۲۹ اردیبهشت ۱۴۰۳ |۱۰ ذیقعدهٔ ۱۴۴۵ | May 18, 2024
ফাতেমা
হযরত আবু বকরের খেলাফতের প্রতি মা ফাতিমার অস্বীকৃতি

হাওজা / হযরত ফাতিমা সালামুল্লাহ আলাইহি তার দুনিয়া ত্যাগের পূর্বমূহুর্ত পর্যন্ত হযরত আবু বকরকে খলিফা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন নি।

হযরত ফাতিমা সালামুল্লাহ আলাইহি তার দুনিয়া ত্যাগের পূর্বমূহুর্ত পর্যন্ত হযরত আবু বকরকে খলিফা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন নি।১

তিনি কি জানতেন না যে নবীজি বলেছেনঃ

مَنْ ماتَ وَلَمْ يَعْرِفْ إمامَ زَمانِهِ ماتَ مَيْتَةً جاهِلِيَّةً

অর্থাৎঃ “যে ব্যাক্তি তার যামানার ইমামকে না চিনে মৃত্যু বরণ করলো সে জাহেলিয়াতের সাথে মৃত্যু বরণ করল।২

নিশ্চয়ই নবী করিম (সা.) এর প্রিয় কন্যা হযরত আবু বকরের খেলাফতের প্রতি অস্বীকৃতি প্রদানের কারণে জাহেলিয়াতের মৃত্যু বরণ করতে পারেন না । কেননা প্রিয়নবী (সা.) তাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেনঃ

فاطمه سیدة نساء العالمین

অর্থাৎঃ “ফাতিমা বিশ্ব নারীদের নেত্রী।”

তিনি আরো বলেছেনঃ

فاطمه سیدة نساء اهل الجنّة

অর্থাৎঃ “ফাতিমা বেহেশতের নারীদের নেত্রী।”৩

তিনি কখনো এমন কাজ করতে পারেন না যাতে তিনি জাহেলী মৃত্যু বরণ করতে পারেন । তাহলে তো নবীজীর কথা মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে যায় । হযরত ফাতিমার ব্যাপারে তিনি বলেছেন,

“ফাতিমা আমার দেহের অংশ, যে ফাতিমাকে কষ্ট দেয় সে আমাকে কষ্ট দেয় ।”৪

যদি হযরত ফাতিমার (সা.আ.) বেহেশতে যাওয়ার ব্যাপারটা নিশ্চিত হয়ে থাকে তাহলে কি হযরত আবু বকরের খেলাফতের অস্বীকার করেও বেহেশতে যাওয়া যায় ? হযরত আবু বকর যদি সত্যিই ইমাম বা খলিফা হয়ে থাকেন তাহলে তো হযরত ফাতিমার (সা.আ.) জন্য ফরজ ছিল ইমামের আনুগত্য করা ।আর ফাতিমার (সা.আ.)বিরোধীতাই প্রমাণ করছে যে, তিনি হযরত আবু বকরকে বৈধ খলিফা হিসেবে মান্য করতেন না । তিনি নিশ্চয় তার যমানার ইমামকে চিনে মৃত্যু বরণ করেছেন । আর এভাবেই তিনি বেহেশতের নারীদের নেত্রী হিসেবে গন্য হবেন । তিনি তো কোন ভুল-ত্রুটি করতে পারেন না । আর খেলাফতের অস্বীকার করার মত ভুল ! মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সূরা আহযাবের ৩৩ নং আয়াতে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন যে তিনি আহলে বাইতকে সব ধরণের অপবিত্রতা বা পাপ –পংকিলতা থেকে মুক্ত রেখেছেন । অতএব এটা পরিস্কার হয়ে যায় যে নবী (সা.) এর ইহলোক ত্যাগের পর তিনি আবু বকর ব্যতীত অন্য কাউকে ইমাম হিসেবে মানতেন । তিনি মসজিদে নববীতে ফাদাক বাগান কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদে হযরত আবু বকরের বিরুদ্ধে আর হযরত আলীর ন্যায্য খেলাফতের স্বপক্ষে যে ঐতিহাসিক বক্তব্য রেখেছেন তা থেকে স্পষ্ট প্রতিয়মান হয় যে তিনি হযরত আলীকেই তার ইমাম বা নেতা হিসেবে মান্য করতেন ।৫

হযরত ফাতিমার ব্যাপারে মহানবী (সা.) আরো বলেছেনঃ

فاطمة مهجة (بهجة) قلبي، وابناها ثمرة فؤادي، وبعلها نور بصري، والأئمّة من ولدها أمناء ربي وحبل الممدود بينه و بين خلقه، من اعتصم بهم نجا ، ومن تخلف عنه هوى.

