মুহাম্মাদ হুসাইন (বাংলাদেশ)
আবু সালমা(রাসুলের সাঃএর রাখাল) বলেন,আমি রাসুলুল্লাহ সাঃ কে (মি'রাজের একটি ঘটনা) বলতে শুনেছি। তিনি বলেন, "আমি যখন সেই রাত্রে আকাশে ঊর্ধ্বগমন করলাম তখন মহামহিম আল্লাহ আমাকে বললেন," রাসুল তার প্রতি তার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যা অবতীর্ণ হয়েছে তার উপর বিশ্বাস আনয়ন করেছে।(সুরা বাকারা-২৮৫)
আমি বললাম,আর মুমিনগন।আল্লাহ বললেন, হে মুহাম্মাদ, তুমি সত্য বলেছ। তোমার উম্মতের মাঝে কাকে তোমার স্থলাভিষিক্ত করেছ?আমি বললাম -তাদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তমকে।আল্লাহ বললেন, আলী ইবনে আবি তালিব। আমি বললাম-হ্যা,হে আমার প্রতিপালক।
আল্লাহ বললেন -হে মুহাম্মাদ, আমি ভূমন্ডলে খোজ নিয়েছি।অতঃপর তোমাকে বেছে নিয়েছি।তারপর আমার নাম থেকে তোমার জন্য একটি নাম নিঃসৃত করেছি।ফলে আমার নাম উচ্চারিত হয় না তোমার নাম আমার সাথে উচ্চারিত হওয়া ছাড়া। সুতরাং আমি " মাহমুদ" আর তুমি "মুহাম্মাদ "। অতঃপর আমি আবার অন্বেষণ করলাম এবং বেছে নিলাম আলীকে। আর তার নামকে আমার নাম থেকে নিঃসৃত করলাম।সুতরাং আমি হলাম " আ'লা" আর সে "আলী"।
হে মুহাম্মাদ, অবশ্যই আমি তোমাকে, ফাতিমাকে,আলীকে, হাসানকে, হুসাইনকে এবং হুসাইনের সন্তান ইমামদেরকে আমার জ্যোতির আভা থেকে সৃষ্টি করেছি।অতঃপর জমিন ও আকাশের বাসিন্দাদের কাছে উপস্থাপন করেছি তোমাদের বেলায়তকে। এরপর যে তা গ্রহণ করবে সে আমার নিকট মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত হবে,আর যারা অস্বীকার করবে তারা আমার নিকট কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
হে মুহাম্মাদ! আমার কোন বান্দা যদি ইবাদত করতে করতে সব কিছু ত্যাগ করে কিংবা পানির মত গলেও পড়ে অতঃপর তোমাদের বেলায়াতকে অস্বীকার করে আমার কাছে আসে,তাহলে আমি তাকে ক্ষমা করবো না যতক্ষণ না তোমাদের বেলায়াতকে স্বীকার করে।
হে মুহাম্মাদ, তুমি কি তাদেরকে দেখতে চাও?আমি বললাম,জ্বী,হে আমার প্রতিপালক। অতঃপর আমাকে বললেন,আরশের ডান পাশে তাকাও।আমি তাকালাম তখন দেখতে পেলাম আলী, ফাতিমা, হাসান,হুসাইন, আলী ইবনুল হুসাইন, মুহাম্মাদ ইবনে আলী,জা'ফার ইবনে মুহাম্মাদ, মুসা ইবনে জা'ফার,আলী ইবনে মুসা,মুহাম্মাদ ইবনে আলী, আলী ইবনে মুহাম্মাদ, হাসান ইবনে আলী, মাহদী। তাদের নুর এক সারিতে দাড়িয়ে নামাজ আদায় করছে। আর সে(অর্থাৎ মাহদী) তাদের মাঝখানে যেন উজ্জ্বল নক্ষত্র।
