۳۱ اردیبهشت ۱۴۰۳ |۱۲ ذیقعدهٔ ۱۴۴۵ | May 20, 2024
ফিলিস্তিনিদের ঘর-বাড়ি ভেঙে দিয়ে পার্ক বানাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল
ফিলিস্তিনিদের ঘর-বাড়ি ভেঙে দিয়ে পার্ক বানাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল

হাওজা / ফিলিস্তিনের সিলওয়ান গ্রামে ফিলিস্তিনিদের ঘর-বাড়ি ভেঙে সেখানে তাদের কল্পিত রাজ-রাজাদের পার্ক বানাতে যাচ্ছে!

হাওজা নিউজ এজেন্সি বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, পর্ব ৩- দখল করে নেওয়ার পর ইসরায়েল তিন ধাপে ফিলিস্তিনিদের বাড়ি-ঘর দখল করে নেয়।

১. ১৯৯২ সালের পূর্বে ফিলিস্তিনিদের বাড়িতে তাদের অনুপস্থিত দেখিয়ে মূলত তাদের বের করে দিয়ে 'Absentee Properly Law' এর আওতায় আওতায় ঘরবাড়ি দখল করে নেয়।

২. ১৯৯২ সালের পর, অত্যাচার, জুলুম ও প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে ইসরায়েলি ফিলিস্তিনিদের বাড়ি-ঘর নামে মাত্র মূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য করেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা জমি বিক্রয় দলিলে সিলওয়ান অধিবাসীদের জোরপূর্বক সাক্ষর করায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির সাক্ষর নকল করেছে। পরবর্তী সময়ে ইসরায়েলিরা এসব অবৈধ কাগজপত্র নিজেদের আদালতের মাধ্যমে বৈধ করিয়েছে এবং সেই আদালতের আদেশেই এখন সে বাড়ি-ঘর ভেঙে দেয়া হচ্ছে।

৩. ১৯৯০ সালের পর ফিলিস্তিনের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ও পুরাতাত্ত্বিক বিভিন্ন স্থান ও প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের দখলে নিয়ে নাম পরিবর্তন করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আতারেত কোহানিম ও এলাদ।

এর ধারাবাহিকতায় ইসরায়েল বছরের পর বছর ধরে ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি, জমি দখল করে যাচ্ছে। কিন্তু গত কয়েক বছরে আরবদের সাথে কথিত শান্তিচুক্তি কিংবা সম্পর্ক করার পরপরই ইসরায়েল পূ্র্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে অধিক দখলদারিত্ব, ভাঙচূর ও হামলা-ধরপাকড় শুরু করেছে। শেখ জাররাহর পর সিলওয়ান গ্রামে দখলদারিত্ব ও ভাঙচূর শুরুর পর ফুঁসে উঠে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধকামী জনগণ।

ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভে দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি দখলদারিত্ব ও আগ্রাসন বিরোধী মিছিলে গুলি ও টিয়ারশেল ছোড়ে সৈন্যরা। এতে সাড়ের তিনশ’র বেশি বেসামরিক ফিলিস্তিনি আহত হন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার জুমার নামাজের পর পশ্চিম তীরের বেইতা শহরে মিছিলে বের করেন ফিলিস্তিনিরা। এদিন অনেকেই আন্দোলনে যোগ দেয়। তারা গাড়ির টায়ারে আগুন ধরিয়ে ইসরায়েল বিরোধী স্লোগান দেয়।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ইসরায়েলি বাহিনীর বাঁধার মুখে তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে বিক্ষুপ্ত কয়েকজন ফিলিস্তিনি। এ সময় বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ইসরায়েলি বাহিনী। একপর্যায়ে ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও তাজা গুলি চালায়। উভয়পক্ষের পাল্টাপাল্টি সংঘাতে সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

ফিলিস্তিনের রেড ক্রিসেন্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৩৭৯ ফিলিস্তিনি আহত হন। এদের মধ্যে ৩১ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। একইদিন কাফার কাদ্দুম এবং বেইত দাজানেও ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের তথ্যমতে, দখলকৃত পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম আনুমানিক ৬ লাখ ৫০ হাজার অবৈধ ইহুদি বসতি গড়েছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে, দখলকৃত অঞ্চলে ইহুদি বসতি সম্পূর্ণ অবৈধ।

এই অবৈধ জবরদখল, হত্যাকান্ডের পরও বছরের পর বছর ধরে চুপ করে দেখে যাচ্ছে সমগ্র বিশ্ব। মুসলিম দেশ ও মুসলিম দেশের নেতারা দু'য়েকটা পিঠ বাঁচানো হুমকিমূলক বক্তব্য দিলেও এখনো পর্যন্ত কার্যত ফিলিস্তিনের পক্ষে কোনো পদক্ষেপই নেয়নি।

মুসলিম দেশগুলোর নিরবতায় তাবৎ বিশ্ব সমর্থিত দখলদার ও সন্ত্রাসী ইহুদীবাদী ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে নিজেদের বসতভিটা বাঁচাতে ফিলিস্তিনিরা হয়ত এভাবেই আমৃত্যু লড়ে যাবে।

লেখাঃ রাসেল আহমেদ রিজভী

تبصرہ ارسال

You are replying to: .