হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, মাজমা-এ-জাহানি আহলে বাইতের সাধারণ সম্পাদক আয়াতুল্লাহ রেজা রমজানি বলেছেন: আহলে বাইতের শিক্ষা যৌক্তিকতা, ন্যায়বিচার ও যুক্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত।
আয়াতুল্লাহ রেজা রমজানি ইরান কালচার হাউস, নয়াদিল্লিতে আহলুল বাইত কাউন্সিল ইন্ডিয়া আয়োজিত ৭ম জনসভায় বক্তৃতাকালে এ কথা বলেন যে পৃথিবীর প্রতিটি দেশে আহলে বাইতের (আ.) অনুসারীদের উপস্থিতি আহলে বাইতের চিন্তা, যৌক্তিকতা, নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের ফল, এই যুক্তি সমস্ত মানবজাতির কাছে গ্রহণযোগ্য।
তিনি বলেন: আহলে বাইত (আ.) সম্পর্কে আমরা বিশ্বাস করি যে, তারা শুধু শিয়া বা সুন্নিদেরই ইমাম নয়, সমগ্র মানবতার ইমাম এবং তাদের শিক্ষা সমগ্র মানবতার জন্য। যেমনটি নাহজুল-বালাগায় আছে যে, ইমাম আলী তাঁর পুত্র ইমাম হাসানকে বলেছিলেন: তুমি নিজের জন্য যা পছন্দ করো, অন্যের জন্য পছন্দ করো এবং যা তোমার নিজের জন্য অপছন্দ করো, অন্যের জন্য তা অপছন্দ করো।
বিশ্ব আহলে বাইত (আ.) সমাবেশ বিশ্ব পর্যায়ে আহলে বাইত (আ.) এর জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সেবা প্রদান করছে এবং এ ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতার জন্য উপস্থিত রয়েছে।
এই বৈঠকে ভারতে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সৈয়দ আলী খামেনির প্রতিনিধি জনাব মাহদি মাহদাবীপুর মানব সমাজের দিকনির্দেশনা ও নেতৃত্বের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রাসুল (স.) এর হাদিস উদ্ধৃত করেন, হে আলী, যদি একজন ব্যক্তি তোমার দ্বারা হিদায়েত পায়, তবে এটি সূর্যের আলোর চেয়ে উত্তম।
মাওলানা সৈয়দ শামীমুল হাসান বলেন: স্পষ্টতই ধর্মবিরোধী যেকোনো কিছুর বিরোধিতা করা আমাদের কর্তব্য।
জামিয়া নাজমিয়া লখনউয়ের প্রধান মাওলানা সৈয়দ হামিদুল হাসান বলেন যে আহলে বাইতের (আ.) মাযহাব আশুরা এবং ইমাম হোসাইনের ব্যক্তিত্বের সাথে চিহ্নিত করা হয়।তাই কারবালার শিক্ষাকে হেদায়েতের উৎস হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। মাওলানা সৈয়দ সাফি হায়দার বলেন: তাবলিগ দ্বীনের পথে প্রতিকূলতা-কষ্টকে পরোয়া না করাই সফলতার রহস্য।
জামিয়া আমীরুল মুমিনীন মুম্বাইয়ের প্রধান মাওলানা আহমাদ আলী আবিদি তার বক্তব্যে বলেন যে কোনো জাতির উন্নতি শিক্ষার ওপর নির্ভর করে।তাই শিক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতি করা উচিত, দিল্লির শিয়া জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মহসিন তাকভি তার বক্তৃতায় ইরান ও ভারতের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্কের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং আহলে বাইত কাউন্সিল ইন্ডিয়ার ধর্মীয় সেবার প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন: এই প্রতিষ্ঠানটি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কমিটির মাধ্যমে দেশে তাদের একাডেমিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
সভার শুরুতে আহলুল বাইত কাউন্সিল ইন্ডিয়ার সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ রেজা গরভী অতিথি আলেম ও বুদ্ধিজীবীদের স্বাগত জানান এবং পরিষদের তিন বছরের খেদমত ও কর্মক্ষমতা প্রতিবেদন পেশ করেন।এ উপলক্ষে বিশ্ব আহলে বাইত সমাবেশের সহায়তায় প্রকাশিত ৪৫টি বই প্রকাশ করা হয়।
জনসভায় সারা দেশের ১৫টিরও বেশি প্রদেশের আলেম ও বুদ্ধিজীবীরা উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ করে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের রাষ্ট্রদূত কবির আগা ডক্টর ইরাজ এলাহী এবং কালচারাল কাউন্সেলর ডাঃ আলী রব্বানীসহ বিপুল সংখ্যক আলেমগণ অংশগ্রহণ করেন।
সভা শেষে আহলে বাইত কাউন্সিল ইন্ডিয়ার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জালাল হায়দার নাকভী আড়াই শতাধিক আলেমের উপস্থিতিকে জনপ্রিয়তার নিদর্শন হিসেবে বর্ণনা করে উপস্থিত ও দূর-দূরান্ত থেকে আগত আলেমদের ধন্যবাদ জানান।