۶ آذر ۱۴۰۳ |۲۴ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 26, 2024
নূর হোসাইন মাজিদী
নূর হোসাইন মাজিদী

হাওজা / মুসলমানদের মধ্যে এ মর্মে একটি বিশ্বাস প্রচলিত আছে যে, মুসলমান যতোই গুনাহ্ করুক চিরদিন জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে না, বরং যে কেউই একবার কালেমায়ে তাইয়্যেবাহ্ পাঠ করেছে সে গুনাহগার হলে সাময়িকভাবে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করার পর শেষ পর্যন্ত জান্নাতে যাবে।

হাওজা নিউজ এজেন্সির রিপোর্ট অনুযায়ী, সাধারণভাবে মুসলমানদের মধ্যে এ মর্মে একটি বিশ্বাস প্রচলিত আছে যে, মুসলমান যতোই গুনাহ্ করুক চিরদিন জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করবে না, বরং যে কেউই একবার কালেমায়ে তাইয়্যেবাহ্ পাঠ করেছে সে গুনাহগার হলে সাময়িকভাবে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করার পর শেষ পর্যন্ত জান্নাতে যাবে। এ মর্মে হাদীছও বর্ণনা করা হয় এবং কোরআন মজীদ নিয়ে তাদাব্বুর্ করেন না এমন গতানুগতিক ধরনের আলেমদেরকে এ-ও বলতে শোনা যায় যে, কারো অন্তঃকরণে যাররাহ্ (অণু) পরিমাণ ঈমান থাকলেও সে শেষ পর্যন্ত জান্নাতে যাবে।

এটা ভিত্তিহীন অন্ধ বিশ্বাস মাত্র এবং সংশ্লিষ্ট হাদীস নিঃসন্দেহে জাল- যার সপক্ষে কোনোই অকাট্য দলীল নেই, বরং এ ধরনের বিশ্বাস কোরআন মজীদের বক্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক। কারণ, কোরআন মজীদের দৃষ্টিতে যথাযথ আমল (‘আমালে ছালেহ্) বিহীন ঈমানের ঘোষণার কোনোই মূল্য নেই। ইয়াহূদীরাও এ ধরনের ভিত্তিহীন বিশ্বাস পোষণ করে, কিন্তু আল্লাহ্ তা‘আলা তাদের সে বিশ্বাসকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এরশাদ হয়েছে:

وَقَالُوا لَنْ تَمَسَّنَا النَّارُ إِلا أَيَّامًا مَعْدُودَةً. قُلْ أَتَّخَذْتُمْ عِنْدَ اللَّهِ عَهْدًا فَلَنْ يُخْلِفَ اللَّهُ عَهْدَهُ أَمْ تَقُولُونَ عَلَى اللَّهِ مَا لا تَعْلَمُونَ. بَلَى مَنْ كَسَبَ سَيِّئَةً وَأَحَاطَتْ بِهِ خَطِيئَتُهُ فَأُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ. وَالَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أُولَئِكَ أَصْحَابُ الْجَنَّةِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ.

“তারা বলে, 'অগ্নি আমাদেরকে কখনোই স্পর্শ করবে না মাত্র কয়েক দিনের জন্য ব্যতীত।” (হে রাসূল! তাদেরকে) বলুন: “তোমরা কি আল্লাহর নিকট থেকে কোনো অঙ্গীকার গ্রহণ করেছো, আর যেহেতু আল্লাহ্ কখনোই তাঁর অঙ্গীকার ভঙ্গ করেন না? নাকি তোমরা আল্লাহ্ সম্পর্কে এমন কথা বলছো যা তোমাদের জানা নেই?” হ্যা, যে ব্যক্তি মন্দ অর্জন করেছে এবং তার গুনাহ্ তাকে ঘিরে ফেলেছে এমন লোকেরা হবে দোযখের অধিবাসী এবং সেখানে তারা চিরদিন থাকবে। আর যারা ঈমান এনেছে ও যথাযথ কর্ম সম্পাদন করেছে তারা হবে জান্নাতের অধিবাসী এবং তারা সেখানে চিরদিন থাকবে।” (সূরাহ্ আল্-বাক্বারাহ্: ৮০-৮২)

কোরআন মজীদে অতীতের লোকদের সম্পর্কে উল্লেখের উদ্দেশ্য নিঃসন্দেহে এই যে, কোরআন মজীদের পাঠকরা তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করবে। সুতরাং ইয়াহূদীদের যে ভিত্তিহীন বিশ্বাস আল্লাহ্ তা‘আলা প্রত্যাখ্যান করেছেন মুসলমানরা একই বিশ্বাস পোষণ করলে তা-ও নিঃসন্দেহে প্রত্যাখ্যাত।

এ ধরনের অন্ধ বিশ্বাস পোষণকারীরা অনেক সময় কোরআন মজীদের আয়াত থেকে ভুল অর্থ গ্রহণ করে তাদের ভ্রান্ত বিশ্বাসের সপক্ষে ব্যবহার করে। যেমন, এরশাদ হয়েছে:

إِنَّ اللَّهَ لا يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ

“নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ তাঁর সাথে শিরক্ করাকে ক্ষমা করবেন না এবং এতদ্ব্যতীত যা তা তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন।” (সূরাহ্ আন্-নিসা: ৪৮)

কিন্তু এখানে তো আল্লাহ্ তা‘আলা সকল মুসলমানের সকল গুনাহ্ ক্ষমা করার প্রতিশ্রুতি দেননি, বরং যার যে গুনাহ্ ইচ্ছা ক্ষমা করবেন এটাই বলেছেন। নিঃসন্দেহে তিনি সে ক্ষেত্রে দেখবেন যে, ব্যক্তি কী ধরনের গুনাহ্ করেছিলো এবং তা কী অবস্থায় করেছিলো।

তারা কোরআন মজীদের নিম্নোক্ত আয়াত থেকেও ভুল অর্থ গ্রহণ করে তাদের ভ্রান্ত বিশ্বাসের সপক্ষে ব্যবহার করে যাতে এরশাদ হয়েছে:

قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ.

“(হে রাসূল!) বলুন: (আল্লাহ্ বলছেন,) হে আমার বান্দাহরা যারা স্বীয় সত্তার অপচয় করেছো! আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না; আল্লাহ্ অবশ্যই তোমাদের সকল যাম্ব্ (ذنب- ভুলত্রুটি ও ছোটখাট গুনাহ্) ক্ষমা করে দেবেন; অবশ্যই তিনি ক্ষমাশীল পরম দয়াবান।” (সূরাহ্ আয্-যুমার্: ৫৩)

তারা এ আয়াতের ذنوب শব্দের (যা ذنب শব্দের বহুবচন) অর্থ করে ‘গুনাহ্’। অর্থাৎ, তাদের মতে, আল্লাহ্ তা‘আলা সব গুনাহ্ ক্ষমা করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তারা বলে, কেউ যদি পাহাড় পরিমাণ গুনাহ্ করেও তাওবাহ্ করে এবং আল্লাহ্ তা‘আলার কাছে ক্ষমা চায় তো আল্লাহ্ তা‘আলা তা ক্ষমা করে দেবেন। বস্তুতঃ অনেক লোকেরই বেপরোয়াভাবে গুনাহ্ করার পিছনে এ ভ্রান্ত বিশ্বাসই দায়ী। প্রকৃত ব্যাপার যদি এমনই হতো তাহলে আল্লাহ্ তা‘আলার দ্বীন অর্থহীন হয়ে যেতো।

এদের দ্বারা কোরআন মজীদের আয়াত থেকে এ ধরনের ভুল অর্থ গ্রহণের কারণ কোরআন মজীদের আয়াত থেকে অর্থ গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ছাড়াই এ কাজে হাত দেয়া।

আরবীসহ যে কোনো ভাষায়ই এমন অনেক শব্দ আছে যেগুলোর একেকটি শব্দের একাধিক আভিধানিক ও পারিভাষিক তাৎপর্য আছে। কোরআন মজীদের আয়াত থেকে সঠিক তাৎপর্য গ্রহণের জন্য এর শব্দাবলীর আভিধানিক ও পারিভাষিক তাৎপর্যসমূহের সাথে পরিচিত থাকা অপরিহার্য। তাছাড়া একই বিষয়ে ‘আাম্ (সাধারণ) বক্তব্য ও খাছ (বিশেষ) বক্তব্য সম্পর্কে ধারণা সহ আরো অনেক বিষয়ে ধারণা থাকা অপরিহার্য। নচেৎ কোরআন মজীদের অনেক আয়াতের তাৎপর্য পরস্পরবিরোধী বলে মনে হবে, অথচ আল্লাহ্ তা‘আলা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছেন যে, কোরআন মজীদে কোনো স্ববিরোধিতা নেই! (সূরাহ্ আন্-নিসা’: ৮২)।

‘গুনাহ্’ (گناه) একটি ফার্সী শব্দ যাকে বাংলা ‘পাপ’ শব্দের সমার্থক গণ্য করা হয়। তারা উপরোদ্ধৃত আয়াতে বহুবচনে ব্যবহৃত ذنب শব্দের অর্থ করেছে ‘গুনাহ্’, অথচ গুনাহ্ একটি ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ যাতে আল্লাহ্ তা‘আলার অপছন্দনীয় ও তাঁর প্রতি নাফরমানীমূলক ছোট-বড় যে কোনো কাজকেই বুঝানো হয় যে জন্য কোরআন মজীদে বিভিন্ন শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। এ জন্য কোরআন মজীদে ব্যবহৃত শব্দাবলীর মধ্যে আছে- ذنب, اسراف (علی نفس), ظلم (علی نفس), ظلم (علی غير), خطاء, منکر, فجور, اثم, جُرم, فسق, فساد, عدوان, عصيان, طغيان, بغاوة, کفر, شرک ইত্যাদি। এ সব পরিভাষার মধ্যে কতোগুলো এমন যে, একেটির একাধিক অর্থ আছে। এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা অত্র প্রবন্ধের সংক্ষিপ্ত পরিসরে সম্ভব নয়। তবে ذنب বলতে কখনো কখনো দোষত্রুটি ও ছোটখাট গুনাহ্ বুঝানো হয় (যেমন : উপরোদ্ধৃত সূরাহ্ আয্-যুমার্-এর ৫৩ নং আয়াতে) এবং কখনো কখনো পাপাচার বুঝানো হয়। অন্যত্র ذنب বলতে এমন পাপাচার বুঝানো হয়েছে যা আল্লাহ্ তা‘আলার আযাব নাযিলের কারণ; এরশাদ হয়েছে :

فَأَهْلَكْنَاهُمْ بِذُنُوبِهِمْ

“অতঃপর তাদের পাপাচারের কারণে তাদেরকে ধ্বংস করে দিলাম। ” (সূরাহ্ আল্-আন্‘আাম্: ৬)

সূরাহ্ আয্-যুমার্-এর উপরোদ্ধৃত ৫৩ নং আয়াতে اسراف علی نفس (স্বীয় সত্তার অপচয়) বলতে এমন গুনাহ্ বুঝানো হয়েছে যাতে বান্দাহর নিজের ক্ষতি হয়, কিন্তু অন্য বান্দাহদের ক্ষতি হয় না। প্রায় একই অর্থে অন্যত্র ظلم علی نفس (স্বীয় সত্তার প্রতি অন্যায়) ব্যবহৃত হয়েছে, যেমন: নিষিদ্ধ গাছ থেকে ভক্ষণ করার পর হযরত আদম (‘আঃ)-এর স্বীকারোক্তিতে। خطاء মানে ভুল, দোষ ও পাপ। তেমনি کفر মানে যেমন আল্লাহ্ তা‘আলাকে অস্বীকার, তেমনি এর অর্থ অকৃতজ্ঞতা। আল্লাহ্ তা‘আলার নাফরমানী বুঝাতে ব্যবহৃত অন্যান্য পরিভাষার মধ্যে ظلم علی غير (অন্যের ওপর যুলুম), فجور (উচ্ছৃঙ্খলা), اثم (পাপাচার), فسق (ফাসেক্বী), فساد (বিপর্যয়-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি), عدوان (সীমালঙ্ঘন) এবং عصيان, طغيان ও بغاوة (আল্লাহ্ তা‘আলার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ বা ঔদ্ধত্য সহকারে নাফরমানীর বিভিন্ন স্তর) গুরুতর পর্যায়ের। আর এগুলোর সবই منکر (গুনাহ্) ও جُرم (অপরাধ)।

অনেক ক্ষেত্রে কোনো বিষয়ে কোরআন মজীদের একটি আয়াতে ‘আাম্ (সাধারণ)ভাবে বলা হয়েছে এবং অন্য একটি আয়াতে খাছ (বিশেষভাবে) বলা হয়েছে; এ ধরনের বিষয়ে উভয় আয়াতের সমন্বিত তাৎপর্য গ্রহণ করতে হবে। আল্লাহ্ তা‘আলা চাইলে কারো শিরক্ ব্যতীত যে কোনো গুনাহ্ ক্ষমা করবেন এটা ‘আাম্ বক্তব্য, কিন্তু বিভিন্ন আয়াতের সমন্বিত তাৎপর্যের ভিত্তিতে এ বিষয়ে ইজমা‘এ উম্মাহ্ প্রতিষ্ঠিত আছে যে, আল্লাহ্ তা‘আলা স্বেচ্ছায় বান্দাহর হক্ব বিনষ্টকরণজনিত গুনাহ্ ক্ষমা করবেন না। উদাহরণস্বরূপ, এরশাদ হয়েছে:

وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيهَا وَغَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيمًا

“যে কেউ কোনো মু’মিনকে স্বেচ্ছায় হত্যা করলো তার প্রতিদান জাহান্নাম, যেখানে সে চিরদিন থাকবে; আল্লাহ্ তার ওপর ক্রুদ্ধ হয়েছেন ও তার ওপর লা‘নত্ করেছেন এবং তার জন্য বিরাট শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।” (সূরাহ্ আন্-নিসা’: ৯৩)

বস্তুতঃ একজন ঈমানদার মানুষ মানবিক দুর্বলতার কারণে গুনাহ্ করে বসতে পারে এবং গুনাহ্ সংঘটিত হয়ে গেলে এরপর সে অবশ্যই অনুতপ্ত হবে, তাওবাহ্ করবে ও আল্লাহ্ তা‘আলার কাছে ক্ষমা চাইবে। কিন্তু যে ব্যক্তি মানবিক দুর্বলতার কারণে গুনাহ্ করে না, বরং ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে গুনাহ্ করে, বা গুনাহ্ করার ব্যাপারে ধৃষ্টতার পরিচয় দেয়, বা গুনাহর পুনরাবৃত্তি করে চলে, আল্লাহ্ তা‘আলা এ ধরনের ব্যক্তির অপরাধ ক্ষমা করে দেবেন এমনটা কোনোভাবেই আশা করা যায় না। এ ধরনের ব্যক্তিদের অপরাধ ক্ষমা করা হলে দ্বীন অর্থহীন হয়ে যায়।

আর গুনাহগার মুসলমানদেরকে একটি মেয়াদের জন্য জাহান্নামের শাস্তি দেয়ার পরে জান্নাতে পাঠানো হবে- এরূপ ধারণা কোরআন মজীদের সুস্পষ্ট ঘোষণার পুরোপুরি বিরোধী। কারণ, পরকালীন জান্নাত ও জাহান্নাম কোনো সাময়িক আবাসস্থল নয়, বরং অনন্তকালীন আবাসস্থল। জান্নাত ও জাহান্নামের অধিবাসীদের সম্পর্কে বার বার বলা হয়েছে: خالدين فيها - “তারা সেখানে অনন্তকাল থাকবে।” আর অনন্তকালীন বাসস্থানে এক বার কেউ প্রবেশ করলে সেখান থেকে তাকে বের করে আনা ঐ বাসস্থানের অনন্তকালীন বৈশিষ্ট্যের বরখেলাফ।

কোরআন মজীদের বিভিন্ন আয়াতের সমন্বয় থেকে যে তাৎপর্য নিষ্পন্ন হয় তা হচ্ছে, হাশরের সমাবেশ থেকে একদল লোককে আমলনামা হাতে দিয়ে সরাসরি জান্নাতে পাঠিয়ে দেয়া হবে ও একদল লোককে আমলনামা হাতে দিয়ে সরাসরি জাহান্নামে পাঠিয়ে দেয়া হবে, একদল লোকের ছোটখাট গুনাহ্ ক্ষমা করে তাদেরকে জান্নাতে পাঠানো হবে, একদল লোকের বড় ধরনের নেক আমলের কারণে শাফা‘আতের ভিত্তিতে তাদের বড় গুনাহ্ ক্ষমা করে তাদেরকে জান্নাতে পাঠানো হবে, একদল লোকের গুরুতর ধরনের গুনাহর কারণে তাদের নেক আমল সমূহ বরবাদ হওয়ার কথা জানিয়ে দিয়ে তাদেরকে জাহান্নামে পাঠানো হবে। এছাড়া আল্লা‎হ্ তা‘আলার ক্ষমা ও করুণার ব্যাপারে আশাবাদী একদল মিশ্রিত আমলের অধিকারী লোককে জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যবর্তী আ‘রাফে (উঁচু স্থানে) রাখা হবে এবং তারা জান্নাতী ও জাহান্নামীদের অবস্থা দেখে অনবরত আশা ও আতঙ্কের মধ্যে থাকবে। আর যেহেতু তাদেরকে জাহান্নামে পাঠানো হবে না সেহেতু শেষ পর্যন্ত তাদেরকে ক্ষমা করে জান্নাতে পাঠানো হবে বলে আশা করা যায়।

বস্তুতঃ ভিত্তিহীন আশার কারণে আল্লাহ্ তা‘আলার নাফরমানী করা হবে নির্বুদ্ধিতার পরিচায়ক। তাই

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا آمِنُوا

“হে ঈমানদারগণ (ঈমানের ঘোষণা প্রদানকারীগণ)! (ঘোষণা অনুযায়ী আমল করার মাধ্যমে কার্যতঃ) ঈমান আনো।” (সূরাহ্ আন্-নিসা: ১৩৬)

কারণ,

وَلا تُجْزَوْنَ إِلا مَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ.

“তোমরা যা কিছু করছো তজ্জন্য ব্যতীত কোনো প্রতিদানপ্রাপ্ত হবে না।” (সূরাহ্ ইয়া-সীন্: ৫৪)

লেখাঃ নূর হোসাইন মাজিদী

تبصرہ ارسال

You are replying to: .