হাওজা নিউজ এজেন্সি বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, পর্ব ৩- হযরত ইবরাহিম চতুর্দিকে দেখতে লাগলেন, হঠাৎ আসমানের দিকে চাইলেন ও দেখতে পেলেন “জবেহ আজিম”। (মিনাতে হজরত ইব্রাহিম (আঃ) কুরাবানী করতে গিয়েছিলেন। আল্লাহ তায়ালা তার কুরাবনির পরিবর্তে মিশাল কুরবানী “জবেহ আজিম” হচ্ছে কারবালায় ইমাম হোসাইন (আঃ) এর কুরবানী তারই বংশে দান করলেন)।
হযরত ইবরাহিম আবার কাঁদতে কাঁদতে বেহুশ হয়ে গেলেন ছবতে রসুল, নোয়াছায়ে রসুল জামে শাহাদত পান করলেন। রোজ কিয়ামতে আল্লাহ পাক তাঁর প্রতিদান দেবেন।
অতঃপর মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁকে ওহীর মাধ্যমে জিজ্ঞাসা করলেন, 'হে ইব্রাহীম, তোমার নিকট আমার সৃষ্টির সবচেয়ে প্রিয় জিনিস কি?'
তিঁনি বললেন, 'হে আমার পরোয়ারদেগার তোমার সৃষ্টির মধ্যে তোমার দোস্ত- মুহাম্মাদ হলো আমার নিকট সবচেয়ে প্রিয়।'
আল্লাহ তায়ালা পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, 'হে ইব্রাহীম, সে সবচেয়ে প্রিয় নাকি তুমি নিজে?'
তিনি বললেন, 'তিনিই সবচেয়ে প্রিয়।'
আল্লাহ তায়ালা আবার জিজ্ঞাসা করলেন, 'তার সন্তান তোমার জন্য সবচেয়ে প্রিয় নাকি তোমার সন্তান?'
তিনি উত্তর বললেন, 'তাঁর সন্তান।'
আবার জিজ্ঞাসা করলেন, 'তাঁর সন্তান দুশমনের হাতে অন্যায় ও নির্যাতনের মাধ্যমে কুরবানি হলে তুমি বেশী ব্যথিত হবে নাকি তোমার সন্তান তোমার হাতে আমার আনুগত্য প্রকাশ করতে গিয়ে কুরবানি হলে বেশি ব্যথিত হবে?'
তিঁনি উত্তরে বললেন, 'দুশমনের হাতে তাঁর সন্তান কুরবানী হওয়াটা আমাকে বেশী ব্যথিত করবে।'
আল্লাহ তায়ালা বললেন, 'হে ইব্রাহীম, উম্মতে মুহাম্মাদের কিছু লোক মুহাম্মাদের সন্তান হোসাইনকে তাঁর ওফাতের পর জুলুম ও নির্যাতনের মাধ্যমে জবাই (হত্যা) করবে যেমনি ভাবে ভেড়া হত্যা করা হয়, এর জন্য তারা আমার ক্রোধের শিকার হবে।'
হযরত ইবরাহিম (আঃ) এ কথা শুনে নিশ্চুপ, নিথর হয়ে গেলেন, মনোকষ্টে তাঁর চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল।
আল্লাহ তায়ালা আবারো তাঁর কাছে ওহীর মাধ্যমে বললেন, 'হে ইব্রাহীম, তোমার সন্তানকে নিজ হাতে জবেহ করতে না পারার সেই শোকটা হোসেইনের হত্যার শোকের সাথে পবির্তন করে দেব এবং মসিবতের ক্ষেত্রে সবরের দরুন সর্বোচ্চ সওয়াব তোমাকে প্রদান করবো।' আর এ কারণেই আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘অফাদানাহু বিযিবহে আজীম’ অথাৎ 'আমি তার পরিবর্তে মহান যবেহ কবুল করলাম।' …চলবে…
লেখা: রাসেল আহমেদ রিজভী