۱۶ آذر ۱۴۰۳ |۴ جمادی‌الثانی ۱۴۴۶ | Dec 6, 2024
আশুরার দিবসে ইমাম হুসাইনের ( আ :) শাহাদাত
আশুরার দিবসে ইমাম হুসাইনের ( আ :) শাহাদাত

হাওজা / আশুরার দিবসে ইমাম হুসাইনের ( আ :) শাহাদাত , গাদ্দার বিশ্বাস ঘাতকদের থেকে প্রকৃত মুসলিম উম্মাহকে শনাক্ত করার মাপকাঠি ।

মুহাম্মাদ মুনীর হুসাইন খান (মুহররম, ১৪৪৪ হি.)

পর্ব ৫- ৮ম হাদীস:

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস ( রা: ) বলেন : আমরা সন্দেহ পোষণ করতাম না এবং ( রাসূলুল্লাহ সা: এর ) আহলুল বাইত (আ :)ও এ মতের উপর প্রতিষ্ঠিত ও সমবেত হয়েছিলেন ( অর্থাৎ তাঁরা সবাই একমত ছিলেন ) যে হুসাইন ইবনে আলী ( আ: ) তফ্ফে ( কারবালা - ই মুআল্লা ) নিহত ( শহীদ ) হবেন । ( দ্র : আল - মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন , খ : ৩ , পৃ : ৩৮৯ , হাদীস নং ৪৮৮৯ )

٤٨٨٩ - عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ( رض ) ، قَالَ : (( مَا كُنَّا نَشُكُّ وَ أَهْلُ الْبَيْتِ مُتَوَافِرُوْنَ أَنَّ الْحُسَيْنَ بْنَ عَلِيٍّ يُقْتَلُ بِالطَّفِّ .))

৯ ম. হাদীস :

হযরত উম্মুল ফযল ( রা:) বলেন : হুসাইন কে কোলে নিয়ে রাসূলুল্লাহ ( সা:) আমাকে বলেছেন : " নিশ্চয়ই হযরত জিবরাঈল ( আ:) আমাকে জানিয়েছেন যে আমার উম্মত হুসাইন কে কতল ( হত্যা ) করবে । " ( দ্র : আল - মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন , খ : ৩ , পৃ : ৩৮৮ , হাদীস নং ৪৮৮৭ )

عَنْ أُمِّ الْفَضْلِ قَالَتْ : قَالَ لِيْ رَسـُوْلُ اللّٰهِ - ص - وَ الْحُسَیْنُ فِيْ حِجْرِهِ : إنّ جبریل (ع) أخبرني أنّ أمّتي تقتل الحسینَ .

১০ ম হাদীস :

আস'আস ইবনে সাহীম নিজ পিতা সাহীম থেকে , সাহীম হযরত আনাস ইবনুল হারিস আল - কাহিলী ( রা: ) থেকে বর্ণনা করেছেন : তিনি ( আনাস ইবনুল হারিস - রা: - ) বলেন : তিনি মহানবীকে ( সা:) বলতে শুনেছেন :

" নিশ্চয়ই আমার এই পুত্র সন্তান ( দৌহিত্র অর্থাৎ হুসাইন ) ইরাকের এক স্থানে নিহত ( শহীদ ) হবে ; অত:পর যে তাঁকে ( হুসাইন ) পাবে ( যে সে - অর্থাৎ হুসাইন - যালিমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে বের হয়েছে এবং এ জন্য সে সাহায্য চাচ্ছে ) তার উচিত তাঁকে ( হুসাইন ) সাহায্য করা । "

অত:পর তিনি ( হযরত আনাস ইবনুল হারিস রা: ) হুসাইনের - রাদিয়াল্লাহু আনহু - সাথে ( কারবালায় ) নিহত ( শহীদ ) হন ।

(( দ্র: ইবনুল আসীর আল জাযারী ( ৫৫৫ - ৬৩০ হি. ) প্রণীত উসদুল গাবাহ ফী মা'রিফাতিস সাহাবা , খ : ১ , পৃ : ১৭১ ) , প্রকাশক : দারুল ফিকর , বৈরুত , লেবানন , প্রকাশ কাল : ১৯৯২ খ্রী: ( ১৪১৪ হি. ) ))

أَنَسُ بْنُ الْحَارِثِ . عِدَادُهُ فِيْٓ أَهْلِ الْکُوْفَةِ ، رَوَیٰ حَدِيْثَهُ أَشْعَثُ بْنُ سحيمٍ ، عَنْ أَبِيْهِ عَنْهُ ( أَنَسِ بْنِ الْحَارِثِ - رض - ) أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ - ص - يَقُوْلُ : إِنَّ ابْنِيْ هٰذَا يُقْتَلُ بِأَرْضٍِ مِنْ أَرْضِ الْعِرَاقِ ، فَمَنْ أَدْرَکَهُ فَلْيَنْصُرْهُ ، فَقُتِلَ مَعَ الْحُسَيْنِ رَضِيَ اللّٰهُ عَنْهُ .

শুধু তাই নয় শাহাদাতের দিন ( ৬১ হিজরীর ১০ মুহররম ) অর্থাৎ যে সময় ইমাম হুসাইনকে ( আ:) শহীদ করা হচ্ছিল ঠিক সেই মুহূর্তে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সা:) নিজে কারবালায় উপস্থিত ছিলেন ; তাঁর চুল ও দাড়ি মুবারক ছিল এলোমেলো ও ধূলাবালি মাখানো ( ধূলাধূসরিত ) এবং একটি কাঁচের শিশিতে ( ক্বারূরাহ ) নিজ হাতে ইমাম হুসাইন ( আ:) ও তাঁর সঙ্গী সাথীদের রক্ত সংগ্রহ করেছেন আল্লাহ পাকের দরবারে ঐ সব জঘন্য পাপিষ্ঠ কাতিল ও ঘাতকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেশ করার জন্য ।

১১শ হাদীস :

সহীহ তিরমিযী ( হাদীস নং ৩৭৮০, পৃ : ৯৮৯ ) , তাহযীবুত তাহযীব ( খ : ২ , পৃ : ৩৫৬ ) এবং উসদুল গাবায় ( খ : ১ , পৃ : ৫৭১ ) সালমা থেকে বর্ণিত : তিনি ( সালমা ) বলেন : আমি হযরত উম্মে সালামার (নবীপত্নি উম্মুল মু'মিনীন) ( রা:) কাছে প্রবেশ করি ঐ অবস্থায় যে তখন তিনি কাঁদছিলেন । আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম : আপনি কী কারণে কাঁদছেন ? তখন তিনি বললেন : আমি ( স্বপ্নে ) মহানবীকে ( সা :) তাঁর মাথায় ও দাঁড়িতে মাটি মাখা অবস্থায় দেখে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম : " হে রাসূলুল্লাহ , আপনার এ অবস্থা কেন ? " তিনি ( সা:) বললেন : " আমি এই কিছুক্ষণ আগে হুসাইনের শাহাদাত বরণ প্রত্যক্ষ করেছি ।"

১২ শ হাদীস:

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত : তিনি বলেন : আমি দিনের বেলায় স্বপ্নে মহানবীকে ( সা:) দেখলাম যে তাঁর চুল ও দাড়ি মুবারক এলোমেলো ও ধূলাবালি মাখানো ( ধূলাধুসরিত ) এবং তাঁর হাতে আছে একটি কাঁচের শিশি যা রক্ত দিয়ে পূর্ণ । আমি তাঁকে বললাম : " হে রাসূলুল্লাহ , আপনার জন্য আমার পিতা মাতা উৎসর্গ হোক ; এটা কী ? " তিনি বললেন : এটা হুসাইন ও তাঁর সঙ্গী সাথীদের রক্ত । আজ থেকে আমি এই রক্ত সংগ্রহ করেই যাচ্ছি । " অত:পর ইবনে আব্বাস ( রা :) দিনটা হিসাব করে দেখলেন যে ঐ দিনই তিনি ( হুসাইন ) শহীদ হয়েছেন । ( দ্র : তাহযীবুত তাহযীব খ : ২ ,পৃ : ৩৫৫ ;

আল - ইস্তী'আব , খ: ১ , পৃ : ২৩৭ ; উসদুল গাবাহ , খ: ১ , পৃ : ৫৭১ ; আল বিদিয়াহ ওয়ান নিহায়াহ , খ : ৮ , পৃ: ২২০৬ ; তারীখুল খামীস , খ : ২ , পৃ: ৩০০ )

সুতরাং কারবালায় ইমাম হুসাইন ( আ:) ও তাঁর সঙ্গীসাথীদের শাহাদাতের সময় এই পাপিষ্ঠ গাদ্দার উম্মত সবাই কূফা , মক্কা - মদীনা এবং ( ইসলামী বিশ্বের ) অন্যান্য শহর ও নগরে নির্বিকার বসে ছিল এবং মযলূম ইমাম হুসাইনকে ( আ:) সাহায্য করে নি । তাহলে এই গাদ্দার উম্মত কি ঐ বেহেশতে প্রবেশের আশা করেছে যার অধিবাসীরা যুবক হবে না বরং হবে বৃদ্ধ ও প্রৌঢ় !! এমন বেহেশত কি আছে ?! এটা কি বেহেশত না জাহান্নাম ? আসলে এ ধরণের গর্হিত ও ন্যাক্কার জনক কাজ করে ( অর্থাৎ ইমাম হুসাইন - আ : - কে সাহায্য করা থেকে বিরত থেকে ও মুখ ফিরিয়ে নিয়ে ) এই গাদ্দার উম্মত মহানবী ( সা:) ও তাঁর আহলুল বাইতের শাফায়াত পাওয়ার যোগ্যতাই হারিয়েছে । খুবই আশ্চর্য জনক বরং দু:খজনক হচ্ছে যে পবিত্র মদীনা ও মক্কাবাসীরা ইয়াযীদকে খলিফা হিসেবে মেনে নিয়েছিল ও বাইআত করেছিল বিধায় তারা ইমাম হুসাইন কে ( আ:) সাহায্য করেনি , ইয়াযীদ ও বনী উমাইয়া খিলাফত ও প্রশাসনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে বহিষ্কার অথবা বন্দী করেনি অথবা ইমাম হুসাইনের ( আ:) সাথে কূফায়ও যায় নি । অথচ তাদের থাকা উচিত ছিল বেহেশতের যুবকদের নেতা ইমাম হুসাইনের ( আ :) সাথে ; তাঁকে সর্বতভাবে সাহায্য করা ছিল তাদের কর্তব্য ও শরয়ী দায়িত্ব ( ওয়াজিব ) । কূফার যারা ইমাম হুসাইন কে ( আ:) আমন্ত্রণ জানিয়েছিল তাদের মধ্য থেকে যারা তাঁকে সাহায্য করে নি এবং প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ

করেছিল নি:সন্দেহে তারাও জঘন্য অন্যায় ও পাপ করেছিল এবং নিষ্ঠার সাথে তওবা করা ব্যতীত আহলুল বাইতের শাফায়াত পাওয়া ও বেহেশতে যাওয়ার যোগ্যতাই তারা হারিয়ে ফেলেছিল । …চলবে…

تبصرہ ارسال

You are replying to: .