মোহাম্মাদ মিজানুর রহমান
পিতামাতা অপরিসীম কষ্ট দু:খ সহ্য করে সন্তানদের প্রতিপালন করেন। তাই তাদের সাথে সদাচার এবং উত্তম আচরণ করা প্রত্যেক সন্তানের নৈতিক ও ঈমানী দায়িত্ব।
ইসলাম ধর্মে পিতামাতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং তাদের সাথে উত্তম আচরণের আদেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি পিতামাতার অবাধ্যতা থেকে বিরত থাকার জন্য প্রত্যকে সতর্ক করা হয়েছে।
পিতামাতাকে কষ্ট দেয়া এবং তাদের সাথে দূর্ব্যবহার কবিরা গুনাহ এবং অমার্জনীয় অপরাধ। যদি কেউ পিতামাতাকে কষ্ট দেয় তাহলে তার জীবন থেকে বরকত ও কল্যাণ হারিয়ে যায় এবং তার আয়ু সংকুচিত হয়। পবিত্র কোরআনের আয়াত ও রাসূলের (সা.) হাদীসে এ ধরনের কবিরা গুনাহ ও অমার্জনীয় অপরাধ থেকে বিরত থাকার জন্য প্রত্যেকের প্রতি কঠোর আদেশ দেয়া হয়েছে।
পিতামাতার অবাধ্যতার পরিণতি হচ্ছে আল্লাহর রহমত, বরকত ও মাগফেরাত থেকে বঞ্চিত হওয়া।
এখানে আমরা পিতামাতার অবাধ্যতার কঠোর পরিণতি সম্পর্কে কয়েকটি হাদীস তুলে ধরছি-
রাসূল (সা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে: পিতামাতার অবাধ্য সন্তানকে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) বলা হয়েছে যে, তুমি যতই ইবাদত-বন্দেগী করনা কেন; সেগুলো আদৌ কবুল করা হবে না। (দ্র: বিহারুল আনওয়ার, ৭৪তম খন্ড, পৃ. ৮০)
ইমাম জাফর সাদীক (আ.) বলেছেন: যে ব্যক্তি পিতামাতার প্রতি রুক্ষ দৃষ্টিতে তাকাবে, আল্লাহ তার কোন নামায ও রোযাকে কবুল করবেন না।(দ্র: বিহারুল আনওয়ার, ৭৪তম খন্ড, পৃ. ৬১)
ইমাম হাদী (আ.) থেকে পিতামাতার অবাধ্যতার পরিণতি সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে: পিতামাতার অবাধ্য হলে অভাব-অনটন এবং অপমান কখনও তার পিছু ছাড়বে না। (মুনতাখাবুল মিযানুল হিকমাহ, হাদীস নং ৬১৪)
পিতামাতার অবাধ্যতার পরিণতি সম্পর্কে মহানবী (সা.) থেকে একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে; যা আমাদেরকে এ বিষয়ে বিশেষ সতর্ক থাকার কথা বলে। এ হাদীসে রাসূল (সা.) বলেছেন: তিনটি গুনাহের শাস্তি ও পরিণতি এ দুনিয়াতেই মানুষকে ভোগ করতে হয়; সেগুলো হচ্ছে-
ক- পিতামাতার অবাধ্যতা
খ- মানুষের প্রতি অবিচার ও জুলুম করা এবং
গ- অন্যের উপকারে অকৃতজ্ঞতা পোষণ করা
(দ্র: আমালী শেখ মুফিদ, পৃ. ২৩৭ এবং মুনতাখাবুল মিযানুল হিকমাহ, হাদীস নং ২২২)