অর্থাৎঃ-“ফাতিমা আমার হৃদয়ের উল্লাস, তার দু’ ছেলে আমার অন্তরের ফসল এবং তার স্বামী আমার নয়নের জ্যোতি আর তার সন্তানদের মধ্যে থেকে ইমামরা হচ্ছেন আমার রবের আমানত রক্ষাকারী । তারা সৃষ্টিকর্তা ও সৃষ্টিকুলের মাঝে (সমন্বয় সাধনকারী) দীর্ঘ রশ্মি । যে তাদের শক্ত করে আকড়ে ধরলো সে নাযাত পেল আর যে তাদের কাছ থেকে দুরে সরে থাকলো সে ধ্বংস হলো ।”৬

উক্ত হাদীসে নবী করিম (সা.) হযরত ফাতিমা ও তার স্বামী-সন্তানদের গুরুত্ব এবং তাদের অনুসরনের ব্যাপারে স্পষ্ট দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন । হযরত ফাতিমাকে হৃদয়ের উল্লাস বলার কারণ কোন মতেই শুধুমাত্র সন্তান হওয়ার কারণে নয় বরং তিনি ফাতিমার ভিতর এমন সব মহৎ গুনাবলীর সমাবেশ দেখতে পেয়েছিলেন যার কারণে এতসব বিশেষণ উল্লেখ করেছেন । তার স্বামী ও সন্তানদের অনুসরণ নাজাত ও মুক্তি বয়ে আনবে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন । সুতরাং এটা বুঝতে আর বাকী থাকার কথা নয় যে নেতৃত্ব ও নাজাতের প্রশ্নে হযরত ফাতিমাও তার স্বামীকে অনুসরন করতেন তার সম্মানিত পিতার ইন্তেকালের পর । কেননা তাতেই রয়েছে নাজাত ও মুক্তি ।

তথ্যসূত্রঃ

১. মিলাল ওয়ান নিহাল, শাহরেস্তানী, খণ্ড-১ পৃঃ-৭৫৭ । লিসানুল মিযান, খণ্ড-১, পৃ-২৬৭ । আল ইমামাহ ওয়াস সিয়াসাহ, ইবনে কুতাইবা, খণ্ড-১, পৃঃ ৩০-৩৩ ।

২. মুসনাদ তাইয়্যালিসি, পৃঃ-২৫৯, হাদীস নং-১৯১৩ । হিলইয়াত আল আউলিয়া, খণ্ড-৩, পৃঃ-২২৪ । সহি মুসলিম, খণ্ড-৬, পৃঃ-২২, খণ্ড-১২, পৃঃ-২১৪ ।

৩. সহি তিরমিযি, খণ্ড-২, পৃঃ-৩৬০ । উসদুল গাবা, খণ্ড-৫, পৃঃ-৫৭৪ । সহি আল বুখারী, কিতাব বাদয়’আল খালক । তাবাকাত আল কোবরা, খণ্ড-২, পৃঃ-৪০ । মুসনাদ আহমাদ, খণ্ড-৬, পৃঃ-২৮২ ।

৪. ইয়ানাবিউল মাওয়াদদাহ, পৃঃ-২৬০ । আল মুসান্নেফ, খণ্ড-১২, পৃঃ-১২৬, তিনি আইনাহ থেকে ইবনে আইনাহ হযরত ওমর থেকে আবার তিনি মুহাম্মদ বিন আলী থেকৈ বর্ণনা করেছেন যে, রাসুল (সা.) বলেছেনঃ

انّما فاطمة بضعة منی فمن اغضبها اغضبنی

৫. সাক্বিফা ও ফদাক, আবি বাকর আহমাদ বিন আব্দুল আযিয জাওহারী ।

৬. আল মানাক্বিব, যামাখশারী, পৃঃ-২১৩ । দুরারু বাহরিল মানাক্বিব,আশ শেইখ আল হানাফি আল মুসিলি পৃঃ-১১৬ । আল আরবাইন, আল হাফেজ মুহাম্মদ বিন আবি ফাওয়ারিস, পৃঃ-১৪ । ইয়ানাবিউল মাওয়াদদাহ,আশ শেইখ সুলাইমান, পৃঃ-৮২ । মাক্বতাল আল হুসাইন, আল খাওয়ারেযমী, পৃঃ-৫৯ ।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .