۲۹ اردیبهشت ۱۴۰۳ |۱۰ ذیقعدهٔ ۱۴۴۵ | May 18, 2024
ইরানের নির্মিত ড্রোন
ইরানের নির্মিত ড্রোন

হাওজা / খবর : ব্রিটিশ ইন্টেলিজেন্স (গোয়েন্দা সূত্র ) ইউক্রিনফর্মের বরাত দিয়ে জানিয়েছে : " ইরানের নির্মিত ইউএভি ( ড্রোন ) সমূহ পরাজিত করতে ইউক্রেনের প্রচেষ্টাসমূহ ক্রমবর্ধমান হারে সফল হচ্ছে । "

মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, https://www.ukrinform.net/rubric-ato/3599640-ukrainian-efforts-to-defeat-iranianmade-uavs-increasingly-successful-british-intelligence.html ব্রিটিশ গোয়েন্দা সূত্রের এ খবরটি সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক কিছু কথা:

ইউক্রেন যদি ইরানী ইউএভিকে ডিফিট দিতে ( পরাজিত করতে) পারে তাহলে মহাশক্তিধর আমেরিকান সেন্টকম মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ইউএভিকে কেন ডিফিট দিতে পারে নাই ? স্বয়ং সেন্টকম প্রধান জেনারেল ম্যাককেইনযি মার্কিন সিনেটে এক শুনানিতে ২০২১ সালের এপ্রিলে সাক্ষ্যদানকালে কেন বলেছিলেন : " কোরিয়া যুদ্ধের পর এই প্রথম বারের মতো বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এয়ার পাওয়ার সুপেরিওটি ( বিমান শক্তির প্রাধান্য ও শ্রেষ্ঠত্ব) ইরানী ইউএভির কাছে নষ্ট হয়ে গেছে ও ভেঙ্গে পড়েছে । " ম্যককেইনযি আরো বলেছিলেন যে তারা ( মার্কিন সেন্টকম ফোর্স ) মধ্যপ্রাচ্যে ইরানী ইউএভির ক্রমবর্ধমান ও নিরবচ্ছিন্ন হামলার শিকার হচ্ছেন । যদি ইরান ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়াকে ইউএভি দিয়ে থাকে এবং ইউক্রেন যদি তা ধ্বংস করতে সক্ষম হয় তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেন্টকম ফোর্স ইরানী ইউএভির হামলার মোকাবেলায় এতটা ব্যর্থ ও কাতর কেন ? এর অর্থ হচ্ছে যে সামরিক শক্তিতে ইউক্রেনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও শ্রেষ্ঠ বলা উচিত। কারণ যে কাজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র করতে পারে নি তা ইউক্রেন করে দেখালো আর কি !!?

এখন ইউক্রেনের কাছ থেকে ড্রোন বিধ্বংসী প্রযুক্তি ক্রয় বা ধার করে এনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে ইরানী ইউএভির বিরুদ্ধে ব্যবহার করে তার হারানো বিমান শক্তির প্রাধান্য ও শ্রেষ্ঠত্ব পুনরুদ্ধার করতে পারবে !!!!

জেনারেল ম্যাককেনযির উচিত কালবিলম্ব না করে এক্ষুনি কিয়েভে গিয়ে ইউক্রেনের কাছ থেকে ইউএভি বিধ্বংসী প্রযুক্তি সংগ্রহ করা !!!

ব্রিটিশ ইন্টেলিজেন্স সার্ভিসের খুঁচিয়ে বের করা উচিত ছিল যে কেন মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেন্টকম ফোর্স ইরানী ইউএভির হামলার মোকাবেলায় এত দিশাহারা , উদ্ভ্রান্ত , ব্যর্থ ও কাতর ?!!!

যদি রাশিয়ার এ সব ড্রোন ধীর বা কম গতি সম্পন্ন ( slow ) , noisy ( বিকট শব্দ বা আওয়াজ সৃষ্টিকারী ) এবং স্বল্প উচ্চতায় অর্থাৎ নীচু উচ্চতা দিয়ে উড়ে এবং এ সব কারণে ( ইউক্রেনীয় সরকারী সূত্রসমূহ এবং স্বয়ং প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির দাবি অনুযায়ী ) ইউক্রেন ৮৫% ড্রোন হামলা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে, তাহলে এই একই বৈশিষ্ট্য সমূহ থাকা সত্ত্বেও মধ্যপ্রাচ্যে ইরানী ড্রোন হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হল কেন মার্কিন সেন্টকম ফোর্স এবং মার্কিন সিনেটে শুনানি কালে জেনারেল ম্যাককেইনযির সাক্ষ্যে কোরিয়া যুদ্ধের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই প্রথম বারের মত কেন বিশ্বে বিমান শক্তির শ্রেষ্ঠত্ব হারাল ইরানী ইউএভির কাছে ? ইউক্রেনে ব্যবহৃত কথিত ইরানী ড্রোনের বর্ণিত বৈশিষ্ট্য বা দুর্বল দিক গুলো তো মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেন্টকমের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত ইরানী ইউএভিরও থাকার কথা এবং এতদসত্ত্বেও কেন মার্কিন সেন্টকম ফোর্স কর্তৃক ঐ সব ইউএভির অন্তত ৮৫% তো ফেলে দেওয়ার কথা ; আর তাহলে কেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান শক্তির শ্রেষ্ঠত্ব বজায় থাকল না ?!!! তাই আমরা কার কথা বিশ্বাস করব ? জেনারেল ম্যাককেনযির সাক্ষ্য না ইউক্রেনের দাবির ভিত্তিতে ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য ?!!!

ইউক্রেনের এ দাবির সত্যতা কি ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যথার্থ নিরপেক্ষ যাচাই ও অনুসন্ধানের ভিত্তিতে প্রমাণিত , নিরূপিত ও সমর্থিত হয়েছে ?!!

আর তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেই যে ইউক্রেন রাশিয়ার ড্রোন সমূহের ৮৫% ধ্বংস করেছে তাহলে বলতে হবে যে অন্ততঃ ১৫% ড্রোন বেশির ভাগ লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে ; আর এটা হয়ে থাকলে ইউক্রেনের মারাত্মক ক্ষতিই হয়ে গেছে । আর এ ক্ষয়ক্ষতি যে ইউক্রেনের হয়েছে তা বিগত কয়েক দিনের খবর গুলোয়ও স্পষ্ট বর্ণিত হয়েছে ।

আর স্বল্প উচ্চতায় উড়লে রাডার ফাঁকি দেওয়া সম্ভব । ধীর গতিতে চলার কারণে টার্গেটে সঠিক ভাবে হামলাও সম্ভব যদিও শত্রুর গোলার আঘাতে ভূপাতিত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় । তবে এক সঙ্গে বেশ কয়েকটি ড্রোন ব্যবহার করলে টার্গেট সম্পূর্ণ ধ্বংস করা যায় অনেকটা নিশ্চিত ভাবেই। আর রাশিয়া খুব সম্ভবত অতি স্বল্প মূল্যের ঝাঁকে ঝাঁকে খেলনা ড্রোন পাঠিয়ে ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষার গোলাবারুদ খামাখা খরচ করিয়েছে যেন মশা মারতে কামান দাগানোর মতো। যখন ইউক্রেনের বিমান বিধ্বংসী বা আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিট গুলোর গোলাবারুদ ইত্যাদি নি:শেষ হয়ে গেছে অর্থাৎ ফুরিয়ে গেছে ব্যস তখন সত্যিকার বিধ্বংসী ড্রোন পাঠিয়ে টার্গেট ধ্বংস করেছে রাশিয়া। সুক্ষ্ম ও নিখুঁত ভাবে আঘাত কারী দামী মিসাইলের স্বল্পতা নয় বরং সস্তা অথচ কার্যকর ড্রোন থাকতে তা কেন রাশিয়া ব্যবহার করবে না ? আর আত্মঘাতী ড্রোন তো নিজে ধ্বংস হওয়ার পাশাপাশি টার্গেটও ধ্বংস করে ।

ইউক্রেনের ভাঁড় প্রেসিডেন্ট ও ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আঘাত করে টার্গেট সমূহ ধ্বংস করেছিল যে সব আত্মঘাতী ড্রোন সেগুলোও ভূপাতিত ড্রোন সমূহের অন্তর্ভুক্ত করে দাবি করেছে যে রাশিয়ার অধিকাংশ ইউএভি তারা ধ্বংস করেছে এবং সেই দাবি ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও ফলাও করে প্রচার করে দেখাতে চাচ্ছে যে ইরানী ড্রোনগুলো কাজের না এবং ইউক্রেন সেগুলো ধ্বংস ও ভূপাতিত করতে অত্যন্ত সফল । কারণ , ব্রিটেন সহ সকল পশ্চিমা দেশগুলো বেশ কয়েক দিন ধরে বলে বেড়াচ্ছিল যে ইরান নাকি রাশিয়াকে ড্রোন দিয়েছে যা ইরান ও রাশিয়া উভয়েই অস্বীকার করেছে । কিন্তু পশ্চিমাদের এ অপপ্রচারে আসলে ইরানের ড্রোন শক্তি ও ইরানী ড্রোনগুলোর নামডাকও প্রচারিত হয়ে যায় বিশ্ব জুড়ে। কারণ রাশিয়ার মতো পরাশক্তি ইরানী ড্রোন ব্যবহার করছে ! আর এতে করে স্বাভাবিক ভাবেই বহু দেশ এখন আগ্রহী হবে ইরানী ড্রোন কিনতে যার ফলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার শিকার ইরানের অর্থনীতি বেশ চাঙ্গা হতে পারে। তাই বিশ্বের দেশগুলো ইরানী ড্রোনের কাছে না ভীড়ে সেজন্যই এখন বাধ্য হয়ে বুড়ো শয়তান ব্রিটেন এ ধরনের প্রচারণায় নেমেছে যার অসারতা ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়ে গেছে।

ইরান বহুবার স্পষ্ট করে বলেছে যে সে রাশিয়ার কাছে যুদ্ধ ড্রোন বিক্রি করে নি এবং রাশিয়াও বলেছে ইরান থেকে সে ড্রোন ক্রয় করে নি । যে সব ড্রোন ইউক্রেনে ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো রাশিয়ার তৈরি ।

অতএব পশ্চিমাদের বিশেষ করে ব্রিটেনের এ সব অপপ্রচারে কর্ণপাত না করা । এখন পশ্চিমারা বিশেষ করে ব্রিটেন হরেক রকমের গুজব ও উড়া ভিত্তিহীন খবর রটনা করবে সাম্রাজ্যবাদী লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য চারিতার্থ্য করতে । তাই সাবধান থাকতে হবে সবাইকে।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .