রিপোর্ট: হাসান রেজা
হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইতিহাসের পাতায় দেখা যায়, হযরত জয়নাব (সা:) সেইসব ব্যক্তিত্বদের একজন যারা সূর্যের মতো উদিত হয়েছিলেন এবং তাঁর আলো সমগ্র মানবজাতিকে আচ্ছন্ন করে রেখেছিলেন। এটা মহান আল্লাহ্র বিশেষ সন্তুষ্টি ও অনুগ্রহ যে তিনি এই পবিত্র সত্তাগুলোকে মানবতার হেদায়েতের উৎস হিসেবে ঘোষণা করেছেন। হজরত জয়নব (সা:) শুধু নারীদের জন্যই নয়, পুরুষদের জন্যও আদর্শ, যার পদাঙ্ক মানবতাকে মুক্তির পথে নিয়ে যেতে পারে।
বংশ, জ্ঞান, ইবাদত, সতীত্ব, সাহস, সততা ও ধৈর্যের দিক দিয়ে হযরত জয়নব (সা:) দ্বিতীয় নন। হজরত জয়নব (সা:)-এর একটি বিশিষ্ট বৈশিষ্ট্য হলো অত্যাচারী ও তার নিষ্ঠুরতার মোকাবেলায় দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানো।
বর্তমান বিশ্বে যেখানে সর্বত্র নিপীড়ন ও নিপীড়ন দেখা যায়, সেখানে এই দৃষ্টান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন, যার সামনে তার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে শহীদ করা হয়েছিল এবং নিপীড়ন এতটাই বেড়েছে যে জুলুম নিজেই ভয়ের শিকার হয়েছে, কিন্তু সেই সাথে এই সত্ত্বার মুখ থেকে শব্দ বের হল, "মা রাআইতো ইল্লা জামিলা" " ما رایت الا جمیلا"।
যদিও আজ গাজায় এত নিষ্ঠুরতা ঘটিয়ে অত্যাচারী নিজেকে শক্তিশালী এবং সফল ভাবছে এবং ভাবছে যে কেউ আর মাথা তুলতে সাহস পাবে না, কিন্তু এটি তার অশোধিত ধারণা, কারণ জুলুম নিজেই সর্বদা জুলুমকারীর পিঠ ভেঙে দেয়।
হজরত জয়নব (সা:)-এর আরেকটি বিশিষ্ট বৈশিষ্ট্য হলো দুঃখ-কষ্টে ধৈর্য ধারণ করা। পবিত্র কুরআনে ধৈর্যশীলদের জন্য বিভিন্ন শব্দে অনেক জায়গায় প্রশংসা করা হয়েছে এবং এক জায়গায় বলা হয়েছে যে, আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।
হজরত জয়নব (সা:) কারবালার ঘটনায় তাঁর প্রিয় মানুষদের সামনে শহীদ হতে দেখেছেন, বিশেষ করে তাঁর ভাই, যার সম্পর্কে তিনি বলেছেন যে আমি আমার ভাই হোসাইনকে ছাড়া বাঁচতে পারব না, কিন্তু সর্বশক্তিমান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এই সমস্ত কুরবানী করা হয়েছিল।তিনি ধৈর্য ও অবিচলতার পা হাত থেকে পিছলে যেতে দেননি, যার সম্পর্কে তাঁর জিয়ারত নামা'তে এসেছে যে (لقد عجبت من صبرک ملائکۃ السماء) এমনকি আকাশের ফেরেশতারা তার ধৈর্য দেখে অবাক হয়ে যায়।
হজরত জয়নব (সা:) যিনি কারবালার ঘটনার আগে ভালো ও সন্তুষ্ট জীবনযাপন করছিলেন, কিন্তু তার প্রশিক্ষণ তাকে একইভাবে সন্তুষ্ট জীবনযাপন করতে দেয়নি। আর অত্যাচারীরা তাদের নিষ্ঠুরতা অব্যাহত রেখেছিল, বরং তারা এই জীবন ছেড়ে তার ভাইয়ের সাথে কারবালায় যাওয়া পছন্দ করেছিল। তাই আজকের মানবতার এই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করা একান্ত প্রয়োজন।