আল্লাহ বললেন, হে মুহাম্মাদ, এরাই হল আল্লাহর হুজ্জাত (আল্লাহর দলিল)।আর সে তোমার ইতরত(পরিবার) থেকে।আর আমার মর্যাদা ও সম্মানের শপথ! সে হল আমার আউলিয়াদের জন্য ফরজ হুজ্জাত। আর আমার শত্রুদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহনকারী।-
( ফারাইদুস সিমতাইন)
হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ্ আনসারী(রাঃ) বর্ননা করেছেনঃ যখন এই আয়াতটি নাজিল হলো "হে ঈমানদারগন! তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, তার রাসুলের ও তোমাদের মধ্যে যারা দায়িত্বশীল(উলিল আমর)সূরা নিসাঃ৫৯
তখন আমি জিজ্ঞাসা করলাম ইয়া রাসুলুল্লাহ্! আমরা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলকে চিনেছি এবং উলিল আমর যার আনুগত্য করাকে নিজের ও নিজের রাসূলের আনুগত্য বলে ঘোষনা দিয়েছেন, তারা কারা? তিনি জবাবে বললেন, তারা আমার স্থলাভিষিক্ত এবং আমার পরে মুসলনদের ইমাম। তার প্রথম জন হলো আলী ইবনে আবু তালিব, তাঁরপর হাসান ইবনে আলী, তারপর হুসাইন ইবনে আলী, তারপর আলী ইবনে হুসাইন, তারপর মুহাম্মদ ইবনে আলী, হে জাবির তোমার হায়াত এত বৃদ্ধি পাবে যে তুমি তার সাক্ষাত পাবে, যখন তুমি তাঁর সাক্ষাত পাবে, তাকে আমার সালম পৌছে দিবে, এরপর জাফর ইবনে মুহাম্মদ(আস্ সাদীক), তারপর মুসা ইবনে জাফর (আল কাজিম), তারপর আলী ইবনে মুসা (আর্ রেজা), এরপর মুহাম্মদ ইবনে আলী জাওয়াদ(আত্ তক্বি), এরপর আলী ইবনে মুহাম্মদ (আন্ নকী), তারপর হাসান ইবনে আলী (আল আসকারী), তারপর আমার নাম ও উপাধী বহনকারী যে জগতে খোদার প্রমান চিহ্ন(হুজ্জাত) বহন করবে। আল্লাহ তায়ালা তাঁর মাধ্যমে পৃথিবীর পূর্ব-পশ্চিম জয় করে দেবেন। নিজের ভক্ত ও বন্ধুদের থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবেন। তবে তাঁর অদৃশ্য থাকা সব সময় থাকবে না এবং তাঁর ইমামতের উপর শুধু তারাই দৃঢ় থাকবে, যাদের হৃদয়কে আল্লাহ তায়ালা ঈমানের জন্য পরীক্ষা করেছেন। তাঁর শুভ নাম হবে মুহাম্মদ আল মাহ্দী।"
সুত্রঃ নেয়াবাউল মুয়াদ্দাত পৃষ্ঠা ৪২৭(বৈরুত); ইবনে আরাবী ইক্ববাহুল ক্বাইয়িম-২৬৬; ইবনে সাহার আসুব ১ম খন্ড পৃষ্ঠা ২৮২; রাউয়ান জাভেদ ২য় খন্ড পৃঃ৭২; কিফায়া আল আসার ৭ম খন্ড পৃঃ৭(পুরানো প্রিন্ট); কিফায়া আল আসর, ৫ম খন্ড পৃঃ৫৩,৬৯( কোম প্রন্ট); গয়াতুল মারাম ১৯ম খন্ড পৃঃ২৬৭; উসবাতুল হুদা ৩য় খন্ড পৃঃ১২৩
ইয়া ইয়াবনা জাহরা আল মোন্তাজের আল মাহদী (আঃ) আল মাদাদ।
আল্লাহুমা সাল্লে আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলে মুহাম্মাদ ওয়া আজ্জিল ফারাজাহুম ,
আল্লাহুম্মা লা”ন কাতালাতাল আমিরিল মুমিনিন (আঃ) ।