۵ آذر ۱۴۰۳ |۲۳ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 25, 2024
হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা মাসুম আসুম আলী গাজী নাজাফী
হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা মাসুম আসুম আলী গাজী নাজাফী

হাওজা / পঁয়ত্রিশতম অমীয় বাণী। গ্রন্থ শিরোনাম : চল্লিশটি অমীয় বাণী। (সমস্যা সমাধানের জন্য বারোটি দোয়া সহ) সংকলন : আল্লামা শেখ আব্বাস কুম্মী (রহঃ)।

অনুবাদ: হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা মাসুম আসুম আলী গাজী নাজাফী

পঁয়ত্রিশতম অমীয় বাণী। গ্রন্থ শিরোনাম : চল্লিশটি অমীয় বাণী। (সমস্যা সমাধানের জন্য বারোটি দোয়া সহ) সংকলন : আল্লামা শেখ আব্বাস কুম্মী (রহঃ)।

বিষয় : হযরত আলী (আঃ)-এর নির্দেশ সমূহ।

عَنْ عَبْدِالْعَظِیْمِ الْحَسَنِیْ قَالَ قُلْتُ لِاَبِیْ جَعْفَرٍ مُحَمَّدِ ابْنِ عَلِیِّ الرَّضَا عَلَیْهِمَا السَّلامُ یَا بْنَ رَسُوْلُ اللّٰهِ حَدَّثَنِیْ بِحَدِیْثٍ عَنْ اَبَآئِكَ فَقَالَ حَدَّثَنِیْ اَبِیْ عَنْ جَدِّیْ عَنْ اَبَآئِه عَلَیْهِمُ السّلامُ قَالَ:

"قَالَ اَمِیْرُ الْمُوْمِنِیْنَ عَلَیْهِ السَّلامُ: لا یَزَالُ النَّاسُ بِخَیْرٍ مَا تَفَاوَتُوْا فَاِذَا اسْتَوَوْا هَلَکُوْا"

قَالَ قُلْتُ لَه زِدْنِیْ یَا بْنَ رَسُوْلُ اللّٰهِ، قَالَ حَدَّثَنِیْ اَبِیْ عَنْ جَدِّیْ اَبَآئِه عَلَیْهِمُ السّلامُ قَالَ:

" قَالَ اَمِیْرُ الْمُوْمِنِیْنَ عَلَیْهِ السَّلامُ، اِنَّکُمْ لَنْ تَسَعُوْا النَّاسَ بِاَمْوَالِکُمْ فَسَعَوْهُمْ بَطَلاقَةِ الْوَجْهِ وَ حُسْنِ اللِّقَاءِ فَاِنِّیْ سَمِعْتُ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّ اللّٰهُ عَلَیْهِ وَآلِه وَسَلَّمَ، یَقُوْلُ اِنَّکُمْ لَنْ تَسَعُوْا النَّاسَ بِاَمْوَالِکُمْ فَسَعُوْهُمْ بِاَخْلافِکُمْ"

قَالَ قُلْتُ لَه زِدْنِیْ یَا بْنَ رَسُوْلِ اللّٰهِ، فقَالَ:

"قَالَ اَمِیْرُ الْمُوْمِنِیْنَ عَلَیْهِ السَّلامُ، مَنْ عَتَبَ عَلَی الزَّمَانِ طَالَتْ مَعْتَبَتُه

প্রখ্যাত আলেম শেখ সাদুক্ব (রহঃ) জনাব আব্দুল আজীম ইবনে আব্দুল্লাহ হাসানী (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন : আমি ইমাম মুহাম্মাদ তক্বী (আঃ)-এর কাছে জিজ্ঞাসা করলাম, হে নবীর সন্তান! আমাকে এমন হাদীস শুনান যা আপনার পূর্বপুরুষদের থেকে বর্ণিত হয়েছে। তিনি (আঃ) বলেন :

আমিরুল মুমিনীন (আঃ) বলেছেন : যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ একে অপরের থেকে পৃথক থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত কল্যাণের মধ্যে থাকবে। যখন সবাই একে অপরের মতো হবে তখন তারা ধ্বংস হয়ে যাবে।

আমি (আব্দুল আজীম) বলি, হে নবীর সন্তান! আরও কিছু বলেন :

তিনি (আঃ) তাঁর পূর্বপুরুষদের থেকে বর্ণনা করেন যে, হযরত আলী (আঃ) বলেছেন :

"তোমরা যদি একে অপরের দোষ ত্রুটি থেকে ওয়াকিবহাল হও তবে একে অপরকে দাফন পর্যন্তও করবে না।"

আমি (আব্দুল আজীম) আবারো বলি, হে নবীর সন্তান! আরো কিছু বলেন : তিনি (আঃ) তাঁর পূর্বপুরুষদের থেকে বর্ণনা করেন যে, ইমাম আলী (আঃ) বলেছেন :

"তোমাদের সম্পদের মধ্যে পরস্পরকে দান করার মতো পর্যাপ্ত সামর্থ্য নেই (অর্থাৎ তোমরা ধন-সম্পদ দিয়ে একে অপরকে খুশি করতে পারবে না)। তাই একে অপরকে প্রশস্ত ও উত্তম আচরণের মাধ্যমে আনন্দ দাও। কেননা আমি মহানবী (সাঃ) থেকে শুনেছি যে, তিনি বলেছেন : তুমি মানুষদেরকে ধন-সম্পদের মাধ্যমে বিস্তৃতি দিতে পারবে না। সুতরাং উত্তম নৈতিকতার মাধ্যমে বিস্তৃতি দাও।"

জনাব আব্দুল আজীম বলেন, আমি পুনরায় বলি, হে নবীর সন্তান! আরো কিছু বলেন? তখন তিনি (আঃ) বলেন : ইমাম আলী (আঃ) বলেছেন : "যে ব্যক্তি যুগের উপর ক্রোধিত হবে তবে তার এই অসন্তোষ দীর্ঘস্থায়ী হবে।"

অর্থাৎ, যুগের অনুকূল কথাবার্তা একটি বা দুটি তো নয় যে, যার পরিসমাপ্তির সাথে মানুষের ক্রোধও প্রশমিত হবে বরং তা খুব বেশি যা পরিসংখ্যানের উর্ধ্বে। তাই ফলাফল স্বরূপ, মানুষের ক্রোধ দীর্ঘায়িত হবে।

শেখ আব্বাস কুম্মী (রহঃ) বলেন : নাহজুল বালাগাহ তে ইমাম আলী (আঃ)-এর উল্লেখিত উক্তি নিম্নলিখিত অর্থে বর্ণিত হয়েছে :

"কাঁটাকে উপেক্ষা কর নতুবা তুমি কখনই সুখী হবে না।"

অর্থাৎ দুনিয়ার অপছন্দ কথাবার্তা, দুঃখ-দুর্দশা এবং অবিশ্বাস্য বন্ধুর অযোগ্য কথাকে উপেক্ষা কর আর তা সহ্য কর। অন্যথায় কখনোই সুখী হবে না এবং সর্বদা রাগান্বিত হয়ে তিক্ত জীবনযাপন করতে হবে। কারণ পৃথিবীর প্রকৃতিই অপছন্দনীয় জিনিসের সাথে সংযুক্ত আছে।"

রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে যে, ইমাম যয়নুল আবেদীন (আঃ) তাঁর পুত্রকে বলেন :

"যদি কোন ব্যক্তি তোমার ডানদিকে দাঁড়িয়ে তোমাকে তিরস্কার, গালমন্দ, বা কটুক্তি করে এবং তারপরে বাম দিকে এসে ক্ষমা চায়, তবে তাকে ক্ষমা কর এবং তার অজুহাত গ্রহণ কর।"

জনাব আব্দুল আজীম (রহঃ) বলেন : আমি ইমাম মুহাম্মাদ তক্বী (আঃ)-কে বলি, আরও কিছু সংযোজন করেন :

قَالَ ،قَالَ اَمِیْرُ الْمُوٴْمِنِیْنَ مُجَالِسَةُ الْاَشْرَارِ تُوْرِثُ سُوْءَ الظَّنِّ بِالْاَخْیَارِ

তিনি (আঃ) বলেন, ইমাম আমীরুল মোমেনীন হযরত আলী (আঃ) বলেছেন : অসৎ লোকদের সহচরী ভালো লোকদের প্রতি সন্দেহের কারণ হয়।

জনাব আব্দুল আজীম (রহঃ) বলেন, আমি ইমাম মুহাম্মাদ তক্বী (আঃ)-কে বলি, আরো কিছু বলেন।

بِئْسَ الزَّادِ اِلَی الْمَعَادِ الْعُدْوَانُ عَلَی الْعِبَادِ

তিনি (আঃ) বলেন : ইমাম আলী (আঃ) বলেছেন : "আল্লাহর বান্দাদের উপর জুলুম ও অত্যাচার করাই হল খারাপ উপার্জন।"

শেখ আব্বাস কুম্মী (রহঃ) বলেন, এটাও হযরত আমীরুল মোমেনীনের বাণীর মধ্যে একটি।

اَلْبَغِیْ آخِرُ مُدَّةِ الْمَلُوْكِ

"বিদ্রোহই হল শাসকদের জন্য শেষ মেয়াদ।"

জনাব আব্দুল আজীম (রহঃ) বলেন, আমি ইমাম মুহাম্মাদ তক্বী (আঃ)-কে এর মধ্যে আরো কিছু সংযোজন করতে বলি।

তিনি (আঃ) বলেন : ইমাম আলী বলেছেন :

قَیِّمَةُ کُلِّ امْرِیءٍ مَّایُحْسِنُه

"অর্থাৎ প্রত্যেক মানুষের মূল্য ও মর্যাদা হল জ্ঞান ও দক্ষতা যা সে ভালো করেই জানে।"

ইমাম আলী (আঃ)-এর উল্লেখিত বাক্যটির উদ্দেশ্য হল, নাফসের পরিপূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি শিল্প ও তার সাদৃশ্য জিনিসের জ্ঞান অর্জনের আকাঙ্ক্ষা থাকা উচিত।

খালীল ইবনে আহমদ বলেন, ইমাম আলী (আঃ) কত সুন্দর কথাই না বলেছেন, যা মানুষকে জ্ঞান এবং মাগফিরাতের দিকে আকৃষ্ট করে :

"প্রত্যেক মানুষের মূল্য হল ওই জিনিস যাকে সে নেক মনে করে।

আমি (আব্দুল আজীম রহঃ) বলি, হে মাওলা! এর মধ্যে আরো কিছু সংযোজন করুন।

তিনি (আঃ) বলেন, হযরত আমীরুল মোমেনীন (আঃ) বলেছেন :

اَلْمَرْءُ مَخْبُوْءٌ تَحْتَ لِسَانِه

"মানুষ তার জিভের নিচেই লুকিয়ে থাকে।"

অর্থাৎ যতক্ষণ না সে কথা বলবে ততক্ষণ তার মূল্য জানা যাবে না। এজন্যই বলা হয়েছে,

تُکَلَّمُوْا تُعْرَفُوْا

"বল, যাতে তোমার পরিচয় জানা যায়।"

আমি (আব্দুল আজীম রহঃ) বলি, হে নবীর সন্তান! আরো কিছু সংযোজন করুন।

তিনি (আঃ) বলেন :

مَا هَلَكَ امْرَءٌ عَرَفَ قَدْرَة

"যে ব্যক্তি তার মূল্য জানতে পারে সে ধ্বংস হবে না।"

আমি (আব্দুল আজীম রহঃ) বলি, হে নবীর সন্তান! আরও কিছু সংযোজন করুন।

তিনি (আঃ) বলেন।

ইমাম আলী (আঃ) বলেছেন :

اَلتَّدْبِیْرُ قَبْلَ الْعَمَلِ یُوٴْمِنُكَ مِنَ النَّدَمِ

"কাজ ও পদক্ষেপ নেওয়ার পূর্বে পরিকল্পনা করা তোমাকে অনুশোচনা থেকে রক্ষা করবে।"

শেখ আব্বাস কুম্মী (রহঃ) বলেন, হযরত ইমাম জাফর সাদিক্ব (আঃ) আব্দুল্লাহ ইবনে জুনদাবকে এক অছিয়াতে এই একই অর্থের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন :

"যেকোনো কাজ করার আগে তার মধ্যে প্রবেশ করার এবং তার থেকে বের হওয়ার পথ খুঁজে নাও, অন্যথায় আফসোসের সম্মুখীন হতে হবে।"

আমি (আব্দুল আজীম রহঃ) বলি, হে নবীর সন্তান! এর মধ্যে আরও কিছু সংযোজন করুন।

তিনি (আঃ) বলেন,হযরত আমিরুল মোমেনীন বলেছেন :

خَاطَرَ بِنَفْسِه مَنِ اسْتَغْنٰی بِرَاْیِه

"ওই ব্যক্তি নিজেকে বিপদের উপর নিক্ষেপ করেছে, যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নিজের ইচ্ছা ও বিবেকের উপর নির্ভর করে

