۱۵ اردیبهشت ۱۴۰۳ |۲۵ شوال ۱۴۴۵ | May 4, 2024
২৫ শাওয়াল ইসলামের ইতিহাসে এক গভীর শোকাবহ দিন
২৫ শাওয়াল ইসলামের ইতিহাসে এক গভীর শোকাবহ দিন

হাওজা / ২৫ শাওয়াল ইসলামের ইতিহাসে এক গভীর শোকাবহ দিন। কারণ, এই দিনে শাহাদত বরণ করেন মুসলিম বিশ্বের প্রাণপ্রিয় প্রবাদপুরুষ ইমাম আবু আব্দুল্লাহ জাফর আস সাদিক (আ.)। ইসলাম ও এর প্রকৃত শিক্ষা তাঁর কাছে চিরঋণী।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, পর্ব ১- ১৪৮ হিজরির ২৫ শাওয়াল ইসলামের ইতিহাসে এক গভীর শোকাবহ দিন। কারণ, এই দিনে শাহাদত বরণ করেন মুসলিম বিশ্বের প্রাণপ্রিয় প্রবাদপুরুষ ইমাম আবু আব্দুল্লাহ জাফর আস সাদিক (আ.)। ইসলাম ও এর প্রকৃত শিক্ষা তাঁর কাছে চিরঋণী।

ইমাম সাদিক (আ.) আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ানের শাসনামলে ৮২ হিজরির ১৭ই রবিউল আউয়ালে মদিনায় জন্ম গ্রহণ করেন। সে সময় মুসলিম বিশ্বে চলছিল নিষ্ঠুর ও স্বৈরাচারী শাসকদের রাজত্ব। ইসলামী ভূখণ্ডের যে প্রান্তেই তাদের অপকর্মের প্রতিবাদ করা হত সেখানেই উম্মতের নিরীহ ও নিরপরাধ মানুষদের নির্দ্বিধায় হত্যা করা হত। এ সময় ইসলামের প্রকৃত বাণী তুলে ধরাই ছিল অত্যন্ত কঠিন কাজ।

কিন্তু ইসলামের সেই মহাদুর্দিনে ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবন, সংরক্ষণ, বিকাশ এবং মুসলিম সমাজের সংস্কারের ক্ষেত্রে কাণ্ডারি হিসেবে আবির্ভূত হন বিশ্বনবী (সা.)'র পবিত্র আহলে বাইতের সদস্য ইমাম জাফর সাদিক (আ.)। তাঁর মহান আত্মার প্রতি অশেষ দরুদ ও সালাম পেশের পাশাপাশি সবাইকে জানাচ্ছি গভীর শোক ও সমবেদনা। এই মহান ইমামের কিছু অমূল্য অবদান ও তাঁর অনুপম চরিত্রের নানা দিক তুলে ধরব এ প্রবন্ধে।

ইমাম জা’ফর আস সাদিক (আ.) মুসলমানদের সব মাজহাবের কাছেই বরেণ্য ও শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব হওয়ায় তাঁর আদর্শ হতে পারে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের সূত্র। চারজন সুন্নি ইমামের মধ্যে একজন তাঁর প্রত্যক্ষ ছাত্র এবং আরো দুই জন সুন্নি ইমাম তাঁর পরোক্ষ ছাত্র ছিলেন। উল্লেখ্য শিয়া মাজহাব ইমাম জাফর সাদেক (আ) এর জ্ঞান থেকে বিরতিহীনভাবে গ্রহণ করে হৃষ্টপুষ্ট ও সমৃদ্ধ হয়েছে, যে কারণে শিয়া মাজহাব 'জাফরি মাজহাব' হিসেবেও খ্যাত।

