۶ اردیبهشت ۱۴۰۳ |۱۶ شوال ۱۴۴۵ | Apr 25, 2024
ইয়েমেন
ইয়েমেন

হাওজা / বিরাট বড় মানবিক বিপর্যয় হতে চলেছে ইয়েমেনে । দেশটির প্রায় দু কোটি মানুষ ক্ষুধার্ত ।

হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, বিরাট বড় মানবিক বিপর্যয় হতে চলেছে ইয়েমেনে । দেশটির প্রায় দু কোটি মানুষ ক্ষুধার্ত । জাতি সংঘ , পশ্চিমা দেশগুলো ( ইউরোপীয় ইউনিয়ন) , ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড তথা গোটা পাশ্চাত্য, জাপান , কোরিয়া , চীন , দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশসমূহ তথা গোটা প্রাচ্য , গোটা মুসলিম বিশ্ব, আফ্রিকা, ভারত , মধ্য এশিয়া, ল্যাটিন আমেরিকা সহ পুরো বিশ্বের পিনপতন নিরবতায় তথাকথিত মানবতাবাদী ও মানবাধিকারের ধ্বজা ধারী পাশ্চাত্যের সর্বাত্মক মদদপুষ্ট সৌদি জোটের ৭ বছরের অধিক কাল যুদ্ধ ও আগ্রাসনে ইয়েমেনের অবকাঠামোর সম্পূর্ণ ধ্বংস সাধন , বেপরোয়া বোমাবর্ষণে লক্ষাধিক ইয়েমেনীর নিহত হওয়া যাদের এক বিরাট অংশ নারী ও শিশু । জলে স্থলে অন্ত:রীক্ষে স্মরণাতীত কালের কঠোর অবরোধ আরোপের কারণে দারিদ্র প্রপীড়িত ইয়েমেনে দু কোটি মানুষের অভুক্ত ও ক্ষুধার্ত থাকার মতো ভয়াবহ এ মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে। পশ্চিমাদের অন্যায় আধিপত্যের প্রতি মাথা না নোয়ান ও বশ্যতা স্বীকার না করার পুরস্কার ( শাস্তি ) হচ্ছে স্বাধীন চেতা সংগ্রামী ইয়েমেনী জাতিকে ক্ষুধার্ত রাখা ও তীব্র খাদ্য সংকট ও খাদ্যাভাবে ফেলা। এখন পাশ্চাত্যের মানবতাবাদী চেহারা ও মানবাধিকারের বুলি গেল কোথায়? এটাই হচ্ছে পাশ্চাত্য বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , ব্রিটেন , ফ্রান্স প্রভৃতি পশ্চিমা দেশগুলোর দুমুখো কপট নীতি ও নিফাক ( মুনাফেকি ) । শত্রুদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে পাশ্চাত্য ( ব্রিটেন , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স জার্মানি ) এবং নিজেরাই মানবাধিকার লংঘন করলে অথবা তাদের মিত্রদের দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘিত ও ভূলুণ্ঠিত হলে সাত খুন মাফ। সৌদি জোট ইয়েমেন যুদ্ধে যে অন্যায় ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন করেছে সে ক্ষেত্রে অথবা স্বৈরাচারী সৌদি সরকার যদি সে দেশে ( সৌদি আরবে ) গণ মৃত্যু দণ্ড কার্যকর করে মানবাধিকার লংঘন করে তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তথা গোটা পাশ্চাত্য তখন মুখে কুলুপ এঁটে চুপচাপ বসে থাকে এবং টু শব্দটি পর্যন্ত করে না । অথচ ইয়েমেনীদের রক্তে রঞ্জিত সৌদি রাজপরিবারের হাত । গত বিংশ শতাব্দীতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনপ্রিয় জাতীয় সরকার সমূহের পতন ঘটিয়ে ও সামরিক স্বৈরাচারীদের শাসন প্রতিষ্ঠা করে প্রমাণ করেছে যে পাশ্চাত্য এবং বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , ব্রিটেন ও ফ্রান্স আসলেই স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের শত্রু । তাই পাশ্চাত্য যে বুলি আওড়ায় ও শ্লোগান দেয় ঠিক তারা তার উল্টোটাই করে নিজেদের স্বার্থে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে জল্লাদ কসাই সরকার আড়াই শো বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদিবাসী একশো মিলিয়ন রেড ইন্ডিয়ানকে হত্যা করেছে , যে ইউরোপ দুই বিশ্বযুদ্ধে ১০০ মিলিয়ন ( দশ কোটি ) লোক হত্যা করেছে , যে পাশ্চাত্য ( মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটেন , ফ্রান্স এবং বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশ ) সাম্রাজ্যবাদী শাসন ও শোষণ চালিয়ে কোটি কোটি ঔপনিবেশিক শাসন কবলিত মানুষকে হত্যা করেছে তাদের মুখে গণতন্ত্র , মানবতা ও মানবাধিকারের বাণী মোটেও শোভা পায় না।১৯৪৮ সালে যেমন মানবাধিকারের ঘোষণা দিয়েছে পাশ্চাত্য ঠিক তেমনি ঐ বছরই আবার ফিলিস্তিনি জনগণকে তাদের বাড়ীঘর , পৈতৃক বাস্তু ভিটা ও মাতৃভূমি ফিলিস্তিন থেকে উচ্ছেদ ও বিতাড়িত করে এবং গণহত্যা চালিয়ে ফিলিস্তিনে যায়নবাদী বর্ণবাদী সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলের প্রতিষ্ঠা করেছে এই পাশ্চাত্য ( অর্থাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র,ব্রিটেন, ফ্রান্স) । আসলে পাশ্চাত্যের কাছে গণতন্ত্র , মানবতা ও মানবাধিকার যেমন ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনে পদদলিত হয়েছে ঠিক তেমনি গণতন্ত্র , মানবতা ও মানবাধিকার আবারও পাশ্চাত্য কর্তৃক ইয়েমেনে পদদলিত হল !!!

তাই পাশ্চাত্যের কণ্ঠে গণতন্ত্র , মানবতা ও মানবাধিকারের কথা শুনলে যেমন মোদের হাসি পায় ঠিক তেমনি আমাদের দু:খও হয়। আসলে পাশ্চাত্য যে মানবতার প্রকৃত দুশমন তা যুদ্ধ বিধ্বস্ত এবং অবরোধ , দুর্ভিক্ষ ও খাদ্য সংকট কবলিত ইয়েমেনের দু:খজনক মানবীয় বিপর্যয় ও ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে স্পষ্ট বোধগম্য হয়ে যায় ।

ইয়েমেনের লোকসংখ্যা প্রায় ৩০ মিলিয়ন। অথচ এই ৩ কোটি জনসংখ্যার ৬৬% অর্থাৎ দু কোটি বা দুই তৃতীয়াংশ আজ পশ্চিমা সমর্থনপুষ্ট সৌদি জোটের তীব্র আক্রমণ ও কঠোর অবরোধের কারণে ক্ষুধার্ত এবং তীব্র খাদ্য ঘাটতি , অভাব ও সংকটের সম্মুখীন। ইয়েমেনের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ হুসী ( হুথি ) নেতৃত্বাধীন আনসারুল্লাহ গণ কমিটির সমর্থক হওয়ার শাস্তি স্বরূপ পাশ্চাত্যের সমর্থনপুষ্ট সৌদি জোটের এই প্রাণান্তকর কঠোর অবরোধ , যুদ্ধ ও আগ্রাসনের শিকার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব কর্তৃক অগণতান্ত্রিক ভাবে নিযুক্ত অজনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট আব্দু রব্বিহ মনসূর আল হাদী প্রশাসনকে ইয়েমেনের রাজধানী সানার ক্ষমতার মঞ্চে পুনঃ প্রতিষ্ঠার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটেন তথা সকল পশ্চিমা দেশের মদদপুষ্ট সৌদি জোট হুথি আনসারুল্লাহর নেতৃত্বাধীন ইয়েমেনের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং কঠোর অবরোধ আরোপ করে তাদেরকে ( ইয়েমেনের জনগণ ) তীব্র খাদ্য ঘাটতি ও ক্ষুধার সম্মুখীন করেছে। এখান থেকে আবারো প্রমাণিত হল যে পাশ্চাত্য বা পশ্চিমা দেশগুলো গণতন্ত্রেরও শত্রু বটে । যদি পাশ্চাত্য আসলেই প্রকৃত গণতন্ত্র বান্ধব হত তাহলে তাদের উচিত ছিল ইয়েমেনের জনপ্রিয় হুথি নেতৃত্বাধীন আনসারুল্লাহ আন্দোলনকে সমর্থন করা। কিন্তু বাস্তবে তারা ( পাশ্চাত্য ) তা করে নি। কারণ আনসারুল্লাহ ইয়েমেনে পাশ্চাত্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ স্বার্থ সংরক্ষণ কারী নয়। অথচ সৌদি আরব এবং প্রাক্তন ও পলাতক আব্দু রব্বিহ মনসূর আল হাদীর সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পাশ্চাত্যের অবৈধ সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থ সংরক্ষণ করছে। তাই গণতন্ত্র , মানবতা , মানবাধিকার ও নীতি নৈতিকতার বুলি ত্যাগ করে পাশ্চাত্য তার সেবাদাসী সৌদি জোট ও পলাতক মানসুর আল হাদী সরকারকে সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা দান করবেই ।

মুহাম্মাদ মুনীর হুসাইন খান

تبصرہ ارسال

You are replying to: .