অন্যদের সাথে পরামর্শ করে না।"

আমি (আব্দুল আজীম রহঃ) বলি, হে রসূলের সন্তান! এর মধ্যে আরও কিছু বৃদ্ধি করুন।

তিনি (আঃ) বলেন, হযরত আমীরুল মোমেনীন বলেছেন :

قِلَّةُ الْعَيَالِ اَحَدُ الْيَسَارَيِنِ "

"স্বল্প বংশ অভাব ও অনাটনের অন্যতম কারণ।"

আমি (জনাব আব্দুল আজীম রহঃ) বলি, হে রসূলের সন্তান! এর মধ্যে আরও কিছু সংযোজন করুন। তিনি (আঃ) বলেন, ইমাম আলী (আঃ) বলেছেন :

مَنْ دَخَلَهُ الْعُجْبُ هَلَكَ

"যার মধ্যে স্বার্থপরতা প্রবেশ করেছে সে ধ্বংস হয়েছে।"

আমি (আব্দুল আজীম রহঃ) বলি, হে রসূলের সন্তান! এর মধ্যে আরও কিছু সংযোজন করুন। তিনি (আঃ) বলেন,

হযরত আলী (আঃ) বলেছেন :

مَنْ اَیْقَنَ بِالْخَلْفِ جَادَ بِالْعَطِیَّةِ

"যে এটা বিশ্বাস করে যে, যা কিছু দান করছি এর উত্তম প্রতিদান দেওয়া হবে, তবে সে প্রদান করতে বীরত্বতা দেখাবে। কারণ সে জানে যে, এই প্রদানের পুরস্কার সে অবশ্যই পাবে।"

শেখ আব্বাস কুম্মী (রহঃ) বলেন, কয়েকজন কবি হযরত আমীরুল মোমেনীনের প্রশংসায় ঐ একই অর্থের দিকে ইঙ্গিত করেছেন।

جَادَ بِالْقُرْصِ مَلاءَ جَنْبَیْهِ

وَعَافَ الطَّعَامِ وَ هُوَ سَغُوْبٌ

فَاَعَادَ الْقُرْصُ الْمُنِیْرُ عَلَیْهِ

اَلْقَرْضَ وَالْمُقْرِضَ الْکِرَامَ کَسُوْبٌ

তিনি (ইমাম আলী আঃ) ঐ সময় যবের রুটি দান করলেন যখন তিনি (আঃ) ক্ষুধার্ত ছিলেন এবং ভিক্ষুকের কারণে তিনি খেতেও পছন্দ করতেন না।

সুতরাং রুটির টুকরো ভিক্ষুককে দিলেন, তাই প্রতিদান স্বরূপ সূর্যের টুকরো তাঁর (আঃ) জন্য আসমান থেকে প্রত্যাবর্তন করে, সুতরাং ঋণদাতা একজন উদার এবং একজন পরোপকারী ব্যক্তি।

বর্ণিত হয়েছে যে, আমিরুল মোমেনীন খেজুর গাছে পানি দিলেন এবং তার বিনিময়ে তিনি প্রায় চোদ্দ ছটাক যব পেলেন যা তিনি পেষণ করে রুটি তৈরি করেন। ওই রুটি দিয়ে তিনি যখন ইফতার করতে চাইলেন তখনই দানপ্রার্থী দানের আবেদন করেন। তিনি ওই রুটি তাকে দান করেন এবং রাতে তিনি ক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়েন।

আমি (জনাব আব্দুল আজীম) বলি, হে নবীর সন্তান! আরো কিছু সংযোজন করুন। তিনি (আঃ) বলেন : ইমাম আলী (আঃ) বলেছেন :

مَنْ رَضِیَ بِالْعَافِیَةِ مِمَّنْ دُوْنَه رَزَقَ السَّلامَةَ مِمَّنْ فَوْقَه

"যে নিজের অধীনস্থ ব্যক্তির কল্যাণ এবং নিরাপত্তা থেকে সন্তুষ্ট থাকে, তবে সে তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের (কর্মকর্তা) কাছ থেকে নিরাপত্তা পাবে।"

জনাব আব্দুল আজীম (রহঃ) বলেন, আমি তখন ইমাম মুহাম্মাদ তক্বী (আঃ)-কে বলি, আপনি যা কিছু বলেছেন তা যথেষ্ট।

শেখ সাদুক্ব প্রণীত আমালী পৃষ্ঠা ৩৬২...

تبصرہ ارسال

You are replying to: .