হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, পবিত্র কুরআন ও মহানবী- মুহাম্মাদ (সা.)'র বাণী এবং মহানবীর পবিত্র আহলে বাইতের (আ.) সদস্যদের বর্ণনা অনুযায়ী আকল্ বা বুদ্ধিমত্তা আল্লাহর দাসত্বের ও সৌভাগ্যের মাধ্যম।
আমাদের মনে কখনও হয়ত এ প্রশ্ন উদয় হয়েছে যে বুদ্ধিমান ব্যক্তির বৈশিষ্ট্য কি কি? আধুনিক যুগে বুদ্ধিমান বা বুদ্ধিমত্তার অধিকারী হওয়া বলতে বোঝায় শিক্ষাগত সাফল্য, ক্ষমতা অর্জন ও বিপুল সম্পদ অর্জন ইত্যাদি। এসব বৈশিষ্ট্যের অবশ্যই গুরুত্ব রয়েছে, কিন্তু এসবের ওপর অতি বেশি গুরুত্ব আরোপ করা, বিশেষ করে নৈতিকতা ও মানবতার চেয়েও এসবের প্রতি বেশি গুরুত্ব আরোপ করা কিংবা এসব বিষয় অর্জনের জন্য নৈতিকতার সীমারেখা লঙ্ঘন করা ও অন্যদের কুরবানি করা মোটেই পছন্দনীয় নয়।
ইসলামী চিন্তাধারার আলোকে আকল্ বা বুদ্ধিমত্তা হচ্ছে এমন এক বিষয় যা মানুষকে মন্দ থেকে দূরে সরিয়ে রাখে এবং মানুষকে সব কল্যাণ ও মঙ্গলময় বিষয়ের দিকে আহ্বান করে। বুদ্ধিবৃত্তিক পূর্ণতার লক্ষণগুলো স্পষ্ট হতে পারে এভাবে: যে যত বেশি কল্যাণ ও ভালো দিকগুলোর অভিমুখে অগ্রসর হবে সে ততই মন্দ ও অকল্যাণগুলো থেকে দূরে থাকবে।
মহানবীর (সা.) আহলে বাইতের ধারার অষ্টম নক্ষত্র হযরত ইমাম রেজা (আ.)-এর মতে বুদ্ধিবৃত্তির পূর্ণতা রয়েছে দশটি বিষয় বা দিকের মধ্যে। তিনি বলেছেন, মুসলমান ব্যক্তির বুদ্ধিবৃত্তি এই দশটি বিষয় বা দিক ছাড়া পূর্ণ হয় না:
১. তিনি মানুষের জন্য ভালো ও কল্যাণকর কাজ করবেন বলে আশা করবে সবাই।
২. অন্যরা তার অন্যায় বা মন্দ কাজ হতে নিরাপদ থাকবে।
৩. তিনি অন্যদের সামান্য কল্যাণ বা উপকারকে অনেক বড় বলে গণ্য করবেন ও এ জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেন ।
৪. নিজের অনেক বেশি ভালো কাজকে ক্ষুদ্র বলে বিবেচনা করবেন এবং তিনি হবেন বিনম্র ও অমায়িক এবং নিরহংকারী।
৫. তাঁর কাছে যতই চাওয়া হোক তিনি দানে কার্পণ্য করেন না অর্থাৎ অত্যন্ত উদার দানশীল।
৬. সমগ্র জীবনেও তিনি কখনও জ্ঞান অনুসন্ধানে ক্লান্ত হন না তথা সব সময়ই জ্ঞান-পিয়াসী।
৭. আল্লাহর পথে দুর্নীতিযুক্ত-সক্ষমতা বা স্বচ্ছলতার চেয়েও দারিদ্র হবে তাঁর কাছে বেশি পছন্দনীয়।
৮. আল্লাহর শত্রুর সঙ্গী হয়ে সম্মান পাওয়ার চেয়ে তাঁর কাছে আল্লাহর পথে থেকে অসম্মানিত হওয়া বেশি প্রিয় বিষয়।
৯. খ্যাতির চেয়েও অজ্ঞাত-অখ্যাত থাকা তিনি বেশি পছন্দ করন। অন্য কথায় খ্যাতির মোহ তার মধ্যে থাকবে না এবং
১০. তিনি যে কোনো ব্যক্তিকে নিজের চেয়ে উত্তম ও ধার্মিক বলে মনে করবেন ও তা বলবেন।
[তুহফাউল উকুল,১৬১ পৃষ্ঠা)
প্রকৃত বুদ্ধিমান ব্যক্তি এভাবেই নিজেকে বেহেশত ও চূড়ান্ত সাফল্যের দিকে এগিয়ে নেন বুদ্ধিমত্তাকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে।
[সংগৃহীত ও পরিমার্জিত]