۳ آذر ۱۴۰۳ |۲۱ جمادی‌الاول ۱۴۴۶ | Nov 23, 2024
কানাডায় অভূতপূর্ব তাপমাত্রা

কেন চরম শীত প্রধান দেশ কানাডায় এ ধরণের অভূতপূর্ব তাপমাত্রা বৃদ্ধি যা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে ? এটা আসলে বিশ্বব্যাপী আসন্ন ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের অশনি সঙ্কেত ।

হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী: কেন চরম শীত প্রধান দেশ কানাডায় এ ধরণের অভূতপূর্ব তাপমাত্রা বৃদ্ধি যা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে ? এটা আসলে বিশ্বব্যাপী আসন্ন ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের অশনি সঙ্কেত । ইউরোপে তথাকথিত রেনেসাঁর পরে ৩০০ বছর আগে ব্রিটেনে যে তথাকথিত প্রকৃতি বিধ্বংসী অমানবিক অমানুষিক শিল্প বিপ্লব সাধিত হয় তার পর থেকে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছেই । ২০৪০ অথবা ২০৭০ সালে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ শিল্প বিপ্লবের আগে বায়ু মণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণের দ্বিগুণ হয়ে যাবে । আর এটা হলে  মধ্য আমেরিকার ভৌগলিক অক্ষ বরাবর তাপমাত্রা ১১০ , ১২০ ও ১৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যাবে । তখন সমুদ্র সমূহের পানির তল বহু উঁচু হয়ে যাবে এবং সকল শস্য শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাবে ( দ্র : Bill McKibben প্রণীত The end of nature  পৃ : ৩০ ) । এই যদি অবস্থা হয় তাহলে মানবজাতির অস্তিত্ব অচিরেই এ পৃথিবীর বুক থেকে মুছে যাবে । যে হোমো সাপিয়ান (বর্তমান মানব জাতি ) শিল্প বিপ্লব ও অষ্টাদশ , ঊনবিংশ , বিংশ ও একবিংশ শতকের চোখ ধাঁধানো বৈজ্ঞানিক উন্নতি ও প্রগতি ছাড়াই প্রায় তিন লক্ষ বছর পৃথিবীতে টিকে থাকল অথচ এই তিন শো বছরের চোখ ধাঁধানো বিজ্ঞান , প্রযুক্তি ও শিল্পের উন্নতির বদৌলতে বিলুপ্তির দিকে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে এবং প্রয়াত বিজ্ঞানী স্টিভেন্স হকিংসের মতে মানুষ যেভাবে প্রযুক্তি ও শিল্পের যথেচ্ছা অপব্যবহার করে প্রকৃতির যেরূপ ধ্বংস সাধন করছে তাতে আগামী ১০০০বছরের মধ্যেই পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেবে !! এ কেমন শিল্প বিপ্লব , প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের উন্নতি যা মানুষকে ধ্বংস করেই ছাড়বে ? তাহলে এ ধরণের প্রকৃতি বিধ্বংসী শিল্প , বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ফায়দাটাই বা কী ? মানুষ প্রকৃতির সন্তান ও প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ । তাই যথেচ্ছা অযৌক্তিক ল্যাভিশ শিল্পায়ন করে প্রকৃতির ধ্বংস সাধন আসলে মানুষের নিজেরই ধ্বংস সাধন । এ যেন নিজের পায়েই কুড়াল মারা । প্রকৃতি বিধ্বংসী প্রযুক্তির বল্গাহীন লাগামহীন ব্যবহার , সম্পদের অপচয় ও সীমাহীন ভোগ বিলাস , লোভ লালসা , সম্পদ আহরণের লিপ্সা , নৈতিক চারিত্রিক অধ:পতন , চরম বস্তুবাদিতা  ইত্যাদি মানুষকে চতুষ্পদ জানোয়ারের চাইতেও অধম ও অধ:পতিত করেছে ।
গত একশো বছরে পৃথিবীর জনসংখ্যা তিনগুণ বৃদ্ধি পেলেও শিল্পোৎপাদন ও ভোগ্ পণ্যের ব্যবহার বেড়েছে তিনগুণ নয় বরং পঞ্চাশ গুণ । তার মানে বর্তমান কালের মানুষ অর্থাৎ আধুনিক মানুষ কত বড় লোভী ও লালসাগ্রস্ত । পরকালের বিশ্বাস ও চিন্তা না থাকলে কেবল বস্তুবাদী হলে সে মানুষ তো লোভী হবেই । তাই
  উন্নত প্রযুক্তি কিন্তু উন্নত চরিত্র ও নি:স্বার্থ উদার মনের পরিচায়ক নয় । অতীতে চোরের হাতিয়ার ছিল ছুড়ি , চাকু তলোয়ার ।আজ চোরের হাতিয়ার হচ্ছে উন্নত মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্র । তাই চোরের হাতে যদি উন্নত হাতিয়ার ও প্রযুক্তি চলে আসে তাহলে সে হবে নি: সন্দেহে বড় চোর ও বড় ডাকাত । তাই উন্নত চরিত্র , আখলাক , ধর্ম , বিবেক বোধ ও নীতি নৈতিকতা না থাকলে শুধুমাত্র বৈষয়িক , যান্ত্রিক  প্রযুক্তি গত উন্নতি মানুষের প্রকৃত সৌভাগ্য ( সাআদত ) , সুখ ও শান্তি আনয়ন তো করেই না বরং তাকে ধ্বংসের দ্বার প্রান্তেই নিয়ে যায় । কানাডায় ৪৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং তীব্র তাপদাহে ২৩০ জনের মৃত্যু এবং বিরাট সংখ্যক মানুষের অসুস্থ হয়ে যাওয়া থেকে কি প্রমাণিত হয় না বর্তমান বস্তুবাদী পাশ্চাত্য সভ্যতা মানব জাতিকে ধ্বংস করেই ছাড়বে যদি না এ সভ্যতার পতন ও আমূল পরিবর্তন ঘটে । পাশ্চাত্যের এ বস্তুবাদী সভ্যতা ও কৃষ্টি শুধু কয়েকটি নির্দিষ্ট দেশেই সীমাবদ্ধ নয় বরং এটা বিশ্বের সকল দেশেই বিস্তার লাভ করেছে । তাই ন্যয়পরায়ণতা , নীতিনৈতিকতা , ধর্ম এবং বিবেকবোধ নিয়ন্ত্রিত প্রকৃতি বান্ধব শিল্প , কলকারখানা , প্রযুক্তি ও জ্ঞান - বিজ্ঞানের সুষ্ঠু , সুস্থ ও সুষম বিকাশ একান্ত কাম্য ।
কানাডার এ তাপমাত্রা মরু প্রধান পশ্চিম এশিয়া ( মধ্য প্রাচ্য ) ও উত্তর আফ্রিকার তাপমাত্রা কেও হার মানিয়েছে !!! তাহলে এ থেকে পরিস্থিতি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ভয়াবহতা ঠিকই আঁচ করা যায় ।
শিল্পোন্নত পাশ্চাত্যের শিল্পোৎপাদন বিশালাকারে হ্রাস করাই হচ্ছে এ সমস্যার দ্রুত তাৎক্ষণিক সমাধান । আর এ সমস্যার দীর্ঘস্থায়ী সমাধান অত্যন্ত উন্নত অগ্রসর প্রকৃতি বান্ধব প্রযুক্তির বিকাশ ও ব্যবহার যা প্রকৃতি বান্ধব শিল্পের বিকাশ ঘটাবে ।

(মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান)

تبصرہ ارسال

You are replying to: .