۱۷ اردیبهشت ۱۴۰۳ |۲۷ شوال ۱۴۴۵ | May 6, 2024
বাংলাদেশে ইংরেজি ভাষা শিক্ষার আকাল ও দুর্দশা
বাংলাদেশে ইংরেজি ভাষা শিক্ষার আকাল ও দুর্দশা

হাওজা / ১৯০ বছর দাপটের সাথে যুরা( ব্রিটেন যুক্তরাজ্য ) বাংলা শাসন করলেও বর্তমানে ইংরেজি ভাষা , সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিশ্বায়নের যুগে বাংলাদেশে মাত্র ৫% মানুষ ইংরেজি জানে ! তার মানে ১৬০ মিলিয়ন জনগণের মধ্যে মাত্র ৮ মিলিয়ন ইংরেজি ভাষা জানে ।

রিপোর্ট: মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯০ বছর দাপটের সাথে যুরা( ব্রিটেন যুক্তরাজ্য ) বাংলা শাসন করলেও বর্তমানে ইংরেজি ভাষা , সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিশ্বায়নের যুগে বাংলাদেশে মাত্র ৫% মানুষ ইংরেজি জানে ! তার মানে ১৬০ মিলিয়ন জনগণের মধ্যে মাত্র ৮ মিলিয়ন ইংরেজি ভাষা জানে । এখন এই ৮ মিলিয়ন ইংরেজি জাননে ওয়ালার শতকরা কত জন খুব ভালো ভাবে ইংরেজি ভাষা রপ্ত করে এ ভাষায় কথা বলতে , লিখতে ও পড়তে পারেন ? নিশ্চয়ই এ ধরনের ইংরেজি জানা মানুষের সংখ্যা আরো অনেক কম হবে । কারণ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া অনেকেই ভালো ইংরেজি বলতে ও লিখতে পারেন না। আর বলার চাইতেও খুব ভালো ও পূর্ণাঙ্গ ভাবে ইংরেজি ভাষা বুঝে শুদ্ধ ও নির্ভুলভাবে লেখা বিশেষ করে প্রবন্ধ ও রচনা লেখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এমনকি ভাষায় কথা বলার চেয়েও । কারণ যে কোনো ভাষায় কথা বলার যোগ্যতা অর্জনের জন্য ঐ ভাষার পরিবেশের একান্ত প্রয়োজন যেটা অল্প কিছু সংখ্যক ব্যতীত বাংলাদেশে অধিকাংশের জন্য সম্ভব নয় । তবে ভাষা শেখার আধুনিক কার্যকর পদ্ধতি আছে যা দিয়ে ইংরেজি কেন যে কোনো ভাষা অল্প সময়ের মধ্যে ভালো ভাবে শেখা ও আয়ত্ত করা সম্ভব । অথচ বাংলাদেশে অবৈজ্ঞানিক অকার্যকর ও ত্রুটিপূর্ণ পদ্ধতিতে ক্লাস ওয়ান থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত ইংরেজি ভাষা শিখিয়েও তা একদম ফলপ্রসূ হয় নি। (ইংরেজি ভাষা)

আরেকটা মজার ব্যাপার হচ্ছে যে সাবেক ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক নাইজেরিয়া ও বহু আফ্রিকীয় দেশে ইংরেজি ভাষা লিঙ্গুয়া ফ্রাংকা হওয়া ছাড়াও ঐ সব দেশের জনগণের প্রায় মাতৃভাষায় পরিণত হয়েছে এমনভাবে যে পথে ঘাটে হাট - বাজারের স্বল্প শিক্ষিত ও অশিক্ষিত লোকেরা এমনকি অজ পাড়া গাঁয়ের অধিবাসীরাও ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইংরেজি ভাষাভাষীদের মতো কথ্য ইংরেজি বলতে সক্ষম । আর এমন অনর্গল ইংরেজি এমনকি বাংলাদেশের ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য পড়ুয়াদের অনেকেই বলতে পারে না ! নাইজেরিয়া সহ ঐ সব আফ্রিকীয় দেশে ইংরেজি ভাষা এক রকম মাতৃভাষায় পরিণত হওয়া সত্ত্বেও ঐ সব দেশ আমাদের দেশের ( জনসংখ্যার মাত্র ৫% ইংরেজি জানা ) চাইতে বহু গুণ পিছিয়ে , অনুন্নত ও অনগ্রসর। ইংরেজি ভাষা জ্ঞান এমনকি তা মাতৃভাষায় পরিণত হওয়া সত্ত্বেও কেন ঐ সব দেশ শিল্প , কৃষি , জ্ঞান - বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে চোখ ধাঁধানো উন্নতি করতে পারে নি ? আমাদের দেশে তথাকথিত ইংরেজি প্রেমিকরা বলে যে ইংরেজি ছাড়া আমরা নাকি চলতে এবং জীবনযাপন ও উন্নতি করতে পারব না অর্থাৎ বাঁচাতেই পারব না ।

কিন্তু ঐ সব গণ্ড মুর্খ ইংরেজি প্রেমিকদের লক্ষ্য করে বলতে হয় যে বাংলাদেশের ৯৫% মানুষ ইংরেজি না জেনেই ইংরেজি ভাষী নাইজেরিয়া ও আফ্রিকীয় দেশগুলোর চাইতে অনেক উন্নত ও বহু গুণ এগিয়ে। এর কারণ কী ? নিছক ইংরেজি প্রেমে মজে ও অন্ধ হয়ে গিয়ে বাংলাদেশের জনগণের ওপর বিদ্যালয়ের একদম প্রথম শ্রেণী থেকেই বাংলা ভাষার পাশাপাশি শুধু ইংরেজি ভাষা বাধ্যতামূলক ভাবে চাপিয়ে দিয়ে ফল হয়েছে একদম বিরূপ এবং এ ভাষা শিক্ষা কার্যক্রম একদম ব্যর্থই হয়ে গেছে এবং এ দেশের ছাত্রছাত্রীদের শত শত কোটি বরং হাজার হাজার কোটি শিক্ষা ঘন্টা বৃথা ও ফালতু ব্যয় হয়েছে ( পণ্ডশ্রম )। এর হিসাব ও জবাবদিহি কে দেবে ? এ সব ইংরেজি প্রেমিকদের কাছে জগতে শুধু একটাই ভাষা আছে এবং তা হল ইংরেজি ! এ ধরনের অবাস্তব অবৈজ্ঞানিক এক পেশী দৃষ্টি ভঙ্গি পোষণের কারণে আমাদের দেশের জনগণের সার্বিক ভাষা জ্ঞানের চূড়ান্ত অবনতি হয়ে গেছে এবং আমাদের জনগণ মাতৃভাষা বাংলার পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় দক্ষ হতে পারে নি। আর " দেশের জনগণের ইংরেজি ভাষা জ্ঞান না থাকলে তারা উন্নয়ন , প্রগতি ও উন্নতির মুখ দেখবে না । " - এ কথার অসারত্বও দিব্য স্পষ্ট হয়ে যায় । পূর্ণাঙ্গ ইংরেজি ভাষা জ্ঞান নিয়ে নাইজেরিয়া ও সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ বহু আফ্রিকীয় দেশ কেন উন্নত হয় নি বরং বাংলাদেশের চেয়েও ও সব ইংরেজি ভাষী আফ্রিকীয় দেশ বহু গুণ পিছিয়ে ও অনুন্নত রয়েই গেছে । আর এই সমীক্ষা ও প্রতিবেদন থেকে প্রমাণিত হয় যে ইংরেজি ভাষার তেমন কোন কদর নেই আমাদের দেশের ৯৫% সাধারণ মানুষের কাছে । অতএব, ইংরেজি ভাষার প্রতি এক অতি মুষ্টিমেয় লোকের অন্ধ মোহ ও প্রেম থেকে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বের করে এনে জনগণকে মাতৃভাষা এবং ইংরেজি সহ বিশ্বের অন্যান্য প্রধান প্রধান ভাষা শিক্ষা দেয়ার সঠিক কার্যকর ব্যবহারিক ফলপ্রসূ ভাষা শিক্ষা কার্যক্রম, কর্মসূচি ও সিলেবাস প্রণয়ন করা উচিত ও একান্ত প্রয়োজনীয়। একটি মাত্র বিদেশী ভাষার আধিপত্যাধীন থাকা দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণকর নয় । আর দু:খজনক হলেও সত্য যে, ইংরেজি ভাষা জ্ঞানকে শিক্ষিত হওয়ার প্রতীক ও মানদণ্ড ধরা হয় । আর কেউ ইংরেজি ভাষায় দুর্বল হলে ব্যস তাকে অশিক্ষিত - মুর্খ বা কম শিক্ষিত বলে গণ্য করার মারাত্মক ভুল প্রবণতাও অনেকের মাঝে লক্ষ্য করা যায় । আর ইংরেজি ভাষা জ্ঞানকে যদি শিক্ষিত অশিক্ষিত হওয়ার মানদণ্ড ধরা হয় তাহলে নাইজেরিয়া ও ইংরেজি ভাষাভাষী অন্যান্য আফ্রিকীয় দেশের রাস্তা - ঘাট , হাট - বাজার ও অজ পাড়া গাঁয়ের গণ্ড মুর্খ লোকদেরকে নিছক ইংরেজি ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারার জন্য আমাদের দেশের অনেক উচ্চ শিক্ষিত অথচ ইংরেজিতে দুর্বল ব্যক্তির চেয়ে অধিক শিক্ষিত বলতে হবে।

ইংরেজ প্রীতি ও ইংরেজির দাসত্বের মানসিকতা থেকে বের হতে পারলে এমনকি ইংরেজি ভাষা সহ বিশ্বের প্রধান প্রধান ভাষায়ও তখন পাণ্ডিত্য হাসিল করা সম্ভব হবে।

আমাদের জাতীয় স্বার্থের প্রয়োজনেই বিশ্বের প্রধান প্রধান প্রভাবশালী ভাষা শিক্ষা একান্ত জরুরী।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .