۸ آذر ۱۴۰۳ |۲۶ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 28, 2024
রাসেল আহমেদ রিজভী

তাওহিদ বা একাত্ববাদ অন্তরে প্রতিষ্ঠিত করা, অন্তরকে শিরকমুক্ত রাখা, পূর্ণাঙ্গভাবে এক আল্লাহর দাসত্ব করা এবং প্রতিটি বিষয়ে শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.) এর দেখানো পথের অনুসন্ধান ও পূর্ণ অনুসরণ করাই আত্মশুদ্ধি।

হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী: ঈমানের উৎকর্ষতায় আত্মিক ও আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধির অর্জনের গুরুত্ব ও উপায়! সম্পর্কে জনাব রাসেল আহমেদ রিজভী হাওজা নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন: পর্ব ২- তাওহিদ বা একাত্ববাদ অন্তরে প্রতিষ্ঠিত করা, অন্তরকে শিরকমুক্ত রাখা, পূর্ণাঙ্গভাবে এক আল্লাহর দাসত্ব করা এবং প্রতিটি বিষয়ে শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.) এর দেখানো পথের অনুসন্ধান ও পূর্ণ অনুসরণ করাই আত্মশুদ্ধি।

আত্মশুদ্ধির বিষয়টি দুইভাবে ব্যাখ্যা করা যায়! যথাঃ-

ক. বর্জনীয়ঃ যাবতীয় পাপ, অন্যায় ও অপবিত্র কাজ থেকে মুক্ত হওয়া অর্থাৎ যাবতীয় অসৎগুণ বর্জন করা। অসৎগুণ হলো শিরক, রিয়া, অহংকার, আত্মকেন্দ্রিকতা, স্বার্থপরতা, হিংসা, ঘৃণা, কৃপণতা, ক্রোধ, গিবত, কুধারণা, দুনিয়ার প্রতি মোহ, আখেরাতের ওপর দুনিয়াকে প্রাধান্য দেওয়া, জীবনের প্রতি অসচেতনতা, অর্থহীন কাজ করা, অনধিকার চর্চা প্রভৃতি।

খ. করণীয়ঃ উত্তম গুণ দ্বারা আত্মার উন্নতি সাধন করা অর্থাৎ প্রশংসনীয় গুণ অর্জনের মাধ্যমে পরিত্যাগকৃত অসৎগুণের শূন্যস্থান পূরণ করা। সৎগুণ হলো তাওহিদ, ইখলাস, ধৈর্যশীলতা, তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর প্রতি নির্ভরতা, তওবা, শোকর বা কৃতজ্ঞতা, আল্লাহভীতি, আশাবাদিতা, লজ্জাশীলতা, বিনয়-নম্রতা, মানুষের সঙ্গে উত্তম আচরণ প্রদর্শন, পরস্পরকে শ্রদ্ধা ও স্নেহ, মানুষের প্রতি দয়া, ভালোবাসা ও সহানুভূতি প্রদর্শন, ন্যায়ের আদেশ ও অন্যায়ের নিষেধ, পরোপকার প্রভৃতি।

আত্মশুদ্ধি অর্জনের উপায়ঃ

আত্মশুদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে নিম্নোক্ত কার্যক্রমগুলো গ্রহণ করা জরুরি-

১. হালাল-হারাম সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞান অর্জন করা। জীবনের সর্বক্ষেত্রে হালাল-হারাম বাছাই করে চলার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করতে হবে। আত্মাকে সর্বোতভাবে পরিশুদ্ধ রাখার জন্য যা অত্যাবশ্যক।

২. আত্মাকে বিভিন্ন উত্তম চরিত্র দ্বারা পরিমার্জন ও পরিশোধন করা। নিয়মিতভাবে সৎগুণ অনুশীলনে তা সহজাত অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়।

৩. ফরজ ইবাদতগুলো নিয়মিত আদায় করা। কেননা ফরজ ইবাদত আল্লাহর আনুগত্যের সর্বোত্তম বহিঃপ্রকাশ। যার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর সর্বাধিক নিকটবর্তী হয়।

 ৪. পবিত্র কোরআন পাঠ করা ও তাতে চিন্তা-গবেষণায় নিজেকে নিয়োজিত করা। কোরআন পাঠ অন্তরের কালিমা দূর করে দেয়।

৫. সৎসঙ্গ নিশ্চিত করা। সৎস্বভাববিশিষ্ট ব্যক্তির সংসর্গে থাকলে অজ্ঞাতসারেই তার সৎগুণ নিজের অন্তরে প্রবেশ করে।

৬. আল্লাহর প্রতি আনুগত্য প্রকাশের প্রথম পদক্ষেপ হলো তওবা করা। তওবার মাধ্যমেই মানুষ পাপ বর্জন করে পুণ্য অর্জনের তৃপ্তি অনুভব করতে পারে।

৭. প্রবৃত্তির কঠোর বিরুদ্ধাচরণ করা ও অসৎচিন্তাকে কোনোভাবেই প্রশ্রয় না দেওয়া। আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে ক্রমাগতভাবে প্রবৃত্তির বিরুদ্ধাচরণ করতে হয়। কেননা প্রবৃত্তি মানুষকে শিথিলতা ও অবাধ্যতায় প্ররোচিত করে।

৮. আমলকে রিয়া (লোক প্রদর্শনী) থেকে বিরত রাখা। লোক দেখানোর জন্য অথবা অন্যের কাছে প্রশংসা পাওয়া, দোষারোপ থেকে রেহাই পাওয়া, সম্মান-প্রতিপত্তি অর্জন, ক্ষমতা লাভ করা ইত্যাদি দুনিয়াবি উদ্দেশ্যে কৃত আমল আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এসব কাজ মানুষকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিখাদচিত্ত হওয়া (ইখলাস) থেকে চরমভাবে বাধাগ্রস্ত করে।

৯. ধৈর্য ও দৃঢ় বিশ্বাসের গুণ দ্বারা সুশোভিত হওয়া। প্রবৃত্তির ওপর বিজয় লাভ করা, হারাম কাজ থেকে বিরত থাকা ও আল্লাহর আনুগত্যে অটল থাকার জন্য ধৈর্য অবলম্বন অপরিহার্য। আর আত্মপ্রত্যয় ও দৃঢ় বিশ্বাস মানুষকে পথভ্রষ্টতা থেকে পরিত্রাণ দেয় এবং প্রশান্তি ও স্থিরতা দান করে।

১০. তবে এসব কার্যক্রমকে সুচারুরূপে সম্পাদনের জন্য প্রয়োজন একজন অভিজ্ঞ আত্মশুদ্ধ মানুষের সহায়তা নেওয়া।

মহানুভব আল্লাহতালা আমাদের বাহ্যিক ও আত্মিক পবিত্র পবিত্রতা অর্জনের তওফিক দানের মাধ্যমে সিরাতুল মুস্তাকিমের দিকে ধাপিত করুক। আমিন। সমাপ্ত

تبصرہ ارسال

You are replying to: .