হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশের সঙ্গে নতুন অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে আলোচনা স্থগিত করল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে প্রথম দফার এ আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতির আলোকে আলোচনা স্থগিত করা হয়েছে বলে বুধবার ইইউর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন।
রয়টার্স জানায়, বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার ইইউ। ২৭ দেশের এ জোট বাংলাদেশকে বিপুল অর্থ সহায়তা করে থাকে। তারা এমন সময় আলোচনা স্থগিত করার কথা জানাল, যখন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র-বিষয়ক মুখপাত্র নাবিলা মাসরালি গতকাল রয়টার্সকে ই-মেইলে বলেছেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে সেপ্টেম্বরের পরিকল্পিত অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির প্রথম দফা আলোচনা স্থগিত করা হয়েছে এবং পরবর্তী কোনো তারিখ এখনও ঠিক করা হয়নি।’
তবে বাংলাদেশের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব উত্তম কুমার কর্মকার দাবি করেছেন, জাতিসংঘের আসন্ন সাধারণ পরিষদের সভার কারণে আলোচনা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সাম্প্রতিক সহিংসতার আগেই তা ঠিক করা হয়।
ইইউর বিদেশনীতির প্রধান জোসেফ বোরেল বাংলাদেশে দেখামাত্র গুলি এবং কর্তৃপক্ষের সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের হত্যা, গণগ্রেপ্তার এবং সম্পদের ক্ষতিরও সমালোচনা করেছেন। বাংলাদেশ সরকার কোনো দেখামাত্র গুলি চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছে, তবে হাসপাতালে গুলিবিদ্ধরা চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানায় রয়টার্স।
জোসেফ বোরেল আরও বলেন, সংঘাতের অবশ্যই পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। তিনি বলেন, এ সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে, সেদিকে তারা গভীর নজর রাখবেন। ইইউ-বাংলাদেশ সম্পর্কের মূলনীতিগুলো বিবেচনায় রেখে তারা আশা করছেন, বাংলাদেশে সব ধরনের মানবাধিকারের প্রতি পূর্ণ সম্মান জানানো হবে।
বাংলাদেশ ও ইইউর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও সম্প্রসারণ ও বিকাশের লক্ষ্যে গত বছরের অক্টোবরে নতুন ইইউ-বাংলাদেশ অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি বিষয়ে আলোচনা শুরুর সিদ্ধান্ত হয়। ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ইইউর প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন দার লিয়েন উপস্থিত ছিলেন। সহযোগিতা চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ এবং ইইউর মধ্যে বাণিজ্য, অর্থনৈতিক এবং উন্নয়নমূলক সম্পর্ক বাড়াতে চায়। ২০২৩ সালে বাংলাদেশের মোট বাণিজ্যের ২০.৭% ছিল এ জোটের সঙ্গে।
ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পে ৪০ কোটি ইউরো অর্থায়নের লক্ষ্যে ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়। বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হ্রাসের লক্ষ্যগুলো অর্জন ও দেশের বিদ্যুৎ খাতের পরিবেশসম্মত টেকসই রূপান্তরের জন্য এই অর্থ খরচ করার কথা।