মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান
হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসরাইলী বহুল প্রচারিত সংবাদ পত্র দৈনিক হা আরেস্ত্ : নেতানিয়াহুর এখনই পদত্যাগ করা উচিত। (না আগামী কাল , না কয়েক ঘন্টা পরে বরং) এখনই পদক্ষেপ করা উচিত। কারণ সে যুদ্ধ পরিচালনা করতে অক্ষম।
ইসরাইলী ১২ নং টিভি চ্যানেল : অধিকৃত ফিলিস্তিনে ( ইসরাইলের ভিতরে) ৪০০০ ফিলিস্তিনি শ্রমিককে হামাস ও ফিলিস্তিনী প্রতিরোধ সংগ্রামের সাথে গোপন সম্পর্ক আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখার জন্য আটক ও গ্রেফতার করা হয়েছে।
জো বাইডেন এখন ইসরাইলে । এখানে দুটো সম্ভাবনা আছে জো বাইডেনের তেল রবীতে ( তেল আবীব ) আসার। ১ম সম্ভাবনা : জর্দান ও মিসরের সাথে মিলে গাযায় ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর উদ্যোগের ক্রেডিট নেওয়া যদিও ইসরাইলের নির্বিচারে এলোপাথাড়ি হিংস্র নির্মম পাশবিক অমানবিক অপরাধ মূলক বোমাবর্ষণের মুখে গাযা বাসীরা বীরত্ব ব্যঞ্জক দৃঢ়তা ও ধৈর্য প্রদর্শন করে এবং গাযা ভূখণ্ড ত্যাগ না করে মৃত্যু ও সব ধরণের বঞ্চনা বরণ করে নিয়ে গাযা মানববিহীন ভূখণ্ডে রূপান্তরিত করা সংক্রান্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের ষড়যন্ত্র মূলক পরিকল্পনা ভণ্ডুল করে দিয়েছে । তাই এখন নিজেদের মান সম্মান বাঁচিয়ে উল্টো ক্রেডিট নেওয়ার জন্য মিসর থেকে রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাযায় ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর ক্রেডিট ও সুনাম কুড়ানোর জন্য ইসরাইলকে রাজী করাতে জো বাইডেনের এ সফর হতে পারে ।
২য় সম্ভাবনা : মার্কিন সমর্থন ও সর্বাত্মক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সর্বশক্তি দিয়ে ইসরাইলকে গাযায় ব্যাপক স্থল আগ্রাসন চালানোর জন্য উদ্বুদ্ধ করতে বোধ হয় তার এ সফর । তবে প্রথম সম্ভাবনাটাই বেশি। কারণ , ৭ অক্টোবর তূফানুল আকসা অভিযানে ফিলিস্তীনীদের হাতে প্রচণ্ড মার খেয়ে ইসরাইল এখন সবচেয়ে শোচনীয় অবস্থায় আছে।
গাযায় স্থল যুদ্ধ ও আগ্রাসনের শক্তি ও সামর্থ্য যে ইসরাইলের নেই তা হাআরেস্ত ও অর্থ মন্ত্রীর বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় এবং তূফানুল আকসার ১১ দিন গত হলেও ইসরাইল গাযায় স্থল যুদ্ধ শুরু করতে পারে নি বরং নির্বিচারে বোমাবর্ষণ করে সাধারণ নিরীহ নারী পুরুষ ও শিশু হত্যা এবং বাড়ীঘর , স্কুল , হাসপাতাল , মসজিদ এবং স্থাপনা সমূহ ধ্বংস করে যাচ্ছে যা হচ্ছে শাস্তিযোগ্য যুদ্ধাপরাধ ।
গাযায় বোমাবর্ষণে এ পর্যন্ত ২৮০০ এর অধিক মানুষ শহীদ হয়েছেন যাদের প্রায় ৭০ % হচ্ছেন নারী ও শিশু। যুদ্ধের ময়দানে ফিলিস্তীনী মুজাহিদ মুক্তি যোদ্ধাদের সাথে পারবে না বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান , বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে কেবল বেসামরিক জনগণ , নারী ও শিশুদের নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা ও শহীদ করছে ইসরাইল। আর ইসরাইল হয়তো মার্কিন মেরিন এবং ডেল্টা ফোর্স নিয়ে গাযায় সীমিত আকারে স্থল আক্রমণ করতে পারে। জো বাইডেন হামাসকে মূলোৎপাটন করার জন্য এ ধরণের আক্রমণের কথা বলেছে ইসরাইলকে । তবে ইসরাইলকে আবার সেই সাথে গোটা গাযা ভূখণ্ড দখল করতেও নিষেধ করেছে বাইডেন। আর গোটা গাযা ভূখণ্ড দখল না করে গাযায় সীমিত পরিসরে স্থল আক্রমণ হবে ফলাফল শূন্য। কারণ এ ধরণের সীমিত স্থল আক্রমণ চালিয়ে হামাস ও ফিলিস্তিনী যোদ্ধাদের নির্মূল করা সম্ভব নয় । আর সমগ্র গাযা দখলের অভিযান চালানো হলে ইসরাইলের এতটা সামরিক ক্ষয়ক্ষতি হবে যা সহ্য ও পূরণ করা দুর্বল পর্যদুস্ত ইসরাইলী সরকার ও ইহুদী জনগণের পক্ষে খুবই কঠিন হবে । তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো সহ ইসরাইল এ স্থল যুদ্ধ নিয়ে বহুত পেরেশানির মধ্যেই রয়েছে। আবার এ ভাবে নির্বিচারে বোমাবর্ষণ ও সর্বাত্মক অবরোধ চলতে থাকলে অথবা গাযায় স্থল আগ্রাসন চালালে এ যুদ্ধ আঞ্চলিক যুদ্ধের রূপ নেবে যার পরিণতি হবে অনেক ভয়াবহ ও ধ্বংসাত্মক সমগ্র বিশ্বের জন্য ।
১১ দিন গত হলেও এত বোমাবর্ষণ চালিয়েও ইসরাইল হামাস ও ফিলিস্তিনী মুহাজিদদের যুদ্ধ ক্ষমতা ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ বন্ধ করতে পারে নি । তার মানে মুজাহিদদের সামরিক শক্তি ও লড়ার সামর্থ্য পূর্ণ মাত্রায় বজায় রয়েছে । ওদিকে ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলীয় ফ্রন্ট দিনের পর দিন সক্রিয় ও উত্তপ্ত হচ্ছে। প্রায় প্রতিদিন সেখানে সীমান্ত সংঘর্ষ চলছে ইসরাইলী সৈন্যদের সাথে হিজবুল্লাহর যা সত্যিই ইসরাইলের জন্য বিরাট বড় সমস্যা । এমতাবস্থায় সত্যিই ইসরাইল প্রচণ্ড মানসিক দুর্বলতা ও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে যা থেকে উদ্ধার করার জন্য ইসরাইলে জো বাইডেন এবং তার আগে ব্লিংকেন ( পররাষ্ট্র মন্ত্রী ) ও অস্টিনের ( প্রতিরক্ষামন্ত্রী) আগমন । এই ৭৫ বছরের মধ্যে ইসরাইল কখনো এমন প্রচণ্ড মার খায় নি এবং হতাশা ব্যাঞ্জক অবস্থা ও পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে নি যা থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে এই মেকি সন্ত্রাসী রাষ্ট্রটির ধ্বংস ও বিলুপ্তি অতি সন্নিকটে।