হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ফিলিস্তিনের গাজায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর আগ্রাসনে ৩৭,৭১৮ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই শিশু ও নারী। এই সংখ্যাটা কেবল তাদের যাদের লাশ খুঁজে পাওয়া গেছে! কিন্তু গাজার ধ্বংসস্তুপের নিচে আরো হাজার হাজার শিশুর লাশ রয়েছে যাদের খুঁজে পাওয়া কিংবা উদ্ধার করা যায়নি!
জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে যে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ধ্বংসস্তূপের নিচে হাজার হাজার নিখোঁজ শিশুর লাশ রয়েছে! সংস্থাটির উপ-নির্বাহী পরিচালক টেড চাইবান গত বুধবার (২৬ জুন) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের 'শিশু ও সশস্ত্র সংঘাত বিষয়ক' বৈঠকে এ মন্তব্য করেন।
সশস্ত্র সংঘাতে শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘ প্রধানের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের ওপর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ সভায় বক্তৃতা করার সময় টেড চাইবান বলেন, ‘২০২৩ সালে ৪,৩১২ ফিলিস্তিনি এবং ৭০ জন ইসরাইলি শিশু নিহত হয়েছে বা পঙ্গু হয়ে গেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে, যা প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত হত্যা এবং পঙ্গুত্বের সমস্ত যাচাইকৃত ঘটনার ৩৭ শতাংশ। কিন্তু গাজায় কর্মরত মানবিক কর্মীদের নিরাপত্তাহীনতা, চলাচলে বিধিনিষেধের কারণে ২০২৩ সালে ২৩ হাজারেরও বেশি শিশু নিহত বা পঙ্গু হওয়ার ঘটনা এখনও যাচাই করা হয়নি।"
তিনি বলেন, "হাজার হাজার নিখোঁজ শিশুর মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে আছে এবং এর মধ্যে ২০২৪ সালে এখনও পর্যন্ত হাজার হাজার মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অন্তর্ভুক্ত নয়।"
ইউনিসেফের এই কর্মকর্তা গাজায় ত্রাণ বিতরণে প্রতিবন্ধকতাগুলোও তুলে ধরেছেন এবং তীব্রভাবে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন। গাজায় ৫ বছরের কম বয়সী অন্তত ৮ হাজার শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে বলে জানিয়েছেন। তিনি গাজায় পূর্ণ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে বলেন, অবরুদ্ধ অঞ্চলে অনাহারে অনেক শিশু প্রাণ হারাচ্ছে। এখনই এই যুদ্ধ বন্ধ হওয়া উচিত।
এদিকে আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন সম্প্রতি জানিয়েছে যে, গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যে ২০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শিশু নিখোঁজ হয়ে গেছে।
সংস্থাটি গত সোমবার (২৪ জুন) জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলার কারণে গাজা উপত্যকায় ২০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি শিশু নিখোঁজ হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে, অনেককে আটক করা হয়েছে, অনেককে আবার অচিহ্নিত কবরে সমাহিত করা হয়েছে আবার অনেকেই তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া এসব শিশু চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে।