۱۸ آذر ۱۴۰۳ |۶ جمادی‌الثانی ۱۴۴۶ | Dec 8, 2024
ব
আয়াতুল্লাহ আরাফী ও সৈয়দ আফতাব হুসাইন নাকাভী

হাওজা / ইরানে সফররত বাংলাদেশের শিয়া উলামা কাউন্সিলের বিশিষ্ট আলেম-উলামাদের সঙ্গে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে ইরানের হাওজায়ে ইলমিয়ার প্রধান আয়াতুল্লাহ আ’রাফি বলেন, মুসলিম দেশগুলোর উচিত দখলদার জায়নবাদী সরকারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা!

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরানের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রধান আয়াতুল্লাহ আরাফী, ইরানের কোম শহরে, বাংলাদেশ থেকে আগত একদল আলেমের সাথে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে, বিভিন্ন চিন্তা ও আদর্শের অধিকারী হওয়া, বিভিন্ন মাযহাবের অধিকারী হওয়া এবং আরো অন্যান্য কারণে মুসলিম বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী রাষ্ট্র বলে মনে করি। এই দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ মর্যাদাগত অবস্থান সমুন্নত রাখা উচিত এবং মুসলিম বিশ্ব যেন বাংলাদেশের এই ভৌগলিক অবস্থান ও সম্ভাবনাময় সম্পদ থেকে উপকৃত হয়।

ইরানের হাওজায়ে ইলমিয়ের প্রধান আরো বলেছেন, আত্ম গঠনের জন্য পরিকল্পনা, নফসের পরিশুদ্ধিতা অর্জন, নৈতিক চরিত্র গঠন এবং সর্বদা আত্মিকভাবে পাক-পবিত্রতা বজায় রেখে উত্তম ও পছন্দনীয় কাজ করা- এগুলি হলো একজন শিয়া আলেমের প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য, যা যুব সমাজকে ধর্মের প্রতি আকর্ষণ করা এবং তাদের নৈতিক উন্নতি ও অগ্রগতি অর্জনের ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে।

তিনি আরো বলেছেন, শিয়া আলেমদের জন্য এটা খুবই জরুরী যে, তারা নিজেদের নৈতিক চরিত্র সমুন্নত রাখবে, আত্মিকভাবে পরিশুদ্ধিতা লাভ করবে এবং তাদের আচার-আচরণ ও কর্মকান্ডকে নৈতিক চরিত্রের সাথে সমন্বয় করবে।

মুসলিম রাষ্ট্রগুলির দাবি এবং বাংলাদেশের উন্নতি-অগ্রগতি:

আয়াতুল্লাহ আরাফি বলেছেন, জ্ঞানগত উৎকর্ষতা সাধন করা, সাংস্কৃতিক, শিল্প ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে অগ্রগতি লাভ করা, সামাজিক নেটওয়ার্ক তৈরি করা, বিশ্বস্ত ও অঙ্গীকারবদ্ধ জনবল তৈরি করা, শত্রুদের বিপক্ষে মুসলিম সমাজের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি করা, কোনো ধরনের ধর্মীয় ও আকীদাগত বিভেদ ও বিদ্বেষ সৃষ্টি না করে ইসলামের সমৃদ্ধ ধনভাণ্ডারকে কাজে লাগানো, ইসরায়েলের সাথে মুসলিম রাষ্ট্রগুলির সম্পর্ক ছিন্ন করা, শক্তিশালী মুসলিম রাষ্ট্রগুলির সহযোগিতায় নিজেদের ঈমান এবং জ্ঞান ও প্রযুক্তিগত স্বনির্ভরতার উপর জোর দেয়া, আঞ্চলিক মুসলিম দেশগুলির সাথে সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে জ্ঞানগত আধ্যাত্মিক ও প্রযুক্তিগত সম্পদ ও সম্ভাবনার প্রতি বিশেষভাবে দৃষ্টি দেয়া এবং এই বিষয়গুলির উন্নতি ও অগ্রগতি সাধনের প্রতি লক্ষ্য রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর একই সাথে অন্যান্য মুসলিম দেশের উপর এই জ্ঞানের প্রতিফলন ঘটানো এবং জ্ঞানগত ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে কোমের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে সংযোগ ও যোগাযোগ রক্ষা করার বিষয়টি শিয়া সমাজের জন্য এবং বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত জরুরী।

মুসলিম রাষ্ট্রগুলিকে দমন করার জন্যই দখলদার জায়নবাদী সরকারের সৃষ্টি হয়েছে:

ইরানের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের সর্বোচ্চ পরিষদের সদস্য বলেছেন, দখলদার জায়নবাদী ইসরায়েল সরকারের সৃষ্টি হয়েছে মুসলিম রাষ্ট্রগুলিকে দমিয়ে রাখা এবং তাদের উন্নতি ও অগ্রগতি ঠেকিয়ে রাখার জন্য। আর এটি হলো মুসলমানদের বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিভিন্ন শত্রুতার মধ্যে অন্যতম একটি নমুনা। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে মুসলিম বিশ্বে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, তা দখলদার ইসরায়েল সরকারের ক্ষমতা এবং শত্রুদের কারণে নয়; বরং মুসলিম রাষ্ট্রসমূহের সর্বোচ্চ নেতাদের গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।

জায়নবাদী সরকারের সাথে মুসলিম রাষ্ট্রগুলির সম্পর্ক ছিন্ন করার অপরিহার্যতা:

আয়াতুল্লাহ আরাফী আরো বলেছেন, মুসলিম দেশগুলির কাছে রয়েছে জ্ঞানগত ভিত্তি, শিল্পচর্চা, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা এবং প্রাকৃতিক সম্পদের বিশাল ভান্ডার; কিন্তু মুসলমানদের এবং ইসলামী রাষ্ট্রগুলির মধ্যে ঐক্য ও সম্প্রীতি না থাকার কারণে এই শক্তি ও সামর্থ্য তাদের দুর্বলতায় পরিণত হয়েছে। আর শত্রুরা খুব সহজেই তাদের এই শক্তি-সামর্থকে কাজে লাগিয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে অপব্যবহার করছে।

ইরানের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রধান আরও বলেছেন, মুসলিম রাষ্ট্রগুলি যদি দখলদার ও খুনী ইসরায়েল সরকারের সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং তাদের সমস্ত শক্তি ও সম্পদ অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রের কাছে অর্পণ করে, তাহলে এটি দখলদার জায়নবাদী সরকারের অপমান, অপদস্থতা ও তাদের ধ্বংসের কারণ হিসেবে পরিগণিত হবে।

তিনি তার কথার শেষাংশে বলেছেন, মানব জাতি হলো সৃষ্টিগতভাবে অভাবী ও মুখাপেক্ষী। তিনি বলেন, এই পৃথিবীতে মানুষের মর্যাদা যত বেশি উচ্চ পর্যায়ে যাবে, তাদের প্রয়োজন ও চাহিদাও তত বৃদ্ধি পাবে। আর আল্লাহর বন্দেগী তথা দাসত্ব করা মাধ্যমেই মানুষের প্রকৃত উন্নতি ও অগ্রগতি সাধিত হয়।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .