হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রথম পর্ব :
আজ ১৩ জুমাদাল ঊলা নবী দুহিতা জগৎসমূহের নারীদের নেত্রী হযরত ফাতিমা যাহরার ( আ ) শাহাদাত বার্ষিকী। এদিন ( ১১ হিজরী ) হযরত রাসূলুল্লাহর ( সা ) ওফাতের মাত্র ৭৫ দিন মাতান্তরে ৯৫ দিন পরে ( ৩ জুমাদাস সানিয়া ) মাত্র ১৮ বছর বয়সে এ নশ্বর পৃথিবী ছেড়ে চলে যান এবং তিনি আহলুল বাইতের (আ) প্রথম ব্যক্তি হিসেবে মহানবীর ( সাঃ ) সাথে মিলিত হন যার খবর ( তথ্য ও সংবাদ ) মহানবী (সা) ওফাতের আগে তাঁকে দিয়েছিলেন। হযরত খাতূনে জান্নাত বেহেশতের নারীদের নেত্রী , সর্বশ্রেষ্ঠা পবিত্রা নারী , সিদ্দীকা - ই কুবরা ( সর্বশ্রেষ্ঠা পরম সত্যবাদিনী ) হযরত ফাতিমা যহরার ( আ ) শাহাদাত দিবসে সবাইকে জানাই আন্তরিক শোক ও তাসলিয়ত ।
আমরা হযরত ফাতিমার ( আ ) ফাযায়েলের কিছু হাদীস নীচে উল্লেখ করছি :
ঈমানের তাজাল্লী ( বহিঃপ্রকাশ ) :
হযরত রাসূলুল্লাহ ( সা ) বলেন :
১. মহান আল্লাহ আমার মেয়ে ফাতিমার অন্তঃকরণ ও হৃদয় ও অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সমূহ সহ তাঁর আত্মা পর্যন্ত ( তাঁর গোটা অস্তিত্বকে ) ঈমান দিয়ে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন আর এ কারণেই সে সর্বদা মহান আল্লাহর ইবাদত ও উপাসনায় লিপ্ত রয়েছে।
قال رسول الله ص: إن ابنتی فاطمة ملأ قلبها و جوارحها إیمانا إلی مشاشها ، فتفرغت لطاعة الله.
দ্রঃ দালায়িলুল ইমামাহ , পৃ : ১৩৯ , হাদীস নং ৪৭
২.রাবী বলেন : " আমি ইমাম আবু আব্দুল্লাহ ( আ )কে জিজ্ঞেস করলাম : কেন হযরত ফাতিমাকে যাহরা উপাধি তে ভূষিত করা হয়েছে ? "
তখন তিনি বললেন : কারণ , যখন তিনি তাঁর ইবাদত করার স্থানে ( মিহরাব - ই ইবাদত ) দণ্ডায়মান হতেন তখন যেমন ভাবে গ্রহ তারকারাজির নূর ( আলো ও দ্যুতি ) পৃথিবীবাসীদেরকে আলোকোদ্ভাসিত করে ঠিক তেমনি তাঁর ( আ ) নূর (আলো ও দ্যুতি ) আকাশবাসীদেরকেও আলোকোজ্জ্বল করে ।
দ্রঃ ইলালুশ হারায়ে ' , খ : ১ , পৃ : ২১৫
৩. হাসান বসরী থেকে বর্ণিত :
এই উম্মতের মধ্যে হযরত ফাতিমার ( আ ) চেয়ে অধিক ইবাদত কারী আর কেউ নেই। তিনি এতটা নামাযে দণ্ডায়মান থাকতেন যে এর ফলে তাঁর দু পা ফুলে যেত ।
মানাকিব , খ : ৩ , পৃ : ৩৪১
৪. হযরত আলী বলেন :
কদরের রাতে ফাতিমা তাঁর বাড়ীর লোকজনদের কাউকে ঘুমাতে দিতেন না । তাদেরকে কম খাবার খেতে দিতেন ( যাতে ঐ রাতে বেশি খেয়ে ঘুমিয়ে না পড়ে) এবং কদরের রাতের খাবার দিনের বেলায় তৈরি করে রাখতেন ( যাতে কদরের রাতে খাবার তৈরি করতে গিয়ে অযথা যেন কদরের রাতের ইবাদত বন্দেগীর সময় নষ্ট না হয় ) এবং তিনি বলতেন : সেই হচ্ছে প্রকৃত বঞ্চিত ( মাহরূম ) যে সেই রাতের ( কদরের রাতের ) কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয় ।
( দ্রঃ দাআইমুল ইসলাম , খ : ১ , পৃ : ২৮২ )
৫. হযরত মূসা ইবনে জাফার বলেন :
যখন ফাতিমা ( মহান আল্লাহর কাছে) দুআ ও মুনাজাত করতেন তখন তিনি সকল মুমিন নর - নারীর জন্য দুআ করতেন অথচ নিজের জন্য দুআ করতেন না ।
অতঃপর তাঁকে বলা হল : " হে রাসূলুল্লার দুহিতা ! আপনি মানুষের জন্য দুআ করেন। অথচ নিজের জন্য দুআ করেন না। " তখন তিনি বললেন : ( প্রথমে ) প্রতিবেশী তারপর গৃহবাসী ( الجار ثم الدار )
( দ্রঃ ইলালুশ শারায়ে' খ : ১ , পৃ : ২১৬ )
৬. হযরত ফাতিমা (:আ ) বলেন : আমি মহানবীকে ( সা ) বলতে শুনেছি : শুক্রবারে এমন এক সময় বা মুহূর্ত আছে যখন ঐ সময়ে কোন মুসলিম ব্যক্তি মহান আল্লাহর কাছে কোনো কল্যাণ চাইবা মাত্র তাকে তিনি তা প্রদান করবেনই । আর ( প্রার্থনা কবুলের ) ঐ সময় বা মুহূর্তটা হচ্ছে তখন যখন সূর্যের অর্ধাংশ ডুবে যায় ( এবং বাকি অর্ধাংশ আদিক চক্রবাল রেখার ওপরে থাকে ) । ....
আর ফাতিমা ( আ) তার চাকর বা খেদমতগারকে বলতেন : উঁচু জায়গায় যাও এবং যখন তুমি দেখতে পাবে যে সূর্যের অর্ধাংশ ডুবে গেছে ( এবং বাকী অর্ধাংশ আদিক চক্রবাল রেখার ওপরে রয়েছে ) তখন আমাকে জানাবে যাতে আমি দুআ করতে পারি ।
দ্রঃ মা'আনিল আখবার : ৩৯৯
চলবে…
অনুবাদ : মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান