রিপোর্ট: মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান
হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের কাছে কি প্রকৃতি ও পরিবেশ দূষণের সঠিক সমাধান আছে ?
খবর : Nanoplastics and 'forever chemicals' shown to disrupt molecular structures and functionality
গবেষণায় প্রকাশ যে ন্যানো প্লাস্টিক এবং চিরকালীন রাসায়নিক পদার্থ সমূহ মানব দেহের কোষের আণবিক গঠন ও কাঠামো ভেঙে দিচ্ছে এবং দেহের অংগপ্রত্যঙ্গ সমূহের কার্যকারিতা ব্যাহত করছে । (প্রকৃতি ও পরিবেশ দূষণের সঠিক সমাধান)
এ খবর সংক্রান্ত কিছু বিশ্লেষণ :
ন্যানো প্লাস্টিক, মাইক্রো প্লাস্টিক ও ফর এভার ( চিরস্থায়ী) রাসায়নিকের দূষণ মুক্ত করণের যত প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি উদ্ভাবন করা হোক না কেন তা যে আসলে কতটা ফলপ্রসূ হবে সেটা কি নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব ? আর যে সব পদ্ধতির কথা বলা হচ্ছে সেগুলো আসলে কতটা নিরাপদ মানব দেহ ও স্বাস্থ্যের জন্য । কারণ এগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে এবং অবশ্যই আছে। কারণ স্বাভাবিক প্রকৃতিক জিনিসেরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে অতি ব্যবহার করা হলে যদিও ওগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেহ ভালো ভাবে মোকাবেলা করতে পারে। আর এ সব কৃত্রিম প্রাণ রাসায়নিক পদ্ধতি তো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত হতেই পারবে না।
এখনকার ১৬০০০এর অধিক চিরকালীন রাসায়নিকের পরিবর্তে নতুন ধরনের চিরকালীন রাসায়নিক তৈরি করলে কী সেগুলো নিরাপদ হবে ? সেগুলোও তো নতুন নতুন স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করতে থাকবে ঠিক যেন অবিরাম চলতে থাকা প্রক্রিয়া। একটা বিষের পরিবর্তে আরেকটা বিষ নিয়ে আনা হচ্ছে ঠিক যেন প্রতিনিয়ত পুরোনো বিষকে নতুন বিষ দিয়ে প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়ার মতন। আসলে পশ্চিমারা ও প্রাচ্যীয়রা কৃত্রিম এ সব প্রোডাক্ট তৈরি করে প্রকৃতি ও পরিবেশ দূষণ অব্যাহত রাখছে যারফলে মানব জাতি সহ গোটা জীবকুলের অস্তিত্বের বিলুপ্তির পথ দিন দিন উন্মুক্ত ও সুগম হয়ে যাচ্ছে । কৃত্রিম অপকারী পদার্থ ও সামগ্রীর পরিবর্তে স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পদার্থ ও সামগ্রীর যথার্থ ব্যবহারের প্রবর্তন করা না গেলে কোনো কিছুই ঠিক হবে না । কিন্তু অতিলোভী ভোগবাদী নাস্তিক্যবাদী বস্তুবাদী ধর্ম ও বিবেকবুদ্ধি বিরোধী বিকৃত বক্র চিন্তাভাবনা পোষণ কারী পাশ্চাত্য ও প্রাচ্য কি আদৌ তা পারবে ?!!!
মানব জাতির আসল সমস্যা অতিরিক্ত জ্বালানি পুড়িয়ে অতিরিক্ত তাপোৎপাদন ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি। আর এর ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তা রক্তিম অগ্নি গোলায় পরিণত হচ্ছে । ভোগবাদী নাস্তিক্যবাদী মানসিকতার কারণে ভোগ সম্ভোগ অসাধারণ ও অভূতপূর্ব ভাবে বেড়েই যাচ্ছে যার ফলে হাইড্রোকার্বন সহ বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি পোড়ানোর ফলে পৃথিবীতে তাপ ও তাপমাত্রা উত্তোরোত্তর বেড়েই যাচ্ছে। আর কয়েক দশক বা শতকের মধ্যেই পৃথিবী উত্তপ্ত লাল গোলায় পরিণত হবে এবং এই তাপ ও তাপমাত্রা বৃদ্ধির নানা ধরনের ধ্বংসাত্মক প্রভাব ও প্রতিক্রিয়াও কার্যতঃ সর্বত্র দৃশ্যমান হচ্ছে এবং সামনে আরও তীব্র ভাবে প্রকাশিত হবে ।
এ ধরনের মারাত্মক পরিণতি নিয়ে কি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের চিন্তা ভাবনা ও মাথা ব্যাথা আছে ?!!
সৃজনশীলতা নতুন নতুন প্রোডাক্ট ও দ্রব্য বানানো নয় । বরং সৃজনশীলতা হচ্ছে প্রাকৃতিক বস্তু ,পদার্থ ও সামগ্রীর যথার্থ নিরাপদ ব্যবহার। নিত্য নতুন উদ্ভাবিত রাসায়নিক সামগ্রীর মারাত্মক ধ্বংসকারী প্রভাব ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া উপেক্ষা করে সেগুলোর যথেচ্ছা ও অতিরিক্ত ব্যবহার আজ এ সব মারাত্মক দূষণ ও বিরূপ নেতিবাচক প্রভাব ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণ । পৃথিবীতে মানুষ এখন অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় খুবই বেশি ও অতিরিক্ত কর্মতৎপরতা প্রদর্শন করছে। আর কর্মতৎপরতা এনার্জি কনজাম্পশন ( শক্তি খরচ ও ব্যয় ) ছাড়া সম্ভব নয় । আর এ কারণে তাপ ও তাপমাত্রা বর্ধিত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে কোনো ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাকটিভিটি ( শিল্পক্ষেত্রে কর্মতৎপরতা) উচ্চহারে তাপ উৎপাদক ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি কারী এবং এ কারণে তা প্রকৃতি ও পরিবেশ দূষণকারী । তাপ ব্যবহৃত হচ্ছে শিলপোৎপাদনে । যখন আমরা ঐ শিল্প পণ্য ব্যবহার করব তখন ঐ পণ্যে সঞ্চিত তাপ কাজে ব্যবহৃত হবে এবং কাজের মাধ্যমে আবার প্রকৃতিতে ঐ তাপ উন্মুক্ত হবে এবং তাপ বৃদ্ধি হবে । আর তা হলে তাপমাত্রাও বৃদ্ধি পাবে। আর বর্তমানে ঠিক সেটাই হচ্ছে। তাই অস্বাভাবিক কর্মতৎপরতা ( অতিরিক্ত অপরিবেশবান্ধব শিল্পোৎপাদন ও কৃষি পণ্যোৎপাদন ) ও কাজ ( work পদার্থ বিদ্যা ও রসায়ন শাস্ত্রের সংজ্ঞায় কাজ ) ইত্যাদি হ্রাস করা না হলে পৃথিবীর তাপ ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতেই থাকবে এবং অল্প দিনের মধ্যে পৃথিবী মানুষ ও জীবকুলের বসবাসের অযোগ্য ও অনুপযোগী হয়ে যাবে !!!!
শিল্পোন্নত পাশ্চাত্য ও প্রাচ্য অতিরিক্ত অনর্থক কাজ ও কর্মতৎপরতা প্রদর্শন করছে। জাপানে অনেকে কাজ করতে করতে মরেই যায় । জাপানীদের কাছে কাজ ই জীবন ও জীবন ই কাজ । কাজের মাঝে অর্থাৎ কাজ করতে করতে অক্কা পাওয়া ও পটল তোলা অর্থাৎ কর্মকালীন মৃত্যুকে জাপানী ভাষায় করোশি বলা হয় । সুতরাং এই প্রাচ্যীয়রা বিশেষ করে চীনা , কোরীয় ও জাপানীরা পশ্চিমাদের সাথে পাল্লা দিয়ে অতিরিক্ত কর্মতৎপরতার ( শিল্পোৎপাদন ) কারণে পৃথিবীর তাপ ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি করেই চলেছে যেন থামাথামি নেই। প্রকৃতি বৈরী শিল্পোন্নত পাশ্চাত্য ও প্রাচ্য সব সময় কৃত্রিম পদার্থ ও পদ্ধতির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রতিকারের জন্য আবারো প্রকৃতি বৈরী কৃত্রিম প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি নিয়ে আসছে যারফলে আসল সমস্যা ( প্রকৃতি ও পরিবেশ দূষণ ও ধ্বংস সাধন) অব্যাহতই থাকছে অনেক টা যেন এ প্রবাদ বাক্যের মতো হয়ে গেছে : যে সর্ষে দিয়ে ভুত তাড়াবে সে সর্ষের মধ্যেই তো ভুত বসে রয়েছে !!! তাই পশ্চিমা ও প্রাচ্যীয় সমাধান পদ্ধতি কার্যতঃ কার্যকর নয় ।
হ্যাঁ কিছু চটকদার লোভনীয় ও আকর্ষণীয় বৈজ্ঞানিক রিসার্চ ও গবেষণা হবে কিন্তু এতে করে সমস্যার আসল ও সুষ্ঠু সমাধান হবে না বরং পরিস্থিতি আরো জটিল ও কঠিন হতেই থাকবে । আজ পর্যন্ত ঠিক এমনটাই হয়েছে এবং হচ্ছে।
অতএব মানুষকে সুস্থ মস্তিস্কে ভাবতে ও চিন্তা করতে হবে যে সে প্রকৃতি বান্ধব আচরণ করবে নাকি তার প্রকৃতি বৈরী ও নিজ অস্তিত্ব বিলুপ্তকারী কার্যকলাপ অব্যাহত রাখবে !!!!