۹ آذر ۱۴۰۳ |۲۷ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 29, 2024
৩ শাবান হযরত আবু আব্দিল্লাহ হুসাইন ইবনে আলীর ( আ ) শুভ জন্মদিন
৩ শাবান হযরত আবু আব্দিল্লাহ হুসাইন ইবনে আলীর ( আ ) শুভ জন্মদিন

হাওজা / ৩ শাবান হযরত আবু আব্দিল্লাহ হুসাইন ইবনে আলীর ( আ ) শুভ জন্মদিন। শাবান মাসের এই আনন্দঘন শুভ দিনে সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও তাব্রীক ( অভিনন্দন ) । মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান (৩ শাবান ১৪৪৪ হি .)

হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, পর্ব ১- ৩ শাবান মহানবীর (সা) দ্বিতীয় দৌহিত্র ( নাতি ) বেহেশত বাসী যুবকদের নেতা , মানবজাতির নাজাতের ( মুক্তি) তরী ( سفینة النجاة সফীনাতুন নাজাত ) , হিদায়তের প্রদীপ ( মিসবাহুল হিদায়াহ্ مصباح الهدایة ) হযরত মুহাম্মদের ( সা ) পবিত্র আহলুল বাইতের ( আ ) বারো মাসূম ইমামের তৃতীয় মাসূম ইমাম সাইয়িদুশ শুহাদা ( শহীদদের নেতা ) হযরত আবু আব্দিল্লাহ হুসাইন ইবনে আলীর ( আ ) শুভ জন্মদিন। শাবান মাসের এই আনন্দঘন শুভ দিনে সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও তাব্রীক ( অভিনন্দন ) ।

আমরা এখানে বরকতের জন্য ইমাম হুসাইনের (আ) গুটিকয়েক ফযীলত ( শ্রেষ্ঠত্ব ব্যাঞ্জক মহৎ গুণ ও বৈশিষ্ট্য ) উল্লেখ করছি :

১. এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা)কে প্রশ্ন করল : " আপনি কি এ দুজনকে ( ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন - আ - ) ভালোবাসেন ? " অত:পর তিনি ( সা ) বললেন : হ্যাঁ , যে ব্যক্তি তাদেরকে ( ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন - আ - ) ভালোবাসে সে আমাকেই ভালোবাসে এবং যে ব্যক্তি তাদেরকে ( ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন - আ - ) ঘৃণা করে সে আমাকেই ঘৃণা করে ।

نَعَمْ ، مَنْ أَحَبَّهُمَا فَقَدْ أَحَبَّنِيْ ، وَ مَنْ أَبْغَضَهُمَا فَقَدْ أَبْغَضَنِيْ

হাকিম বলেন : এ ( হাদীস) টা সহীহুল ইসনাদ হাদীস এবং তারা ( বুখারী ও মুসলিম ) তা ইখরাজ ( পূর্ণ সনদসহ উল্লেখ) করেন নি । আর যাহাবীও হাকিম নিশাপুরীর সাথে একমত পোষণ করে বলেছেন আত - তালখীস গ্রন্থে : (হাদীসটি) সহীহ । ( আল্ - মুস্তাদ্রাক , খ: ৩ , পৃ : ৩৮৬ )

২. আবদুল্লাহ থেকে :

মহানবী (সা) বলেছেন : হাসান ( আ ) ও হুসাইন ( আ ) বেহেশতবাসীদের যুবকদের নেতা এবং তাদের পিতা তাদের ( ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন - আ -) চেয়ে উত্তম ও শ্রেষ্ঠ ।

اَلْحَسَنُ وَ الْحُسَیْنُ سَیِّدَا شَبَابِ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَ أَبُوْهُمَا خَیْرٌ مِنْهَا

হাকিম নিশাপুরী বলেন : এই বাড়তি অংশ :(( তাদের পিতা তাদের চেয়ে উত্তম ও শ্রেষ্ঠ)) সহ এটি সহীহ হাদীস এবং বুখারী ও মুসলিম তা ইখরাজ করেন নি ।

যাহাবী আত - তালখীসে তার ( হাকিম নিশাপুরী ) সাথে একমত পোষণ করে বলেছেন :( এ হাদীসটি ) সহীহ । হাদীস নং ৪৮৪০ , আল - মুস্তাদ্রাক , খ : ৩ , পৃ : ৩৭৭ ।

৩. ইয়া'লা আল - আমিরী থেকে :

মহানবী (সা) বলেন : হুসাইন আমার থেকে এবং আমি হুসাইন থেকে ; মহান আল্লাহ তাকে ভালোবাসেন যে হুসাইনকে ভালোবাসে ; হুসাইন ( মহানবীর - সা - ) একজন দৌহিত্র।

حُسَیْنٌ مِنِّيْ وَ أَنَا مِنْ حُسَیْنٍ ، أَحَبَّ اللّٰهُ مَنْ أَحَبَّ حُسَیْنَاً ، حُسَیْنٌ سِبْطٌ مِنَ الْأَسْبَاطِ .

( হাকিম নিশাপুরী বলেন : ) এটি সহীহুল ইসনাদ হাদীস এবং বুখারী ও মুসলিম তা ইখরাজ করেন নি । হাদীস নং ৪৮৮৩ : যাহাবী আত - তালখীস গ্রন্থে হাকিম নিশাপুরীর সাথে একমত পোষণ করে বলেছেন : ( এ হাদীসটি) সহীহ । দ্র : আল্ - মুস্তাদ্রাক , খ : ৩ , পৃ : ৩৮৭

৪. উম্ম - ই ফযল থেকে । তিনি বলেছেন : মহানবী (সা) আমাকে বললেন - আর তখন হুসাইন তাঁর কোলে ছিলেন : ( হযরত) জিব্রীল্ ( আ ) আমাকে জানিয়েছেন যে আমার উম্মত হুসাইনকে হত্যা করবে ।

عن أمّ فضل قالت : قال لي رسول الله - ص - و الحسینُ في حِجره : إنّ جبریلَ علیه الصلاة و السلام أخبرني أنّ أمّتي تقتل الحسینَ .

৪৮৮৭ : এ হাদীসটি আত - তালখীস গ্রন্থ থেকে বাদ পড়েছে । দ্র : প্রাগুক্ত , পৃ :

৫. উম্ম - ই ফযল বিনতিল হারিস বলেছেন যে তিনি একদা হযরত রাসূলুল্লাহর (সা) কাছে প্রবেশ করে বললেন : হে রাসূলুল্লাহ ! আমি গত রাতে খারাপ স্বপ্ন দেখেছি । তিনি ( সা ) বললেন : " তা কী ছিল ? "

উম্ম - ই ফযল বললেন : " সেটা ছিল ভয়ঙ্কর । " তিনি (সা) বললেন : " সেটা কী ছিল ? " তিনি ( উম্ম - ই ফযল ) বললেন : " আমি

স্বপ্নে দেখলাম যে আপনার দেহের এক টুকরো অংশ কেটে আমার কোলে রাখা হয়েছে। " অত : পর তিনি ( সা ) বললেন : " তুমি ভালো স্বপ্নই দেখেছ । ইনশাআল্লাহ ফাতিমা একটি পুত্র সন্তান প্রসব করবে ; অত : পর সে তোমার কোলে থাকবে । " এরপর ফাতিমা হুসাইনকে জন্ম দিলেন। যেমন রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছিলেন ঠিক তেমনি সে ( হুসাইন) আমার কোলে ছিল । এরপর একদিন আমি রাসূলুল্লাহর (সা) কাছে প্রবেশ করে তাঁর কোলে তাঁকে ( হুসাইন ) রাখলাম। এরপর আমার দৃষ্টি পড়ল । হঠাৎ রাসূলুল্লাহর (সা) দু চোখ থেকে অশ্রু ঝরতে লাগল । তিনি ( উম্ম - ই ফযল ) বলেন : আমি বললাম : হে নবীয়াল্লাহ ! আমার পিতামাতা আপনার জন্য কুরবান হোক ! আপনার কী হয়েছে ( আপনি কেন কাঁদছেন) ? তিনি (সা) বললেন : " আমার কাছে হযরত জিব্রীল ( আ ) এসে আমাকে জানিয়েছেন যে আমার উম্মত হুসাইনকে হত্যা করবে। " অত:পর আমি বললাম : " একে ( হুসাইন) ? " তিনি (সা) বললেন : " হ্যাঁ , তিনি আমার কাছে তার সমাধিস্থলের কিছু লাল মাটি এনেছেন । "

( হাকিম নিশাপুরী বলেন : ) এটা শাইখাইনের শর্তে সহীহ হাদীস এবং তাঁরা তা ইখরাজ করেন নি ।

যাহাবী আত - তালখীস গ্রন্থে বলেছেন : বরং ( এ হাদীস) মুনকাতি ' ( ছিন্ন ও কর্তিত ) ও য'ঈফ ( দুর্বল ) । কারণ শাদ্দাদ উম্ম - ই ফযলকে দেখে নি এবং মুহাম্মদ ইবনে মুস'আব য'ঈফ ( দুর্বল ) । আর এটা হচ্ছে ইবনুল মুলাক্কানের কথা ( মন্তব্য ) । দ্র: প্রাগুক্ত , পৃ : ৩৮৬ - ৩৮৭ , হাদীস নং : ৪৮৮১

উপরিউক্ত এ দুটি হাদীস

ছাড়াও উম্মতের হাতে হযরত ইমাম হুসাইনের (আ) শাহাদাত বরণ সংক্রান্ত আরো বেশ কিছু হাদীস বর্ণিত হয়েছে । বিস্তারিত বিবরণের জন্য আমার প্রণীত প্রবন্ধ : আশুরার দিবসে ইমাম হুসাইনের (আ) শাহাদাত , গাদ্দার বিশ্বাস ঘাতকদের থেকে প্রকৃত মুসলিম উম্মাহকে শনাক্ত করার মাপকাঠি, পৃ : ৩ - ৭ দ্রষ্টব্য । তাই উম্মত কর্তৃক ইমাম হুসাইনকে ( আ ) হত্যা ও শহীদ করার ভবিষ্যদ্বাণী সংক্রান্ত হাদীস সমূহ প্রতিষ্ঠিত ও বিশুদ্ধ হাদীস। আমরা কেবল ঐ প্রবন্ধ থেকে দুটো হাদীস এখানে উল্লেখ করছি :

প্রথম হাদীস: নবীপত্নি উম্মুল মু'মিনীন হযরত উম্মে সালমাহ ( রা ) বলেন : আমার ঘরে রাসূলুল্লাহর (সা) সামনে হাসান ও হুসাইন - আলাইহিমাস সালাম - খেলছিলেন। তখন জিবরাঈল (আ) অবতরণ করে হুসাইনের দিকে হাত দিয়ে ইশারা করে বললেন : " হে মুহাম্মাদ! আপনার উম্মত আপনার পরে আপনার এই সন্তানকে ( দৌহিত্র ) হত্যা করবে । " অত:পর রাসূলুল্লাহ (সা) হুসাইন কে বুকে টেনে নিয়ে কাঁদলেন। এরপর রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন : আমি তোমার ( উম্মে সালমাহ) কাছে এই মাটিটা রাখলাম।" অত:পর রাসূলুল্লাহ (সা) ঐ মাটিটার ঘ্রাণ নিলেন এবং বললেন : " কার্ব্ ( কষ্ট ) ও বালার ( কারবালা অর্থাৎ কষ্ট ও বিপদাপদ) ঘ্রাণ । " এবং বললেন : হে উম্মে সালমাহ ! যখন এই মাটি রক্তে পরিণত হবে তখন জানবে যে

আমার সন্তান ( দৌহিত্র) নিহত হয়েছে। " হযরত উম্মে সালমাহ ঐ মাটিটা একটা কাঁচের পাত্রে রেখে দিলেন এবং প্রতিদিন ঐ মাটির দিকে তাকিয়ে বলতেন : " ( হে মাটি ! ) এক মহা বিপদের দিবসে ( ইমাম হুসাইন - আ - যেদিন শাহাদাত বরণ করবেন সেদিন অর্থাৎ ৬১ হিজরীর ১০ মুহররম ) তুমি রক্তে পরিণত হবে । " আর এতদসংক্রান্ত এ অনুচ্ছদে হযরত আয়েশা ( রা : ) , হযরত যাইনব বিনতে জাহশ ( রা : ) , হযরত উম্মে ফযল ( রা : ) বিনতুল হারিস ( রা : ) , হযরত আবু উমামাহ ( রা : ) , হযরত আনাস ইবনে হারিস ( রা : ) এবং আরো অন্যান্যের থেকেও ( অনুরূপ হাদীস বর্ণিত হয়েছে ও ) বিদ্যমান আছে । দ্র: ইবনে হাজার আল - আস্কানী প্রণীত তাহযীবুত তাহযীব , খ : ২ , পৃ : ৩৪৭ )

عن عمر بن ثابت عن الأعمش عن شقیق عن أمّ سلمة قالت : کان الحسن و الحسین یلعبان بین یدي رسول الله صلّی الله علیه وآله و سلم في بیتي فنزل جبریل فقال : یا محمد ، إنّ أمّتک تقتل ابنک هذا من بعدک و أومیٰ بیده إلَی الحسین فبکیٰ رسول الله ( ص ) و ضمّه إلیٰ صدره ثمّ قال رسول الله صلّی الله علیه وآله وسلم: وضعتُ عندکِ هذه التربَة فشمّها رسول الله (ص) و قال : ریح کرب و بلاء و قال : یا أم سلمة إذا تحوّلت هذه التربة دماً فاعلمي أنّ ابني قد قُتِلَ فجعلتها أمّ سلمة في قارورة ثُمّ جعلت تنظر إلیها کلَّ یوم و تقولُ : إنّ یوماً تحولین دماً لیومٍ عظیم .

و في الباب عن عایشة و زینب بنت جحش و أمّ الفضل بنت الحارث و أبي أمامة و أنس بن الحارث و غیرهم .

এ হাদীসটি মুতাওয়াতির , শক্তিশালী, নির্ভরযোগ্য সহীহ হাদীস। কারণ , এ হাদীসটি উম্মুল মুমিনীন হযরত উম্মে সালামাহ ( রা : ) সহ ৬ এর অধিক সংখ্যক সাহাবী কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে। আর কোনো হাদীস মাত্র ৪ জন সাহাবা কর্তৃক বর্ণিত হলেই আহলুস সুন্নাহর কেউ কেউ তা মুতাওয়াতির বলে গণ্য করেন ।

২য় হাদীস : আশ'আস ইবনে সাহীম নিজ পিতা সাহীম থেকে সাহীম হযরত আনাস ইবনুল হারিস আল - কাহিলী ( রা : ) থেকে বর্ণনা করেছেন : তিনি ( আনাস ইবনুল হারিস - রা : - ) বলেন : তিনি মহানবীকে (সা) বলতে শুনেছেন : নিশ্চয়ই আমার এই পুত্র সন্তান ( দৌহিত্র অর্থাৎ হুসাইন ) ইরাকের এক স্থানে নিহত ( শহীদ) হবে ; অত:পর যে তাঁকে ( হুসাইন) পাবে ( যে সে - অর্থাৎ হুসাইন - যালিমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে বের হয়েছে এবং এ জন্য সে সাহায্য চাচ্ছে ) তার উচিত তাঁকে ( হুসাইন ) সাহায্য করা । "

অত:পর তিনি ( হযরত আনাস ইবনুল হারিস - রা - ) হুসাইনের - রাদিয়াল্লাহু আনহু - সাথে (কারবালায় ) নিহত (শহীদ) হন ।

أنس بن الحارث . عداده في أهل الکوفة ، رویٰ حدیثه أشعث بن سحیم ، عن أبیه عنه ( أنس بن الحارث - رضي الله عنه - ) أنّه سمع النبي - ص - یقول : إنّ ابني هذا یُقتلُ بأرض من أرض العراق ، فمن أدرکه فلینصُرهُ ، فقُتِلَ مع الحسین رضي الله عنه .

দ্র : ইবনুল আসীর আল - জাযারী ( ৫৫০ - ৬৩০ হি. ) প্রণীত উসদুল গাবাহ্ ফী মা'রিফাতিস সাহাবা , খ : ১ , পৃ : ১৭১ ) প্রকাশক : দারুল ফিকর , বৈরুত , লেবানন , প্রকাশ কাল : ১৯৯২ খ্রী ( ১৪১৪ হি. )

….. চলবে

تبصرہ ارسال

You are replying to: .