۹ اردیبهشت ۱۴۰۳ |۱۹ شوال ۱۴۴۵ | Apr 28, 2024
আশুরার দিবসে ইমাম হুসাইনের ( আ :) শাহাদাত
আশুরার দিবসে ইমাম হুসাইনের ( আ :) শাহাদাত

হাওজা / আশুরার দিবসে ইমাম হুসাইনের ( আ :) শাহাদাত , গাদ্দার বিশ্বাস ঘাতকদের থেকে প্রকৃত মুসলিম উম্মাহকে শনাক্ত করার মাপকাঠি ।

মুহাম্মাদ মুনীর হুসাইন খান (মুহররম, ১৪৪৪ হি.)

পর্ব ৭- হাদীসে সাকালাইন সংক্রান্ত কিছু তথ্য ও আলোচনা :

হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ বলেন : আমি রাসূলুল্লাহকে ( সা: ) বিদায় হজ্জে আরাফাতের দিবসে ( ৯ যিল হজ্জ ) কাসওয়া নাম্নী উষ্ট্রীর উপর উপবিষ্ট অবস্থায় ভাষণ দিতে দেখেছি এবং তাঁকে বলতে শুনেছি : হে লোক সকল , নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মাঝে যা রেখে গেলাম তা যদি তোমরা ধরে রাখ তাহলে তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট হবে না ; আর তা হচ্ছে : মহান আল্লাহর গ্রন্থ ( কিতাবুল্লাহ : আল - কুরআন ) এবং আমার অতিনিকট আত্মীয় ও রক্তজ বংশধর ( ইতরাত ) আমার আহলুল বাইত । তিরমিযী বলেন : এ অনুচ্ছদে আবূ যর , আবূ সাঈদ , যাইদ ইবনে আরকাম এবং হুযাইফা ইবনে উসাইদ থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে । স্মর্তব্য যে , এই হাদীস - ই সাকালাইন সহীহ , মুতাওয়াতির ও শিআ সুন্নী নির্বিশেষে সকল ইসলামী ফির্কা ও মাযহাবের কাছে গৃহীত ( মকবূল ) হাদীস ।

عن جابر بن عبدالله قال : رأیتُ رسولَ اللّٰه - ص - في حجّته یومَ عرفةَ و هو علیٰ ناقته القصویٰ یخطب ، فسمعته یقولُ : یَا أَیُّهَا النَّاسُ إِنِّيْ قَدْ تَرَکْتُ فِیْکُمْ مَا إِنْ أَخَذْتُمْ بِهِ لَنْ تَضِلُّوْا بَعْدِيْ : کِتَابَ اللّٰهِ وَ عِتْرَتِيْ أَهْلَ بَیْتِيْ .

قَالَ : وَ فِي الْبَابِ عَنْ أَبِيْ ذَرٍّ وَ أَبِيْ سَعِیْدٍ وَ زَیْدِ بْنِ أَرْقَمَ وَ حُذَیْفَةَ بْنِ أُسَیْدٍ.

( দ্র : সহীহ সুনান আত - তিরমিযী , অধ্যায় ৩২ : রাসূলুল্লাহর - সা: - আহলুল বাইতের - আ: - মানাকিব , হাদীস নং ৩৭৯৪ , পৃ : ৯৯১ , প্রথম সংস্করণ , প্রকাশক : দার ইহয়াইত তুরাস আল আরাবী , বৈরুত লেবানন ).

যাইদ ইবনে আরকামের রিওয়ায়ত:

ইমাম হুসাইন ( আ:) বিশেষ অর্থে মহানবীর ( সা:) পবিত্র আহলুল বাইতের (আ:) অন্তর্ভুক্ত :

বিশেষ অর্থে ( - যা হচ্ছে পবিত্র কুরআনের পরিভাষা সেই পারিভাষিক অর্থে - ) মহানবীর ( সা:) পবিত্র আহলুল বাইতের অন্তর্ভুক্ত যে হযরত আলী ( আ: ) , হযরত ফাতিমা ( আ:) , ইমাম হাসান ( আ:) এবং ইমাম হুসাইন ( আ:) যাদেরকে মহান আল্লাহ পবিত্র করেছেন তা এবং নবীপত্নিরা যে এই বিশেষ অর্থে আহলুল বাইতের অন্তর্ভুক্ত নন তা মুতাওয়াতির হাদীসে কিসায় ( চাদরের হাদীস ) বর্ণিত হয়েছে এবং মুবাহালার আয়াতের ( সূরা - ই আল - ই ইমরান : ৬১ ) শা'নে নুযূলে মহানবী (সা:) থেকে যে সব হাদীস বর্ণিত হয়েছে সেগুলো থেকে এ বিষয়টি অর্থাৎ মহানবীর আহলুল বাইত যে কেবল আলী , ফাতিমা , হাসান ও হুসাইন ( আ:) তা স্পষ্ট হয়ে যায় :

উমর ইবনে আবী সালামাহ মহানবীর ( সা:) রাবীব ( সপত্নি পুত্র , কারণ তিনি ছিলেন আবূ সালামাহ ও নবীপত্নি উম্মে সালামাহর পুত্র সন্তান ) বলেন : নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক চান হে ( নবীর - সা: - ) আহলুল বাইত তোমাদের থেকে পাপ পঙ্কিলতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পবিত্র করার মত পবিত্র করতে ( সূরা - ই আহযাব : ৩৩ ) - এ আয়াতটি উম্মে সালামাহর ঘরে মহানবীর ( সা:) উপর অবতীর্ণ হয় । অত:পর মহানবী ( সা:) ফাতিমা , হাসান , হুসাইনকে ডেকে তাঁদেরকে একটি চাদর ( কিসা ) দিয়ে ঢেকে দেন ; আর আলী ছিলেন তাঁর পিছনে এবং তাঁকেও চাদর দিয়ে ঢেকে দিলেন । এরপর তিনি ( সা:) বললেন : " হে আল্লাহ , এরাই আমার আহলুল বাইত । অত:পর তাদের থেকে সব রিজস ( পাপ - পঙ্কিলতা , নাপাকী , মন্দ কাজ , অপকর্ম , নোংরামি , অপরিচ্ছন্নতা) দূর এবং তাদেরকে পবিত্র করার মতো ( অর্থাৎ সম্পূর্ণ রূপে ) পবিত্র করে দিন । " তখন উম্মে সালামাহ বললেন : " হে আল্লাহর নবী , আমিও কি এঁদের সাথে আছি ? " মহানবী ( সা:) বললেন : " তুমি তোমার স্থানে আছ

( অর্থাৎ তুমি এঁদের অন্তর্ভুক্ত নও বরং তুমি নবীপত্নিদের অন্তর্ভুক্ত ।) এবং তুমি আমার প্রতি ভালো ( তুমি আমার কাছে ভালো ) ।

তিরমিযী বলেন : এ অনুচ্ছদে উম্মে সালামাহ , মা'ক্বিল ইবনে ইয়াসার , আবুল হামরা এবং আনাস থেকেও অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে । দ্র : সহীহ সুনান আত - তিরমিযী , ৩২ অধ্যায় : মহানবীর (সা:) আহলুল বাইতের ( আ:) মানাক্বিব সংক্রান্ত , কিতাবুল মানাক্বিব , হাদীস নং ৩৭৯৬ , পৃ : ৯৯২ , প্রকাশক : দার ইহয়াইত তুরাস আল - আরাবী , বৈরুত , লেবানন , প্রথম সংস্করণ )

হযরত উম্মে সালামাহ থেকে বর্ণিত যে মহানবী (সা:) হাসান , হুসাইন , আলী ও ফাতিমার উপর একটি চাদর ( কিসা ) টেনে দিয়ে বললেন : " হে আল্লাহ এরাই আমার আহলুল বাইত এবং অতি নিকটতম আত্মীয় , ঘনিষ্ঠ ও বিশিষ্ট ব্যক্তি ; তাঁদের থেকে সব রিজস ( নাপাকী , পাপ - পঙ্কিলতা , অপবিত্রতা ও নোংরামি ) দূর করে পবিত্র করার মতো ( সম্পূর্ণ রূপে ) পবিত্র করে দিন । " অত:পর

উম্মে সালামাহ বললেন : " হে রাসূলুল্লাহ ( সা :) , আর আমিও কি তাদের সাথে আছি ? " তখন তিনি ( সা:) বললেন : " নিশ্চয়ই তুমি কল্যাণ ও মঙ্গলের মধ্যেই আছ ( তবে তুমি এদের অন্তর্ভুক্ত নও ) ।"

তিরমিযী বলেন : এ হাদীসটি হাসান এবং এতদসংক্রান্ত মত হাদীস বর্ণিত হয়েছে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর ( উত্তম অর্থাৎ হাসান ) । আর এই অনুচ্ছদে উমর ইবনে আবী সালামাহ , আনাস ইবনে মালেক , আবূল হামরা , মা'ক্বিল ইবনে ইয়াসার ও আয়েশা থেকেও হাদীস বর্ণিত হয়েছে ।

(দ্র : প্রাগুক্ত সহীহ সুনান আত - তিরমিযী , হাদীস নং ৩৮৭৯ , পৃ : ১০০৭ , হযরত ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদ - সাল্লাল্লাহু আলাইহিমা ওয়া সাল্লাম এর ফযীলত অধ্যায় , কিতাবুল মানাক্বিব )

মহানবীর - সা: - রাবীব ( অর্থাৎ সপত্নিপুত্র যিনি নবীপত্নি হযরত উম্মে সালামাহর পুত্র ) উমর ইবনে আবী সালামাহ বলেন : নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ চান হে ( নবীর - সা: - ) আহলুল বাইত তোমাদের থেকে সব রিজস ( পাপ - পঙ্কিলতা , অপবিত্রতা , নোংরামি ) দূর করতে এবং তোমাদেরকে পবিত্র করার মতো ( সম্পূর্ণ রূপে ) পবিত্র করতে ( সূরা - ই আহযাব : ৩৩ ) - এ আয়াতটি যখন উম্মে সালামাহর ঘরে মহানবীর ( সা:) উপর অবতীর্ণ হয় তখন তিনি ফাতিমা , হাসান ও হুসাইনকে ডেকে তাদেরকে একটি চাদর দিয়ে ঢেকে দিলেন। আর আলী ছিলেন তাঁর পিছনে এবং তাঁকেও চাদর দিয়ে ঢাকলেন । অত:পর তিনি বললেন : " হে আল্লাহ , এরাই আমার আহলুল বাইত । এদের থেকে সব রিজস ( নাপাকী, নোংরামি , পাপ- পঙ্কিলতা ও অপবিত্রতা ) দূর করে পবিত্র করার মতো ( সম্পূর্ণ রূপে ) পবিত্র করে দিন । " উম্মে সালামাহ বললেন : " ইয়া নবীয়াল্লাহ (হে আল্লাহর নবী ) , আর আমিও কি তাদের সাথে আছি ? " তিনি ( সা:) বললেন : " তুমি তোমার স্থানে আছ । তুমি কল্যাণের উপরই আছ । ( অর্থাৎ তুমি নবীপত্নিদের অন্তর্ভুক্ত ; তবে তুমি এদের - আহলুল বাইত - অন্তর্ভুক্ত নও । ) "

দ্র : প্রাগুক্ত সহীহ সুনান আত তিরমিযী , পবিত্র কুরআনের তাফসির অধ্যায , অনুচ্ছেদ ৩৪ : সূরা- ই আহযাব সংক্রান্ত , হাদীস নং ৩২০৫ , পৃ : ৮৫৪ - ৮৫৫ )

আর আল - আওযায়ী শাদ্দাদ ইবনে আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণনা করেছেন : তিনি ( শাদ্দাদ ) বলেন : আমি সাহাবী হযরত ওয়াসিলাহ ইবনুল আসক্বা'কে বলতে শুনেছি ঐ অবস্থায় যখন ( ইমাম) হুসাইনের ( আ:) এর শির মুবারক আনা হয় ; তখন শামের অধিবাসী ( বাসিন্দা ) এক ব্যক্তি তাঁকে ( ইমাম হুসাইন ) এবং তাঁর পিতাকে ( হযরত আলী - আ: -) লানত ( অভিশাপ ) দিলে তিনি ( ওয়াসিলা ) বললেন : মহান আল্লাহর কসম , আমি আলীকে , হাসানকে , হুসাইনকে এবং ফাতিমাকে এখনও ভালবাসি তখন থেকে যখন রাসূলুল্লাহকে ( সা:) তাঁদের ব্যাপারে যা বলেছিলেন তা শোনার পর । আমি একদিন হযরত উম্মে সালামাহর গৃহে নবী করিমের (সা:) কাছে যাই । অত:পর হাসান আসলে তাঁকে তিনি তাঁর গান উরুর উপর বসিয়ে চুম্বন করলেন ; এরপর হুসাইন আসলে তাঁকে বাম উরুর বসিয়ে চুম্বন করলেন ; এরপর ফাতিমা আসলে তাঁকে তিনি তাঁর সামনে বসালেন ; এরপর তিনি আলীকে ডেকে আনালেন ও বললেন : নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ চান তোমাদের থেকে হে আহলুল বাইত সব রিজস ( নাপাকী , অপবিত্রতা , পাপ- পঙ্কিলতা ও নোংরামি দূর করে তোমাদেরকে পবিত্র করার মতো ( পূর্ণ রূপে ) পবিত্র করতে ( সূরা - আহযাব : ৩৩ ) । আমি ওয়াসিলাকে জিজ্ঞেস করলাম : রিজস কী ? তিনি বললেন : মহান আল্লাহর ব্যাপারে সন্দেহ - সংশয় পোষণ ।

আবূ আহমদ আল - আস্কারী বলেন : বলা হয় যে আল - আওযায়ী ( আহলুল বাইত : আলী , ফাতিমা , হাসান ও হুসাইনের ) ফাযায়েলে ( উন্নত ভালো মহৎ গুণাবলী ) এ হাদীসটি ছাড়া আর কিছুই বর্ণনা করেন নি , আর মহান আল্লাহই উত্তমরূপে জ্ঞাত আছেন । তিনি ( আল - আস্কারী ) বলেন : আর যুহরীও (তাঁদের ) ফাযায়েল সংক্রান্ত কেবল একটি হাদীসই বর্ণনা করেছেন । কারণ তাঁরা দুজনই ( আল - আওযায়ী ও যুহরী ) বনী উমাইয়াকে ভয় করতেন । (( দ্র : ইবনুল আসীর আল - জাযারী (৫৫৫ - ৬৩০ হি ) প্রণীত উসদুল গাবাহ ফী মা'রিফাতিস সাহাবা , খ : ১ , পৃ : ৫৬৮ - ৫৬৯ , প্রকাশক : দারুল ফিকর , বৈরুত , লেবানন , প্রকাশ কাল : ১৯৯২ খ্রী: ( ১৪১৪ হি: ) ))…চলবে…

تبصرہ ارسال

You are replying to: .