শেইখ আব্দুর রহমান নাকশবান্দি তার ‘আল ইকদুল ওয়াহদি’ গ্রন্থে আহলে বাইতকে স্মরণ করে বলেছেন: তাঁরা হলেন আমাদের ধর্মের তরিকা, আমাদের শরীয়তের উৎস এবং সাহাবীদের মধ্যে দৃঢ়-স্তম্ভ স্বরূপ। ইসলাম তাঁদের মধ্যে আবির্ভূত ও প্রকাশিত হয়েছে। ইসলামের ভিত্তি তাদের মাধ্যমে সুপ্রতিষ্ঠিত ও বিস্তার লাভ করছে। এ কারণেইে মহানবী (সা.) বলেছেন: নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মধ্যে এমন কিছু রেখে যাচ্ছি যা তোমরা আঁকড়ে ধরলে কখনও বিপথগামী হবে না : আল্লাহর কিতাব ও আমার বংশধর আহলে বাইত। সুতরাং লক্ষ্য রাখ আমার পর কিভাবে এ দু'য়ের সাথে আচরণ করছ। তিনি আরো বলেন, দরুদ ও সালাম পড়ার সময় যে পূর্ণ মাত্রায় সাওয়াব লাভে সন্তুষ্ট হতে চায় সে যেন বলে: আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলিহি, অর্থাৎ হে আল্লাহ, মুহাম্মাদ ও তাঁর বংশধরদের ওপর দরুদ বর্ষিত হোক। ইমাম শাফেয়ী থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, নামাজের শেষ রাকাতের তাশাহুদ শেষে দরুদ পড়া ওয়াজিব।

রাসুলের আহলে বাইত বা পবিত্র বংশধরের মর্যাদা এত বেশি যে, সুন্নি ইমাম শাফেয়ী তার প্রসিদ্ধ কবিতায় বলেছেন:

“হে মহানবী (স.) এর বংশধর! আপনাদের প্রতি ভালোবাসা একটি ফরজ কাজ যা মহান আল্লাহ কুরআনে অবতীর্ণ করেছেন। আপনাদের মাহাত্ম্য প্রমাণের ক্ষেত্রে এতটুকুই যথেষ্ট যে, যে ব্যক্তি তোমাদের ওপর দরুদ পড়বে না তাঁর (আল্লাহর রাসূলের) জন্যও সে দরুদ পড়েনি।”

ইমাম সাদিক (আ.) রিসালাতের কোলে তথা রাসূলের বংশ-ধারায় জন্ম নেন এবং বিশ্বনবী (সা.)'র আহলে বাইতের ঘরেই বেড়ে ওঠেন। তিনি নিজ দাদা ও বনি হাশিমের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি ইমাম আলী ইবনে হুসাইন জাইনুল আবেদীন (আ.) এবং পিতা ইমাম মুহাম্মাদ বাকির (আ.)-এর মাধ্যমে প্রশিক্ষিত হন। তিনি বারো বছর ধরে (অন্যান্য বর্ণনামতে ১৫ বছর বা ১৬ বছর) দাদার সান্নিধ্য এবং শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ পেয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর ইমাম সাদিক (আ.) নিজ পিতা ইমাম বাকির (আ.)-এর তত্ত্বাবধানে উনিশ বছর শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং অবশেষে তাঁর মৃত্যুর পর ইমামতের মহান দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

ইমাম সাদিক (আ.) এমন এক সমাজে বড় হন যেখানে মানুষ কেবল অত্যন্ত গোপনে ও সতর্কতা অবলম্বন করে বিশ্বনবী (সা.)'র আহলে বাইতের সাথে যোগাযোগ করতে পারত।

ইমাম সাদিক (আ.) যখন যুবক ছিলেন তখন পারস্পরিক চাওয়া-পাওয়া এবং চিন্তাধারাগুলোর মধ্যে তীব্র দ্বন্দ্ব-সংঘাত ছিল এবং হিংসা-বিদ্বেষ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। মানুষের জীবনের কোন মূল্য ছিল না এবং ধর্মকেও অবমাননা করা হত। আর জনগণ ছিল কেবলই শাসকদের লক্ষ্যে পৌঁছার হাতিয়ার।

সবচেয়ে বেশী যাদের ওপর দমন নিপীড়ন চালানো হতো তারা হল রাসূল (সা.)-এর আহলে বাইতের সমর্থক ও অনুসারীরা। আলী (আ.)-কে গালি দেয়া ছিল আহলে বাইতের শত্রুদের কাছে ফরজ আমলের পূর্ণতাদায়ক মুস্তাহাব! আর এ বিষয়টি ছিল মহানবী (সা.)-এর আহলে বাইতের জন্য চরম মর্মবেদনার কারণ। কিন্তু তাঁরা ধৈর্যশীলদের জন্য মহান আল্লাহর মহাপুরস্কারের প্রতিশ্রুতির কারণে এই কষ্ট সহ্য করতেন। ইমাম সাদিক (আ.) তাঁর কৈশোর ও যৌবনে এ ঘটনা প্রবাহের সাক্ষী ছিলেন এবং তাঁর বাবার কাছ থেকে এ ধরনের বাস্তবতাকে মোকাবিলার শিক্ষা পেয়েছিলেন। যখন তাঁকে তার বাবা ইমাম বাকির (আ.)-এর সঙ্গে সব অন্যায় ও অবিচারের কেন্দ্র সিরিয়ায় জোর কোরে নিয়ে যাওয়া হয় তখন থেকে তাঁর ওপরও বনি উমাইয়ার শত্রুতার ঝড় বইতে থাকে।

পরিবেশ এতটা প্রতিকূল হওয়া সত্ত্বেও ইমাম সাদিক (আ.) সত্য বলতে কুণ্ঠিত হতেন না এবং মানুষকে সঠিক পথের দিক নির্দেশনা দান থেকে বিরত থাকতেন না। তিনি তাদেরকে সবসময় জালিম শাসককে সহযোগিতা করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিতেন, শাসকদের পক্ষ থেকে নিয়োজিত বিচারকদের শরণাপন্ন হতে নিষেধ করতেন এবং সরকারী যে কোন পদ গ্রহণে নিরুৎসাহিত করতেন। ইমাম সাদিক (আ.)-এর সময় যাইদ ইবনে আলী (আ.) উমাইয়া শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন। যখন যাইদ শহীদ হন ইমাম (আ.) প্রকাশ্যে তাঁর প্রশংসা ও তাঁর হত্যাকারীদের লানত করেন। যাইদ ইবনে আলীকে হত্যার পর হিশাম ইবনে আব্দুল মালিক হযরত আলী (আ.)-এর বংশধরদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করতে থাকে। এ ছাড়াও সে নানা পন্থায় ইমাম সাদিক (আ.)-এর ওপর সংকীর্ণতা আরোপ করে। কিন্তু মহান আল্লাহর কৃপায় বনি উমাইয়াদের এইসব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও মহানবী (সা.)-এর আহলে বাইতের প্রতি জনগণের ভালবাসা বাড়তেই থাকে।

বনি উমাইয়াদের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব জোরদার হওয়ার সুযোগে আব্বাসীয়রা ১৩২ হিজরিতে উমাইয়া শাসনের পতন ঘটায়। তারা জনগণকে এ কথা বলে আন্দোলনে শামিল করেছিল যে, উমাইয়াদের পতন ঘটলে তারা নবী(সা.)'র বংশকেই তথা আহলে বাইতকে ক্ষমতায় বসাবে ও কারবালার ঘটনার প্রতিশোধ নেবে। কিন্তু উমাইয়াদের পতনের পর তারা নিজেরাই ক্ষমতা দখল করে এবং নবী-বংশের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেব দেব করে বহু বছর পার করার পর এটা বলে যে নবী বংশ বলতে তারা নিজেদের তথা বনি-আব্বাসকেই বুঝিয়েছিল।

জনগণ বুঝতে পারে যে তারা প্রতারিত হয়েছে। প্রথম আব্বাসিয় শাসক সাফফাহ তার ক্ষমতা কিছুটা সংহত করার পর নিজের ভাই মনসুর দাওয়ানিকির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে।

বনি উমাইয়ার শক্তির ভিত দুর্বল হওয়া ও অন্যরা পর্যাপ্ত শক্তি ও ক্ষমতার অধিকারী না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী এ অবস্থাটি ইমাম সাদিক (আ.)-এর জন্য সুবর্ণ এক সুযোগ এনে দেয়। ইমাম এ বিষয়টি পূর্ণরূপে অনুভব করে তীব্র কষ্ট পেতেন যে, দীর্ঘ দিনের বিচ্যুতি ও অনাচার ইসলামকে এতোই বদলে দিয়েছে যে তা অন্তঃসারশূন্য ও আচারসর্বস্ব এক ধর্মে পরিণত হয়েছে। এ কারণে তিনি মানুষকে হেদায়াত এবং ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা ও বিধিবিধান প্রচারের লক্ষ্যে তাঁর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দ্বার উন্মোচন করেন।

এ সময়ে ইমাম সাদিক (আ.)-এর ঘর ছিল একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মত ছিল যেখানে বড় বড় মনীষীরা তাঁর কাছে হাদিস, তাফসির, দর্শন ও কালাম শাস্ত্র শিখতেন। তাঁর ক্লাসে সাধারণত দুই হাজার প্রসিদ্ধ আলেম অংশ নিতেন। কখনও কখনও এ সংখ্যা চার হাজারে পৌঁছাত। হাদিস বর্ণনাকারী এবং জ্ঞান পিপাসুরা তাঁর কাছ থেকে শেখার জন্য দূর দূরান্ত থেকে মদীনায় আসত। কারণ ঐ সময় তিনি সতর্ক প্রহরা ও নজরবন্দী অবস্থায় ছিলেন না। তাঁর বিশেষ ছাত্রদের মধ্যে ছিলেন বনি হারিস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব ও বনি হাসান ইবনে হাসান ইবনে আলী (আ.)।

ফিকাহ শাস্ত্র ও হাদিস বিষয়ক জ্ঞানের বিশিষ্ট ও প্রসিদ্ধ ব্যক্তিদের অনেকেই তাঁর কাছে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন। যেমন, ইয়াহিয়া ইবনে সাঈদ আনসারী, ইবনে জারিহ, মালিক ইবনে আনাস, সুফিয়ান সওরী, ইবনে উয়াইনা, আবু হানিফা, শোবা, আইয়ুব সাজেস্তানি ও অন্যান্যরা। তাঁরা সবাই ইমাম সাদিক (আ.)-এর ছাত্র হওয়ার কারণে গর্ব করতেন। ইমাম সাদিক (আ.)-এর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল। কারণ তিনি তাঁর সময়ে শিক্ষা ও চিন্তার বিকাশ আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন। প্রকৃতপক্ষে তিনিই প্রথম ব্যক্তি হিসাবে ইসলামে দর্শন শাস্ত্রের প্রবর্তন করেন। তাঁর ছাত্রদের মধ্যে কেবল ফিকাহ শাস্ত্রের বিভিন্ন মাজহাবের প্রতিষ্ঠাতারাই ছিলেন না বরং হিকমত ও দর্শনের অনুরাগীরাও ইসলামী বিশ্বের সকল প্রান্ত থেকে তাঁর কাছে আসতেন।

হাদিস শাস্ত্রে ইমামের অবস্থান এত উচ্চে ছিল যে, যে কোন হাদিসের বর্ণনায় তাঁর নামের উল্লেখই ঐ হাদিসটির বিশুদ্ধতার প্রমাণ বলে বিবেচিত হত। এক ব্যক্তি বর্ণনা করেছেন যে, তিনি কুফার মসজিদে নয়শত ধর্মীয় পণ্ডিত ও ধর্ম প্রাণ ব্যক্তিকে দেখেছেন যে তারা সকলে বলছিল : জাফর ইবনে মুহাম্মাদ আমাকে এটা বলেছেন।

