হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, গুপ্তচরবৃত্তি, নাশকতা এবং প্রতিপক্ষের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটিয়ে শত্রুপক্ষকে ব্যতিব্যস্ত রেখে আক্রমণ করার ঘৃণ্য কাজটি ইহুদিবাদী দখলদার ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠীর যুদ্ধ নীতির মধ্যে অন্যতম ঘৃণ্য হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। যার সর্বশেষ প্রমান আমরা দেখতে পাই লেবাননে পেজার বিষ্ফোরণ কিংবা ওয়াকিটকির সিস্টেম হ্যাক করার মাধ্যমে তা বিষ্ফোরণ করার ঘটনাতে।
অতীত ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষন করলে দেখা যায়, ভিন্ন সার্বভৌমত্বে ইহুদি অনুপ্রবেশ ও গুপ্তচরবৃত্তি অনস্বীকার্য অংশগ্রহন এটা প্রমাণ করে যে, নাশকতা ও নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটনার মাধ্যমে শত্রুদের নির্মূল ও হত্যা করার এই রেওয়াজ যায়নবাদী এই শাসনের একটি প্রাচীন ঐতিহ্য।
দখলদার ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠী সর্বদা অন্যের সার্বভৌমত্বে অনুপ্রবেশ ও গুপ্তচরবৃত্তি করে তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিঘ্নিত করে আসছিল; কিন্তু গাযা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তাদের এই ঘৃণ্য অপকর্ম ও কূটকৌশল খোদ তাদের জন্যই হিতেবিপরীত হতে শুরু করেছে।
ইহুদিবাদী অবৈধ ইসরায়েল সরকার বর্তমানে নিজেদের চারপাশে গুপ্তচর ও অনুপ্রবেশকারীদের তৎপরতায় কঠিন নিরাপত্তা সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে। খোদ বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে অত্যন্ত গোপনীয় তথ্য ফাঁস হয়েছে। সম্প্রতি নেতানিয়াহুর মুখপাত্র ও অফিস সহকারীদের অনেককেই গুপ্তচরবৃত্তি ও তথ্য ফাঁসের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তথ্য ফাঁস ও তীব্র মতদ্বন্ধের জের ধরে ইহুদিবাদী অবৈধ সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওভ গ্যালান্টকে পদচ্যুত করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই পদচ্যুত প্রতিরক্ষামন্ত্রীর অনুসারী ও সহযোগীরা বিদ্রোহ শুরু করেছে। কেউ কেউ ইহুদিবাদী বাহিনীর মধ্যে ইওভ গ্যালান্টের অনুসারী ও শুভাকাঙ্ক্ষী কর্তৃক সামরিক বিদ্রোহের আশংকাও করছেন।
অনেক সামরিক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন যে, এই তথ্য ফাঁসের কারনে গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলিরা ব্যাপক গনহত্যা চালালেও তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। কয়েকদিন পর পরই অবৈধ শাসকগোষ্ঠী নিজেদের নিরাপত্তার সাথে একান্তভাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের গুপ্তচর হিসেবে উপস্থাপন করতে বাধ্য হচ্ছে।
এই গুপ্তচরদের অধিকাংশই ইহুদি এবং অর্থের বিনিময়ে তারা গুপ্তচরবৃত্তি তথ্য ফাঁসের মত স্পর্শকাতর কাজে জড়িয়েছে। এটি ইসরায়েলি নিরাপত্তা এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলির জন্য নজিরবিহীন ও অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কারণ তারা খুব ভালো করেই জানে যে গুপ্তচরবৃত্তি ও অনুপ্রবেশের ফলে তারা কী ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন পারে! বিশেষ করে যেহেতু এই গুপ্তচরদের চক্র এতটাই সংঘবদ্ধ হয়েছে যে এটি নেতানিয়াহুর অফিস ও সহযোগীদের মধ্যে পৌঁছে গেছে।
পরিকল্পনা ও তথ্য ফাঁস, প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে মতদ্বন্ধ ও তাকে পদচ্যুত করা, গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে নেতানিয়াহুর মুখপাত্র ও অফিস সহকারীদের গ্রেফতার, সেনাদের যুদ্ধে যেতে অস্বীকৃতি, সরকার বিরোধী চলমান বিক্ষোভ... অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এই শাসকগোষ্ঠী নিজেদের পাতা ফাঁদেই নিজেরা আটকে যাচ্ছে।
রিপোর্ট: রাসেল আহমেদ রিজভী