হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, রাশিয়ার কাছ থেকে ভারত অস্ত্র কিনতে পারবে না ? অস্ত্র বিক্রেতাও নির্ধারিত হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক । অন্যথা হলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হবে এমনকি ভারতের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু রাষ্ট্রকেও ।
যুক্তরাষ্ট্র বলতে চাচ্ছে : অস্ত্র ক্রয়ের স্বাধীনতা কোনো রাষ্ট্রের নেই । যুক্তরাষ্ট্র নির্ধারণ করে দেবে কে কার কাছ থেকে কী পরিমাণ অস্ত্র কখন খরিদ ও ক্রয় করবে কখন খরিদ করতে পারবে না এমনকি প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও । তাহলে দেশ ও রাষ্ট্রসমূহের স্বাধীনতা থাকবে ? পাশ্চাত্য বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্যতীত পৃথিবীর আর কোনো রাষ্ট্র স্বাধীন সার্বভৌম নয় ! পাশ্চাত্য বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
এখনো বিশ্বকে তাদের উপনিবেশ মনে করছে ও ভাবছে । এখনো বিশ্বের সকল অঞ্চল ও দেশ অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতকের ঔপনিবেশিক শাসন কবলিত । ঐ দুই শতকে যেমন ইউরোপ পুরো বিশ্বকে নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছিল ঠিক তেমনই ভাবছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার তাঁবেদার পশ্চিম ইউরোপ বা ন্যাটো ইউরোপ । এরা ( পশ্চিমারা ) নিজেদের বাইরে আর কাউকে স্বাধীন সার্বভৌম মনে করে না এমনকি চীন ভারতের মতো রাষ্ট্রকেও অন্ততঃ পক্ষে ভারতের মতো রাষ্ট্রকেও । ভাবে সব রাষ্ট্র , দেশ ও অঞ্চল এখনো পশ্চিমাদের আজ্ঞাবহ গোলাম । তাই কী ভাবে কতটুকু খাবে , কী পড়বে কোথায় যাবে কার সাথে উঠাবসা করবে ইত্যাদি সব কিছু প্রভু মনিব নির্ধারণ করে দেবে !
রাশিয়ার কাছ থেকে ভারত এস- ৪০০ ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবস্থা কিনতে পারবে না । কারণ রাশিয়া পৃথিবীর স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করছে না ! এ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পটল তোলা ( প্রয়াত মরহুম ) পরাশক্তি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং বর্তমান রাশিয়ার চেয়েও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওপর সামরিক আগ্রাসন চালিয়েছে । আর একবিংশ শতকের এই প্রথম ২২ বছরে আফগানিস্তান ও ইরাক জবর দখল সহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সামরিক আগ্রাসন ও
স্বাধীন দেশসমূহের বিভিন্ন অঞ্চলে জোর করে অবৈধ সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর মতো তার সাঙ্গপাঙ্গরা । এখনো পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , ব্রিটেন ও ফ্রান্সের ঘাঁটি আছে । সাগর মহাসাগরে টোটো করে ঘুরে বেড়ায় মার্কিন ও পশ্চিমা দেশগুলোর রণতরী ।
বিশ্বে সবচেয়ে বেশী অস্ত্র রপ্তানি করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , ব্রিটেন , ফ্রান্স ও পশ্চিম ইউরোপীয় দেশগুলো । রাশিয়াও রয়েছে বিশ্ব অস্ত্র ব্যবসায় ।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ এ সব অস্ত্র বিক্রয়কারী দেশ হচ্ছে আসলে মৃত্যুর সওদাগর । তারা বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর
সওদা (বাণিজ্য ও ব্যবসা ) করছে । তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ত্র বিক্রয়কারী দেশ গুলোই প্রধানত বিশ্বে শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করছে । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচিত রাশিয়াকে নয় বরং নিজেকেই বিশ্বের ১নং ( প্রধান ) বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও শান্তি বিনষ্ট কারী দেশ হিসেবে সাব্যস্ত করা ! চাচাজি জো বাইডেন কি তা করতে পারবে ?
আর ভারতকেও বুঝতে হবে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পাশ্চাত্য কারো মিত্র নয় । অতএব কয়েক বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে ভারতের দহরম - মহরম , মাখামাখি ও প্রেম প্রীতি ভারতকে যেন পশ্চিমাদের গোলামে পরিণত করেছে ! তাই ভারত যেই নাকি রাশিয়ার কাছ থেকে এস ৪০০ ব্যবস্থা কিনতে চাচ্ছে ব্যস তখনই ভারতের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা ও অবরোধ আরোপের হুমকি দিয়ে বসেছে ! ভারতকে বুঝতে হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসলে কোনো শত্রু বন্ধু নেই ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু হচ্ছে কেবল তার স্বার্থ । স্বার্থ ছাড়া আর কিছুই বোঝে না চেনে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র । ভারতও চাণক্য নীতি দ্বারা বাহিত ও পরিচালিত হয়েও বরাবর পাশ্চাত্য বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পিছনে দৌড়াচ্ছে যা সত্যি বেমানান । ভারতের উচিত তথাকথিত কূট কৌশল পরিত্যাগ করে সিন্সিয়ার হওয়া। কথায় আছে না অতি চালাকের মার্গে দড়ি ।
কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপে ও প্রলোভনে পড়ে এবং চোখ রাঙানি খেয়ে ভীত হয়ে শেষ পর্যন্ত নিজ জনগণের তীব্র প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও ভারত ইরানের কাছ থেকে প্রাকৃতিক জ্বালানি গ্যাস ক্রয় করা থেকে বিরত থেকেছে এবং জ্বালানি তেল ও পেট্রোলিয়াম কেনা অনেক কমিয়ে দিয়েছে । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথামত চলে কেউ কোনোদিন লাভবান হয় নি । আর এ কথা ভারতের মতো দেশ কি বুঝে না ? ! আর বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ হুমকি থেকে ভারতের মতো দেশ প্রকৃত বাস্তবতা ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারবে ।ভারতের মতো দেশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি থেকে প্রতীয়মান হয় যে মার্কিনীদের মাথা কতটাই খারাপ । যাকে ইচ্ছা তাকে যখন তখন নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও জারি যেন তাদের নেশা ও পেশা ।
এরপর কি সবার বোধোদয় হবে ?
মুহম্মাদ মুনীর হুসেন খান