۸ آذر ۱۴۰۳ |۲۶ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 28, 2024
সালমান ফারসী (রাঃ)
সালমান ফারসী (রাঃ)

হাওজা / ‘রাসুল (সাঃ)-এর প্রিয় সাহাবী হযরত সালমান ফারসী (রাঃ) এর পনের বছর বয়স থেকে শুরু হয় সত্য ধর্ম অনুসন্ধান প্রক্রিয়া।

হাওজা নিউজ বাংলা এজেন্সির রিপোর্ট অনুযায়ী, সত্য সন্ধানের জন্য যে কজন মনীষী পৃথিবীতে অমর এবং উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত নিয়ে আজো মানুষের অন্তরকে আন্দোলিত করেন, চিন্তাশক্তিকে ভিন্নমাত্রায় নিয়ে যান, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন হযরত সালমান ফারসী (রাঃ)।

পনের বছর বয়স থেকে শুরু হয় তার সত্য ধর্ম অনুসন্ধান প্রক্রিয়া। তখন তার নাম ছিল মাহবা। পারস্যের অন্তর্গত ইস্পাহান এলাকাভুক্ত রামহরমুজ অঞ্চলের অধিবাসী ছিলেন তিনি। বাবা ছিলেন সেখানকার বড় জমিদার। তিনি ছিলেন অগ্নিপূজারী এবং খুবই ধর্মভীরু। একজন পদস্থ এবং সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি হওয়া সত্ত্বেও তিনি কোনদিন ধর্মের একটি সাধারণ কাজেও অবহেলা করতেন না।

তার ধর্মানুরাগের জন্যও লোকে তাকে শ্রদ্ধা করতো। বাবার একমাত্র পুত্র সন্তান হওয়ায় মাহবাকে তার স্থলাভিষিক্ত করার সব শিক্ষা তিনি দিয়েছিলেন। ছেলেকে কখনো কাছছাড়া করতেন না। একদিন বিশেষ কারণবশতঃ মাহবাকে তার বাবা খামার দেখবার জন্য পাঠালেন। পথিমধ্যে তিনি খ্রীষ্টানদের একটি উপাসনালয় থেকে কিছু পড়ার শব্দ শুনতে পেয়ে সেখানে ঢুকে দেখলেন তারা নামাজ পড়ছে। এর আগে তিনি কখনো বাইরে আসবার এবং লোকদের দেখবার সুযোগ পাননি। তাদের নামাজ পড়া, বিনম্র ব্যবহার, রীতি-নীতি এবং প্রাণখোলা ব্যবহার তার খুবই ভাল লাগলো। তিনি বাবার আদেশ ভুলে সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান করলেন এবং ভাবলেন, তাদের ইবাদতখানায় অন্য মযহাবের লোক প্রবেশ করলে ইবাদতখানা অপবিত্র হয়ে যাবে এবং অগ্নি দেবতার অভিশাপে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু এখানে সব মানুষের প্রবেশাধিকার রয়েছে। এই নীতিই তো মহান ও শ্রেষ্ঠ। যদি কেউ ধর্ম চর্চা করে পরকালের শান্তির আশা করে, তবে এই ধর্মই শান্তির ধর্ম।

তিনি খ্রীস্টানদের ধর্মমত গ্রহণ করতে চাইলে পাদ্রী বললেন, তাকে জেরুজালেম যেতে হবে। কেননা এখানকার রাজ আদেশ মতে কোন অগ্নি উপাসককে খ্রীষ্ট ধর্মে দীক্ষিত করা বেআইনী এবং দণ্ডনীয়। এই আদেশ অমান্যকারীকে এখানে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়ে থাকে। মাহবা সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরে এলে বাবা বিলম্বের কারণ জিজ্ঞাসা করলেন। মিথ্যে বলার অভ্যাস তার ছিল না। তাই তিনি বাবাকে সব খুলে বললেন। বাবা প্রথমে বোঝালেন। পরে পায়ে শিকল দিয়ে একটি ঘরে আটকে রাখলেন। বাবার এই কঠোর ব্যবস্থায় মাহবার মন বিদ্রোহী হয়ে উঠল। প্রতীজ্ঞা করলেন যে, সত্য সন্ধানে যদি এমন বাধাই আসে তবে তিনি বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন সব ত্যাগ করবেন। বন্ধুদের মাধ্যমে মাহবা পাদ্রীর কাছে সংবাদ পাঠালেন যে, সিরিয়ার কোন যাত্রী কাফেলার খোঁজ পেলে তাকে যেন জানানো হয়। পাদ্রী শিকলকাটা যন্ত্র বন্ধুদের মাধ্যমে মাহবার কাছে পাঠিয়ে দিলেন এবং সিরিয়া যাবার ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দিলেন। যেদিন কাফেলা সিরিয়ার দিকে রওয়ানা হবে সেদিন তিনি পায়ের শিকল কেটে কাফেলার সাথে মিলিত হলেন এবং সিরিয়ায় পৌঁছে গেলেন। সিরিয়ার প্রধান পাদ্রীর কাছে তাদের ধর্ম গ্রহণ এবং তার খেদমতে থেকে ধর্ম শিক্ষার আগ্রহ জানালেন। সে মাহবাকে তার কাছে রেখে দিল। পাদ্রীটি ছিল জঘন্য প্রকৃতির। লোকদের দান-খয়রাতের ওয়াজ শোনাতো। লোকেরা তার কাছে দান-খয়রাত এনে দিলে সে তা গরীব মিসকীনকে না দিয়ে নিজেই সব আত্মসাৎ করতো। সে সাত মটকী সোনা-রূপা লুকিয়ে রেখেছিল। এ অবস্থায় তার মৃত্যু হলে মাহবা উপস্থিত ভক্তদের তার অপকর্ম সম্পর্কে অবহিত করলেন এবং লুকিয়ে রাখা সোনা-রূপা দেখিয়ে দিলেন। এ দুষ্কার্যের জন্য লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে তার লাশ শূলি কাঠে ঝুলিয়ে পাথরের আঘাতে ছিন্ন-ভিন্ন করল।

নতুন পাদ্রী নিয়োগ দেয়া হল। তিনি ছিলেন খুব ভাল লোক; দুনিয়ার লিপ্সাহীন এবং আখেরাতের প্রতি আকৃষ্ট। তার সাথে মাহবার সম্পর্ক খুব ভাল ছিল। তার মৃত্যুর সময় মাহবা জিজ্ঞাসা করলেন যে, তাকে কি আদেশ করেন এবং তিনি এখন কার আশ্রয়ে থাকবেন। পাদ্রী বললেন, ‘বর্তমানে খাঁটি ধর্ম কোথাও নেই, সকলেই বিকৃত করে ফেলেছে। ইরাকের ‘মোসেল’ এলাকায় একজন খাঁটি খ্রীষ্ট ধর্মীয় পাদ্রী আছেন, তুমি তার কাছে চলে যাও।’ মাহবা বর্ণিত সেই পাদ্রী জিরোমের কাছে গিয়ে সব খুলে বললেন এবং তার কাছে রয়ে গেলেন। জিরোম একজন সত্যিকার আবেদ এবং জাহেদ ছিলেন। কিন্তু তিনি ইল্‌ম সম্বন্ধে উদাসীন ছিলেন। দামেশকে থাকাকালে মাহবা তাওরাত, ইঞ্জিল প্রভৃতি আসমানী কিতাব পাঠ করেছিলেন। তাছাড়া ঈসায়ী সাহিত্যে মাহবা বেশ বুৎপত্তি লাভ করেন। কোন সাধারণ রাহেব তার বাছাইয়ের কষ্টিপাথরে টিকে থাকতে পারতো না। একমাত্র এই একটি কারণেই জিরোমের কাছে তার শান্তি মিলছিল না। শুধু ভাবতে লাগলেন কে তাকে বলে দেবে তার মঞ্জিল কোথায়। একদিন সায়মানা নামে এক ব্যক্তির সাথে তার দেখা হয়। তিনি মানভী শাখার এক পাদ্রী। তিনি মাহবার কাছে তার মযহাব সম্বন্ধে বক্তৃতা করলেন। তিনি আন্তরিকতার সাথে তার মযহাবের আদর্শসমূহ শিক্ষা করতে শুরু করলেন। কেননা তার কাছেই ছিল সত্যের অনুসন্ধান করা। এ সময় জিরোম মারা গেলেন। তার মৃত্যুর আগে মাহবা জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনার পরে আমি কার কাছে দীক্ষা গ্রহণ করব?’ তিনি মাহবাকে ইরাকেরই ‘নসীবীন’ এলাকার এক পাদ্রীর খোঁজ দিলেন। তিনি সেখানে উপস্থিত হয়ে সেই পাদ্রীর কাছে থাকলেন। তার মৃত্যুকালে মাহবাকে তিনি ‘আমুরিয়া’ নামক স্থানের এক পাদ্রীর খোঁজ দিলেন। সেখানে উপস্থিত হয়ে মাহবা সেই পাদ্রীর কাছে থাকলেন। এখানে তিনি সঞ্চয়ের দ্বারা কিছু পশুপাল সংগ্রহ করেন।

পাদ্রীর মৃত্যুর সময় কারো খোঁজ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, ‘বর্তমানে আমার কাছে খাঁটি একটি প্রাণীরও খোঁজ নেই, যার কাছে আশ্রয় নেবার পরামর্শ তোমাকে দেব। অবশ্য এক নতুন নবীর আবির্ভাবকাল ঘনিয়ে আসছে, যিনি হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর খাঁটি একেশ্বরবাদী আদর্শ নিয়ে আসবেন। আরবে জন্মগ্রহণ করবেন এবং উভয় পাশে কাঁকরময় জমি আর মধ্যস্থলে খেজুর বাগানের আধিক্য-এমন এক এলাকায় হিজরত করে সেখানে বসবাস করবেন। সে নবীর নিদর্শন এমন হবে যে, তিনি হাদিয়া বা উপঢৌকনস্বরূপ খাদ্য দিলে তা খাবেন কিন্তু সদকা- খয়রাতের ব‘ খাবেন না এবং তার কাঁধে ‘মোহরে নবুয়ত’ থাকবে। যদি তোমার সাধ্যে কুলায় তবে তুমি সে দেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করো।

পাদ্রীর মৃত্যুর পর মাহবা কিছুদিন সেখানে অবস্থান করেন। এখানে আরবের একদল বণিকের সাথে তার সাক্ষাৎ হয়। তিনি তাদেরকে বললেন, তোমরা যদি আমাকে তোমাদের দেশে নিয়ে যাও তবে আমার পশুপাল তোমাদের দিয়ে দেব। এতে তারা রাজি হলো এবং মাহবাকে সঙ্গে নিয়ে আসল। কিন্তু তারা ‘ওয়াদিল ক্কোবা’ নামক স্থানে পৌঁছে অন্যায়ভাবে তাকে ক্রীতদাসরূপে এক ইহুদীর কাছে বিক্রি করে দিল। এরপর তিনি একজন থেকে অপরজনের কাছে বিক্রি হতে থাকলেন।

এমনিভাবে তিনি তের বা ততোধিক মনিবের হাত বদল হন। শেষে মদীনাবাসী এক ইহুদী মাহবাকে ক্রয় করলে তিনি মদীনায় পৌঁছেন। এলাকা দেখে তার দৃঢ় বিশ্বাস জন্মে যে, এটাই ঐ স্থান যার কথা পাদ্রী বলেছিলেন। তখনো হযরত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) মক্কা হতে মদীনায় আসেননি। মাহবা অতি যত্নের সাথে তার প্রতীক্ষায় ব্যাকুল থাকতেন। একদিন সে তার মনিবের উপস্থিতিতে খেজুর গাছের উপরে কাজ করছিলেন। হঠাৎ এক লোক এসে তার মনিবকে সংবাদ দিল যে, ক্কোবা মহল্লায় মক্কা হতে একজন লোক এসেছে। সে নিজেকে নবী বলে দাবি করে। মাহবা গাছের ওপর থেকে কথাগুলো শুনতে পান। তার শরীর শিউরে ওঠে। উত্তেজনায় গাছ থেকে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হন। কোন প্রকারে গাছ থেকে নেমে মনিবকে সংবাদটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে সে মাহবাকে ঘুষি মেরে বলল, তুই কাজে থাক। এ সংবাদে তোর দরকার কি? মাহবা বিকালে ক্কোবা মহল্লায় উপস্থিত হয়ে কিছু খাদ্যবস্তু হযরতের সামনে পেশ করলেন। হযরত (সাঃ) সে খাদ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন যে, এগুলো সদকা বা দান। এ কথা শুনে হযরত (সাঃ) তা সঙ্গীদের দিয়ে দিলেন, নিজে খেলেন না। আর একদিন মাহবা কিছু খাবার নিয়ে গেলেন এবং বললেন, ‘আপনি সদকা-খয়রাত গ্রহণ করেন না দেখে আজ আমি এগুলো আপনার হাদিয়াস্বরূপ পেশ করছি। হযরত (সাঃ) সঙ্গীগণসহ তা খেলেন। মাহবা ভাবলেন, দু’টা নিদর্শন ঠিক হল।

এরপর একদিন হযরত (সাঃ) বসেছিলেন। মাহবা তার পিছনে দাঁড়িয়ে পিঠ মোবারক দেখার চেষ্টা করতে লাগলেন। নবীজী তার মনোভাব বুঝতে পেরে কাঁধের কাপড় সরিয়ে ফেললেন। মাহবা তার মোহরে নবুয়ত দেখলেন এবং শ্রদ্ধার সাথে চুম্বন করে কেঁদে ফেললেন। হযরত (সাঃ) তার সম্পর্কে জানতে চাইলে মাহবা তার জীবনের সুদীর্ঘ কাহিনী শোনালেন এবং তখনই ইসলাম গ্রহণ করলেন। মাহবার নাম রাখা হল সালমান। তিনি পারস্যের অধিবাসী বলে সাহাবীরা তাকে ‘সালমান ফারসী’ বলে ডাকেন। যে মহাসত্য সন্ধানে অশেষ দুঃখ, কষ্ট, ঘাত-প্রতিঘাত, দুশ্চিন্তা-দুর্ভাবনা তিনি সহ্য করেছেন, সত্য সন্ধানী অতৃপ্ত আত্মা শত বৎসরেও যার তৃপ্ত হয়নি সেই অতৃপ্ত আত্মা আজ তৃপ্তিতে পরিপূর্ণ। তখন শুধু হ্নদয় ছাপিয়ে একটি শব্দই সমস্ত অস্তিত্ব জুড়ে প্রভুত্ব করে যাচ্ছিল ‘পেয়েছি।’

ক্রীতদাসরূপে ইহুদীর কাছে আবদ্ধ থাকায় স্বাধীনভাবে হযরতের (সাঃ) সাহচর্য লাভ সম্ভব হচ্ছিল না। এমনকি বদর এবং ওহুদ যুদ্ধে তিনি শরিক হতে পারেননি। তাই হযরত (সাঃ) বললেন, আপনি বিনিময় আদায়ের শর্তে মুক্তি লাভের চুক্তি করে নিন।’ সে মতে তার মনিবের সাথে আলাপ করলে সে তার মুক্তির জন্য দুইটি শর্ত আরোপ করল -(১) তিন বা পাঁচশত খেজুর গাছের চারা সঞ্চয় করে তা রোপণ করতে হবে এবং ঐসব গাছে ফল না আসা পর্যন্ত রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। (২) চল্লিশ ‘উকিয়া’ অর্থাৎ ৬ সেরের অধিক পরিমাণ স্বর্ণ প্রদান করতে হবে। এই দুই শর্ত পূর্ণ করলে তিনি মুক্তি লাভ করবেন বলে চুক্তি সম্পাদিত হল। হযরত (সাঃ) সাহাবিগণকে বললেন, খেজুরের চারা দিয়ে তোমরা সবাই সালমানকে সাহায্য কর। সে মতে কেউ পাঁচটা, কেউ দশটা করে খেজুরের চারা তাকে দিলেন। তিন মতান্তরে পাঁচশত খেজুর চারা জমা হলে হযরত (সাঃ) সালমানকে (রাঃ) গাছ রোপণ করার জন্য গর্ত তৈরি করতে বললেন। গর্ত তৈরি হলে হযরত (সাঃ) সেখানে এসে নিজ হাতে গাছগুলো রোপণ করলেন; শুধু একটি গাছ ওমর (রাঃ) রোপণ করলেন। আল্লাহর কুদরতে এক বৎসরেই এই ঐ গাছগুলোতে ফল ধরল। ওমর (রাঃ)-এর লাগানো গাছটিতে এক বৎসরে ফল না ধরায় হযরত (সাঃ) তা উঠিয়ে পুনঃরোপণ করলে ঐ বৎসর তাতে ফল এসে গেল। এভাবে প্রথম শর্ত পূরণ হল।

এদিকে ডিমের আকারে একটি স্বর্ণ চাকা হযরত (সাঃ)-এর হস্তগত হলে তিনি তা সালমানকে (রাঃ) দিয়ে বললেন, ‘এ দিয়ে আপনার মুক্তির শর্ত পূরণ করুন।’ সালমান (রাঃ) এতটুকু স্বর্ণে শর্ত পূরণ হবে কি জানতে চাইলে নবীজী বললেন, ‘আল্লাহ তা’আলা এর দ্বারাই সম্পূর্ণ আদায় করে দেবেন।’ বাস্তবিকই যখন শর্ত আদায়ের জন্য ওজন দেয়া হল তখন তা চল্লিশ উকিয়া পরিমাণ দেখা গেল। এমনিভাবে দুইটি শর্ত পূরণ হল এবং সালমান (রাঃ) আজাদ হয়ে গেলেন। এরপর তিনি জ্ঞানচর্চা, আমল ও বিভিন্ন বিষয়ে অশেষ পারদর্শিতা দেখিয়ে হয়ে উঠেন রাসূলের (সাঃ) প্রিয় একজন। সত্য সাধনার জয়লাভের নিশ্চয়তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিলেন সালমান ফারসী (রাঃ) ।

রাসূল (সাঃ) হযরত সালমান ফারসীকে (রাঃ) এতটাই ভালোবাসতেন যে বলতেনঃ ‘সালমান আমার পরিবারের অন্তর্ভু। ‘ রাসূলে পাক (সাঃ) এর আহলে বায়াত ছিলেন পুতঃপবিত্র ও ক্ষমা প্রাপ্ত। রাসূল পাকের (সাঃ) সরাসরি বংশ না হওয়ার পরেও রাসূল (সাঃ) বলতেনঃ

“সালমান আমার পরিবারের অন্তভূর্ক্ত!”

ইসলাম গ্রহনের পর হযরত সালমান (রাঃ) জীবনের বেশির ভাগ সময় দয়াল নবীর (সাঃ) সংস্পর্শে ছিলেন। এ কারনে তিনি ইলম ও মারফতের জ্ঞানে বিশেষ পারদর্শিতা লাভ করেন।

হয়রত আলী (রাঃ) হযরত সালমান ফারসীর জ্ঞান সম্পর্কে বলতেনঃ ”সালমান ইলম ও হিকমতের ক্ষেত্রে লোকমান হাকিমের সমতূল্য!” অন্য একটি বর্ননা মতে আলী (রাঃ) বলেনঃ ”ইলমে আউয়াল ও ইলমে আখের সহ সকল ইলমের আলিম ছিলেন সালমান!”

অবশ্য তরিকতের অন্যতম মাশায়েখ হযরত ইমাম জাফর সাদেক (রাঃ) বলেনঃ “তিনি লোকমান হাকিম (আঃ) এর চেয়েও বেশি জ্ঞানি ছিলেন!”

হযরত আবু দারদা (রাঃ) বলেনঃ ”যখন দয়াল নবী (সাঃ) ও সালমাল (রাঃ) এক সাথে মিলিত হতেন, তখন দয়াল নবী (সাঃ) অন্য কাউকে খুঁজতেন না!”

হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা বলেনঃ ”রাসূল (সাঃ) যে দিন রাতে সালমানের সাথে নিভৃতে আলোচনা করতে বসতেন, আমরা (রাসুলের স্ত্রীগণ) ধারনা করতাম সালমান হয়তো (আলোচনা দীর্ঘতার কারনে) আজ আমাদের রাতের সান্নিধ্যটুকু কেড়ে নেবে!”

লেখা: রাসেল আহমেদ রিজভী

تبصرہ ارسال

You are replying to: .