হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের উত্তরপ্রদেশে মুঘল আমলের সামভাল শাহী জামে মসজিদকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। মসজিদটি যেখানে নির্মিত, সেখানে আগে মন্দির ছিল- এমন দাবি করে আদালতের দারস্থ হয়েছিলেন কট্টর হিন্দুত্ববাদী বেশ কয়েকজন ব্যক্তি। এরপর আদালত তাদের পিটিশনের ভিত্তিতে সেখানে জরিপ চালানোর নির্দেশ দেন।
যেসব হিন্দুত্ববাদী ব্যক্তি মসজিদের জায়গায় মন্দির থাকার দাবি করেছেন, তারা আদালতের পিটিশনে বলেছেন, মুঘল শাসক বাবরের আমলে ১৫২৯ সালে মন্দির ভেঙে সেখানে মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল।
এমন প্রেক্ষাপটে রোববার (২৪ নভেম্বর) সকালে মসজিদে জরিপ চালাতে যান একটি দল। পরে তাদের জরিপ চালাতে বাধা দেন সেখানকার মুসল্লিরা। এ সময় গুলি চালিয়ে নাঈম, বিলাল এবং নোমান নামের তিন মুসলিমকে হত্যা করে পুলিশ।
স্থানীয় পুলিশের অভিযোগ, মুসল্লিরা যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়ে। পরে পুলিশ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ছোড়ে ও লাঠিপেটা করে।
এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও করেছিল অনেকে। পরে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে (এনএসএ) মামলা দায়ের করা হবে এবং কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব বিজেপির সমালোচনা করে বলেছেন, ক্ষমতাসীন দল, সরকার এবং প্রশাসন 'নির্বাচনী অনিয়ম থেকে নজর ঘোরাতে' এই সহিংসতা চালিয়েছে।
সমালোচকরা বলেছেন, মূলত উত্তেজনা তৈরি করতেই মসজিদটিতে জরিপ চালানোর মতো নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এর মাধ্যমে ভারতের উপাসনা আইন ১৯৯১ ভঙ্গ করা হয়েছে। এ আইনে ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর পবিত্রতা রক্ষার কথা বলা হয়েছে।
প্রায় ৫০ জন আহত ও তিনজকে হত্যার পরও মসজিদটিতে জরিপ চালিয়েছে জরিপকারী দল। তারা আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মসজিদটির বিভিন্ন জায়গার ছবি ও ভিডিও ধারণ করে নিয়ে গেছেন। আগামী ২৯ নভেম্বরের মধ্যে আদালতের কাছে জরিপের প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।