সাফফাহর পর তার ভাই মনসুর দাওয়ানিকি ক্ষমতা গ্রহণ করলেও জনগণ নবী-বংশকেই শাসন-ক্ষমতার জন্য প্রকৃত যোগ্যতার অধিকারী বলে মনে করতো।

তাছাড়া মদীনার আলেমরাও প্রকাশ্যে আব্বাসীয়দের হাতে বাইয়াত করা হারাম বলে ফতোয়া দিতেন। তবে যে বিষয়টি মানসুরকে বেশি উদ্বিগ্ন করেছিল তা হল আলী (আ.)'র বংশধরদের কার্যক্রম বিশেষত তাদের শীর্ষ ব্যক্তি জাফর ইবনে মুহাম্মাদ আস সাদিক (আ.)-এর ভূমিকা। মানসুর ইমামকে জব্দ করা ও দমিয়ে রাখার জন্য সব ক্ষমতার অপব্যবহার ও বল প্রয়োগ করা ছাড়াও সব ধরনের প্রতারণার আশ্রয় নিত।

মানসুর যখন চাইত কোন লোককে গোপনে হত্যা করবে তখন তার সাথে এক খৃষ্টান চিকিৎসককে সঙ্গে নিয়ে যেত যে ছিল সম্পূর্ণ নাস্তিক এবং ন্যায়-অন্যায়ের ধার ধারত না। মানসুর যাকেই হত্যার নির্দেশ দিত সে তার পানীয়তে বিশ মিশিয়ে তাকে পরিবেশন করত। মানসুর যদি কাউকে নিজের কব্জায় আনতে পারত তবে তাকে জীবন্ত অবস্থায় দুই দেয়ালের মধ্যে আটকে ঢালাই করে বন্ধ করে দিত। হাশেমিয়া ও বাগদাদের দেয়ালগুলো যদি কথা বলতে পারত তবে তারা সাক্ষ্য দিত যে, কত নিরপরাধ লোককে মানসুর দেয়ালগুলোর মধ্যে জীবন্ত সমাধিস্থ করেছে। একবার মানসুর হজ্বে গেলে। আব্দুল্লাহ ইবনে হাসানের কন্যা তার কাছে এসে তার বৃদ্ধ বন্দী পিতার মুক্তির আকুল আবেদন জানিয়ে একটি কবিতা পাঠ করে যাতে মানসুরের সঙ্গে তাদের পরিবারের আত্মীয়তার সম্পর্কের দোহাইও ছিল।

কিন্তু এ কবিতার জবাবে মানসুর তার বাবাকে হত্যার নির্দেশ দিয়ে তার বিচ্ছিন্ন মাথাটি মেয়ের সামনেই প্রদর্শন করে। এ ঘটনাটি মানসুরের পাষাণ হৃদয় ও অত্যাচারের একটা খণ্ডচিত্র মাত্র।

ইমাম সাদিক (আ.) সাফফাহর শাসনামলের বিশেষ অবস্থার কারণে শান্তি ও নিরাপত্তার মধ্যে ছিলেন। কারণ রাজনৈতিক নাজুক অবস্থার কারণে সাফফাহ বিরাজমান পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে চলতে বাধ্য ছিল। কিন্তু মানসুরের সময় ইমাম সাদিক (আ.)-এর সামনে বিভিন্ন সমস্যা উদ্ভূত হওয়ায় পূর্বের অবস্থার অবনতি ঘটে। ইমাম সাদিক (আ.)-এর সামাজিক মর্যাদা ও জনসাধারণের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তার বিষয়টি মানসুরের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর ছিল। সে ইমামকেই তার সবচেয়ে বড় শত্রু বলে মনে করত।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .