতিক ও জ্ঞানগত বৈপ্লবিক ভিত রচনার পাশাপাশি তাদেরকে ইসলামের প্রকৃত স্বরূপ ও মৌলিক দিকগুলোর সাথে পরিচয় করানোর চেষ্টা। এই দুটি কর্মসূচির মাধ্যমে ইমাম চেয়েছেন ইসলামের উজ্জ্বল ও পবিত্র স্বরূপের ওপর যেসব বিকৃতি বা কুসংস্কার আরোপিত হয়েছিল, সেগুলোকে দূর করা।

ইমামের হেদায়েত এবং তাবলিগি কাজের ধরণ সম্পর্কে তৎকালীন খলিফা মানসুর বলেছিলেনঃ "জাফর ইবনে মুহাম্মাদ যদিও তরবারি দিয়ে সংগ্রাম করছে না, কিন্তু তার পদক্ষেপগুলো আমার কাছে একটি অভ্যুত্থানের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ এবং কঠিন বলে মনে হয়।"

শিয়া মাযহাব ইমাম জাফর সাদেক (আ) এর জ্ঞান থেকে বিরতিহীনভাবে গ্রহণ করে হৃষ্টপুষ্ট ও সমৃদ্ধ হয়েছে, আর এ কারণে শিয়া মাযহাব 'জাফরি মাজহাব' হিসেবেও প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। এই খ্যাতি থেকেই প্রমাণিত হয় যে আহলে বাইতের পরিচিতি ও সংস্কৃতিকে সুবিন্যস্ত এবং পরিপূর্ণ করার ক্ষেত্রে তাঁর ব্যাপক ভূমিকা ছিল।

আব্বাসীয় খলিফা মানসুর ইমাম সাদিক ( আ. ) এর সম্মান ও মর্যাদার কারণে উদ্বিগ্ন ছিলেন। এই উদ্বেগ নিরসনের লক্ষ্যে ইমামের জ্ঞান-গরিমাগত মর্যাদা কমানোর স্বার্থে মানসুর সিদ্ধান্ত নেয় ইমামকে কঠিন কিছু বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে,যাতে তিনি সঠিক জবাব দিতে না পারেন,পরিণতিতে জনগণের কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা কমে যায়। একজন পণ্ডিত ব্যক্তিকে এই প্রশ্ন করার কাজে সহযোগিতা করতে বলা হলো। ঐ পণ্ডিত ৪০টি জটিল বিষয়ে প্রশ্ন করলেন। ইমাম বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে ঐসব বিষয়ের সুন্দর সমাধান দিলেন। কোনো কোনো বিষয়ে বিভিন্ন মাযহাবের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরার পাশাপাশি নিজের দৃষ্টিভঙ্গিও তুলে ধরে জবাব দেন। ঐ পণ্ডিত শেষ পর্যন্ত নিজেই স্বীকার করলেন যে ফিকাহ সম্পর্কে এতোবড়ো জ্ঞানী তিনি আর দেখেন নি।

ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলতেন- যারা অত্যাচারী শাসকের প্রশংসা করে এবং স্বার্থ হাসিলের জন্যে তাদেরকে কুর্নিশ করে,তারা ঐ অত্যাচারী শাসকের সাথে দোযখে যাবে।

আব্বাসীয় খলিফা মানসুর বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছিল জনগণের সামনে ইমামের মর্যাদাকে ছোট করতে,কিন্তু কখনোই তাতে সফল হয় নি। মানসুর মাঝে মাঝে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে নিজেকে ইমামের সান্নিধ্যে নেওয়ার চেষ্টা করতো। একবার ইমামকে সে একটি চিঠিতে লিখেছিল-"আপনি আমার কাছে এসে আমাকে একটু নসীহত করুন।" ইমাম সাদিক ( আ. ) এই চিঠির জবাবে লিখেছিলেন-"যারা পার্থিব স্বার্থান্বেষী তারা তাদের স্বার্থ বিঘ্নিত হবার ভয়ে তোমাকে নসীহত করবে না। আবার যারা পরকালীন স্বার্থ কামনা করে,তারা তোমার মতো ব্যক্তির কাছে আসবে না।

অতুলনীয় জ্ঞান, নৈতিক এবং চারিত্র্যিক মহান বৈশিষ্ট্যের কারণে জনগণের মাঝে ইমাম সাদিক ( আ. ) এর জনপ্রিয়তা দিনের পর দিন বেড়েই যাচ্ছিলো। এতে ভয় পেয়ে গিয়েছিল আব্বাসীয় শাসকরা। জনগণ যেভাবে ইমামের সাহচর্য পিয়াসী হয়ে উঠেছিল, তাতে খলিফা মানসুর ইমামের অস্তিত্বের উজ্জ্বল সূর্যালোক সহ্য করতে পারছিল না। তাই সে চক্রান্ত করে ইমামকে বিষপান করিয়ে শহীদ করেছিল। তাঁর সেই শাহাদাতের বার্ষিকীতে আপনাদের সবার প্রতি রইলো আবারো সমবেদনা।

ইমাম জাফর সাদিক (আ.) জ্ঞান ও আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রে অতি উচ্চ পর্যায়ে আসীন হওয়া সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের সাথে মিশতেন ও তাদের সাথে চলাফেরা করতেন। গরীব ও অসহায়দের সাহায্য করার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অগ্রগামী। তিনি প্রত্যেক রাতে রুটি ও গোশতের বস্তা এবং টাকার থলি কাঁধে নিয়ে মদীনার অসহায় লোকদের মাঝে বিতরণ করতেন, কিন্তু নিজের পরিচয় গোপন রাখতেন। ইমাম শহীদ হবার পর যখন এসব সাহায্য বন্ধ হয়ে যায় কেবল তখনই তারা ঐ সাহায্যকারীর পরিচয় জানতে পেরেছিল।

ইমাম জাফর সাদিক (আ.)’র কয়েকটি জ্ঞানদৃপ্ত বাণী শুনিয়ে শেষ করবো আজকের আলোচনা। তিনি বলেছেন, "আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু এবং ভাই তিনিই, যিনি আমার দোষগুলো ধরিয়ে দেন।"

দুনিয়াপ্রীতি দুঃখ-বেদনার উৎস, আর পরহিজগারী শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তির উৎস।

বিশ বছরের বন্ধুত্ব আত্মীয়তার পর্যায়ভুক্ত।

আমার সবচে প্রিয় বন্ধু এবং ভাই হলো সে-ই, যে আমার ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দেয়। হারাম বস্তু খাওয়ার ফলে আয়-রোজগার কমে যায় এবং জীবনকে অভাব-দারিদ্র্য আর বদমেজাজ উপহার দেয় ।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .