۵ آذر ۱۴۰۳ |۲۳ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 25, 2024
News ID: 379916
24 اپریل 2022 - 15:41
শবে কদরের আমল
শবে কদরের আমল

হাওজা / ১৯ , ২১ ও ২৩ রমযানের রাত সমূহ হচ্ছে আহলুল বাইতের (আ) মাযহাব অনুসারে সম্ভাব্য কদরের রাত ।

সংগ্রহ ও অনুবাদ : মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

১৯ , ২১ ও ২৩ রমযানের রাত সমূহ হচ্ছে আহলুল বাইতের (আ) মাযহাব অনুসারে সম্ভাব্য কদরের রাত । কদরের রাতের মতো উত্তম রজনী আর নেই । এ রাতে সম্পূর্ণ পবিত্র কুরআনের হাকীকত ( প্রকৃত স্বরূপ ) মহানবীর (সা) উপর মহান আল্লাহ অবতীর্ণ করেন । কদরের রাত ১০০০ মাসের চেয়ে উত্তম । এ রাতের আমলও ১০০০ মাসের আমল অপেক্ষা উত্তম । এ রাতেই এক বছরের জন্য ( এ রমযানের এ রাত থেকে সামনের বছরের রমযানের কদরের রাত পর্যন্ত ) সবার যাবতীয় বিষয় ও ভাগ্য নির্ধারণ ( তাকদীর ) করা হয় এবং রূহ - যিনি সর্বশ্রেষ্ঠ ফেরেশতা তিনি - মহিমার এ রাতে মহান প্রভু আল্লাহর অনুমতি ( ইযন্ ) নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করে যুগের ইমামের [ বর্তমান দ্বাদশ মাসূম ইমাম মাহদী (আ) যিনি অন্তর্ধান অর্থাৎ গায়বতে আছেন ] খেদমতে উপস্থিত হন এবং মহান আল্লাহর তরফ থেকে প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য সামনের এক বছরে যে ভাগ্য ও বিষয়াদি নির্ধারিত করা হয়েছে সেগুলো পেশ করেন। উল্লেখ্য যে ২১ রমযানের রাত ১৯ রমযানের রাত অপেক্ষা অধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং ২৩ রমযানের রাত ২১ রমযানের রাত হতে আরো অধিক গুরুত্বপূর্ণ । আর এ রাতের ( ২৩ রমযানের রাত ) কদরের রাত

হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি ।

১৯ রমযানের রাতে ফজরের নামাযের সময় নামাযে সিজদাহ্ রত অবস্থায় কূফার জামে মসজিদে খারিজী আততায়ী পাপিষ্ঠ নরাধম আব্দুর রহমান ইবনে মুলজিম মুরাদীর তরবারির আঘাত আহলুল বাইতের (আ) প্রথম মাসূম ইমাম আমীরুল মুমিনীন হযরত আলী ইবনে আবী তালিব ( আ ) মারাত্মক ভাবে আহত হন । ঐ পাপিষ্ঠের তরবারির আঘাত তার ললাট দেশ দুভাগ করে মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছে যায় । তরবারির আঘাতের সাথে সাথে হযরত আলী (আ) বলে উঠেন :

কাবার প্রভুর শপথ আমি সফল ও কামিয়াব হয়েছি ( ফুয্তু ওয়া রবির

فُزْتُ وَ رَبِّ الْکَعْبَةِ

কাবাহ্) । এরপর আহত ইমাম আলীকে ( আ) তাঁর বাসভবনে আনা হয়

এবং তিনি এ ঘটনার ৪৮ ঘন্টা পরে

২১ রমযান রাতে শাহাদাত বরণ করেন এবং মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা) , স্ত্রী হযরত ফাতিমা যাহরা ( আ) , চাচা হযরত হামযা , ভাই হযরত জাফার তাইয়ারের সাথে বেহেশতে মিলিত হন ।

কদরের রাত সমূহের আমল সমূহ দু ধরণের। যথা: ১. সম্মিলিত আমলসমূহ যেগুলো এ রাতসমূহে আঞ্জাম দেওয়া হয় এবং ২. প্রতি রাতের বিশেষ বিশেষ আমল ।

১. কদরের রাত সমূহের সম্মিলিত আমল সমূহ :

ক. গোসল : সূর্যাস্তের সাথে সাথে গোসল । তবে উত্তম হচ্ছে রাতের ( এশা ) নামায গোসল করে পড়া ।

খ. দুই রাকাত নামায পড়া : প্রতি রাকাতে সূরা -ই ফাতিহা পাঠের পর ৭ বার সূরা -ই ইখলাস পড়া এবং নামায শেষ করে ৭০ বার ইস্তিগফার ( ক্ষমা প্রার্থনা) করা :

أَسْتَغْفِرُ اللّٰهَ وَ أتُوْبُ إِلَیْهِ .

আমি মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর কাছে

তওবা ( অনুশোচনা প্রকাশ ) করছি ।

গ. দুআ-ই জওশানে কবীর পাঠ করা

ঘ. ইহ্ইয়া : রাত্রি জাগরণ এবং ইবাদত বন্দেগী করা

ঙ. ১০০ রাকাত নামায পড়া

চ. পবিত্র কুরআন খুলে সামনে রেখে নিম্নোক্ত দুআ পাঠ :

أَللّٰهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُکَ بِکِتَابِکَ الْمُنْزَلِ وَ مَا فِیْهِ وَ فِیْهِ اسْمُکَ الْأَکْبَرُ وَ أَسْمَاؤُکَ الْحُسْنَیٰ وَ مَا یُخَافُ وَ یُرْجَیٰ أَنْ تَجْعَلَنِيْ مِنَ عُتَقَائِکَ مِنَ النَّارِ .

হে আল্লাহ! আপনার অবতীর্ণ গ্রন্থ কুরআন এবং এর মধ্যে যা আছে তার উসিলায় - আর এ কুরআনে আছে আপনার ইসমে আকবর ( আযাম) , আপনার সকল সুন্দরতম নাম , যা সবাই ভয় করে তার বিবরণ ( দোযখ ও পারলৌকিক শাস্তির বর্ণনা ) এবং যা আশা করা হয় তার বিবরণ ( বেহেশত ও সেখানকার নেয়ামতসমূহের বর্ণনা ) - আমাকে দোযখের আগুন থেকে আপনার মুক্তি প্রাপ্ত বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রার্থনা করছি ।

এরপর যত হাজত ( মনস্কামনা ও প্রয়োজন ) আছে তা পূরণের জন্য মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা ।

ছ. পবিত্র কুরআন মাথায় রেখে নিম্নোক্ত দুআ পড়া :

أَللّٰهُمَّ بِحَقِّ هٰذَا الْقُرْآنِ وَ بِحَقِّ مَنْ إَرْسَلْتَ بِهِ وَ بِحَقِّ کُلِّ مُؤْمِنٍ مَدَحْتَهُ فِیْهِ وَ بِحَقِّکَ عَلَیْهِمْ فَلَا أَحَدَ أَعْرَفُ بِحَقِّکَ مِنْکَ .

হে আল্লাহ! এ পবিত্র কুরআনের উসীলায়, যাঁকে এ গ্রন্থ সহ প্রেরণ করেছেন তাঁর ( হযরত মুহাম্মদ -সা-) উসীলায় , এ গ্রন্থে আপনি যে মুমিনদের প্রশংসা করেছেন তাঁদের প্রত্যেকের উসীলায় এবং তাঁদের সবার উপর আপনার যে হক আছে সেই হকের ( অধিকার ) উসীলায় ( আমাদের ক্ষমা করুন এবং দোযখের আগুন থেকে আমাদেরকে মুক্তি দিন ) - আর আপনার চেয়ে আর কেউ আপনার হক ও অধিকার সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত ও পরিচিত নয়

এরপর ১০ বার বলবে : بِکَ یَا اَللّٰهُ

১০ বার : بِمُحَمَّدٍ

১০ বার : بِعَلِيٍّ

১০ বার : بِفَاطِمَةَ

১০ বার : بِالْحَسَنِ

১০ বার : بِالحُسَیْنِ

১০ বার : بِعَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ

১০ বার : بِمُحَمَّدِ بْنِ عَلِيٍّ

১০ বার : بِجَعْفَرِ بْنِ مُحَمَّدٍ

১০ বার : بِمُوْسَی بْنِ جَعْفَرٍ

১০ বার : بِعَلِيِّ بْنِ مُوْسَیٰ

১০ বার : بِمُحَمَّدِ بْنِ عَلِيٍّ

১০ বার : بِعَلِيِّ بْنِ مُحَمَّدٍ

১০ বার : بِالْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ

এবং ১০ বার : بِالْحُجَّةِ

এরপর যে হাজত ( মনস্কামনা এবং অভাব ও প্রয়োজন ) আছে তা পূরণের জন্য মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা ।

জ. ইমাম হুসাইনের (আ) যিয়ারত করা

এবং আরও কিছু আমল আছে তা আমরা পরে উল্লেখ করব ইনশাল্লাহ ।

সকল মুমিন ভাই বোনের কাছে কদরের রাত সমূহে সকল মুমিন ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও সৌভাগ্য এবং সকলের জন্য দুআ ও ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করছি ।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .