হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, সৌদি আরব এ বছর ১০০-এর বেশি বিদেশি নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে বলে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এটি আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এ ধরনের ঘটনা ‘অভূতপূর্ব’।
শনিবার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় নাজরানে এক ইয়েমেনি নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তিনি মাদক পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন।
সংগঠনের আইনি পরিচালক তাহা আল-হাজ্জি বলেন, সৌদি আরবের ইতিহাসে এক বছরে ১০০ বিদেশির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো সৌদি আরবের মৃত্যুদণ্ডের ব্যাপক ব্যবহারের সমালোচনা করে আসছে। তারা বলছে, এটি অত্যধিক এবং সৌদি আরবের উদার ভাবমূর্তি তৈরির প্রচেষ্টার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ২০২৩ সালে সৌদি আরবের মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা বিশ্বে তৃতীয় সর্বোচ্চ ছিল।
সেপ্টেম্বর মাসে এএফপি জানায়, সৌদি আরবে ৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। ২০২২ সালে ১৯৬ জন এবং ১৯৯৫ সালে ১৯২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
এ বছর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিদেশিদের মধ্যে পাকিস্তানের ২১ জন, ইয়েমেনের ২০ জন, সিরিয়ার ১৪ জন, নাইজেরিয়ার ১০ জন, মিসরের ৯ জন, জর্ডানের ৮ জন এবং ইথিওপিয়ার ৭ জন রয়েছেন। এছাড়া সুদান, ভারত ও আফগানিস্তানের ৩ জন করে এবং শ্রীলঙ্কা, ইরিত্রিয়া ও ফিলিপাইনের একজন করে নাগরিক রয়েছেন।
২০২২ সালে মাদক সংক্রান্ত অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলে এ ধরনের মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এ বছর ৯২টি মাদক-সম্পর্কিত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে, যার মধ্যে ৬৯ জনই বিদেশি।
কূটনীতিক এবং মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, বিদেশি আসামিরা বিচার প্রক্রিয়ায় বেশি বাধার সম্মুখীন হন এবং তাদের ন্যায়বিচার পাওয়ার সুযোগ কম থাকে।
ইএসওএইচআর-এর হাজ্জি বলেন, বিদেশিরা সবচেয়ে বেশি দুর্বল। তারা প্রভাবশালী মাদক পাচারকারীদের শিকার হয় এবং গ্রেফতার থেকে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত নানা নির্যাতনের শিকার হন।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের জন্য সৌদি আরবের কুখ্যাতি রয়েছে। তবে তাদের সরকারি বিবৃতিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পদ্ধতির বিষয়ে খুব কমই উল্লেখ করা হয়।
এনজিও রিপ্রিভের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক পরিচালক জিদ বাসিউনি বলেন, মাদক সংক্রান্ত গ্রেফতার ক্রমাগত সহিংসতার চক্রকে আরও জটিল করে তুলছে। তিনি আরও জানান, এ বছর মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সৌদি আরবে এটি এক ‘অভূতপূর্ব মৃত্যুদণ্ড সংকট’ বলেও মন্তব্য করেন বাসিউনি।