۲۸ اردیبهشت ۱۴۰۳ |۹ ذیقعدهٔ ۱۴۴۵ | May 17, 2024
হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা মাসুম আলী গাজী

শেখ আব্বাস কুম্মী (রহঃ) ফাওয়ায়েদ আল-রাযাবিয়া নামক গ্রন্থে লেখেন যে, সারাখ্স ( তুর্কমেনিস্তান এর একটি বিখ্যাত শহর) নামক স্থান থেকে একটি কাফেলা ইমাম রেযা (আঃ)-এর যিয়ারাতের উদ্দেশ্যে পবিত্র মাশহাদে এসেছিলেন।

হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী: হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা মাসুম আলী গাজী বলেন: শেখ আব্বাস কুম্মী (রহঃ) ফাওয়ায়েদ আল-রাযাবিয়া নামক গ্রন্থে লেখেন যে, সারাখ্স ( তুর্কমেনিস্তান এর একটি বিখ্যাত শহর) নামক স্থান থেকে একটি কাফেলা ইমাম রেযা (আঃ)-এর যিয়ারাতের উদ্দেশ্যে পবিত্র মাশহাদে এসেছিলেন। সারাখ্স সীমান্তের নিকটে একটি স্থান। এই কাফেলার মধ্যে হায়দার নামে এক অন্ধ লোকও ছিলেন।

এই কাফেলা ইমাম আলি রেযা (আঃ)-এর যিয়ারাত এর শেষে সারাখ্সে ফিরে আসার জন্য যাত্রা শুরু করে। একদিন যাত্রা করে পথে একটি জায়গায় বিশ্রামের জন্য থামলো।

রাতের সময় ছিল, কাফেলার যুবকরা একে অপরকে বলল, "আসুন আমরা হায়দার এর সাথে মশকরা করি এতে আমাদের ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে।"

সুতরাং এই পরিকল্পনা করে, সবাই খালি কাগজের টুকরো নিয়ে একে অপরের সামনে ঘর্ষণ দিতে লাগল। যার ফলে কাগজ থেকে শব্দ ভেসে আসছিল এবং তারা একে অপরকে বলতে শুরু করল, তুমি কি এটা নিয়েছো ?

এক যুবক বলল : হ্যাঁ! ইমাম (আঃ) আমাকে এটা দিয়েছেন।

অন্য আরেকজন বলে : হে ভাই! তুমিও নিয়ে নিয়েছো? সে বলে : হ্যাঁ! আমিও একটা নিয়েছি। হায়দার হঠাৎ জিজ্ঞাসা করলেন :

তোমরা কী নিয়েছো?

তারা সবাই হায়দার কে বলল : হায়দার সাহেব! তাহলে এটা আপনার কাছে কি নেই?

হায়দার বলল :

না, আমি তো মোটেই জানি না এটি কী!

তারা বলল :

ইমাম রেযা (আঃ), হেরামের এক উঠোনে লোকদের মাঝে এই "সবুজ রঙের" কাগজ বিতরণ করছিলেন।

হায়দার জিজ্ঞাসা করলেন :

এই সবুজ কাগজটি কি হবে?

তারা বলল :

এই সবুজ কাগজটি হল জাহান্নামের পরিত্রাণ পত্র, আমরা এই কাগজটি কাফনের সাথে নিয়ে যাব এবং কিয়ামতের দিন আমরা জাহান্নামের আগুনে জ্বলবো না। কারণ আমরা এটা ইমাম রেযা (আঃ)- এর কাছ থেকে পেয়েছি।

একথা শোনামাত্রই ঐ দুর্বল ব্যক্তির হৃদয়টি ভেঙে গেলো, সে নিজেকে বলল : হে ইমাম রেযা (আঃ), আমি আপনার থেকে এ আশা করিনি যে, আপনি অন্ধ এবং দূরদৃষ্টি দের মধ্যে পার্থক্য করবেন। নিঃসন্দেহে আমি ছিলাম দরিদ্র ও অন্ধ তাই আমার নাম ঐ তালিকায় লেখা হয়নি, আমার দিকে খেয়াল করলেন না।

সবাই লক্ষ্য করল যে, হায়দার দাঁড়িয়ে পড়লেন এবং মাশহাদের দিকে হাঁটা শুরু করলেন। আর বললেন :

মাওলা ইমাম রেযা (আঃ)-কে স্বয়ং তাঁরই কসম! যতক্ষণ না তাঁর থেকে জাহান্নামের পরিত্রাণ পত্র না পাব ততক্ষণ পর্যন্ত সারাখ্স এ প্রত্যাবর্তন করব না।

একথা শুনে ঐ যুবকরা বলল :

আমরা আপনার সাথে মশকরা করছিলাম এবং জাহান্নামের পরিত্রাণ পত্র আমাদের কাছেও নেই। হাজার চেষ্টা ও ব্যাখ্যা দেওয়ার পরেও হায়দার স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করলেন না। তিনি ভাবছিলেন যে, এই সব আমাকে শুধু মাশহাদে না যেতে দেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।

তখন কোনও শক্তি হায়দার কে মাশহাদে যেতে বাধা দিতে পারল না।

শেখ আব্বাস কুম্মী (রহঃ) বলেন :

লোকজন এক ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে হায়দার কে কাফেলার দিকে ফিরে আসতে দেখল এবং তার হাতে একটি সবুজ কাগজ ছিল। আর ঐ কাগজে লেখা ছিল :

اَمانٌ مِّنَ النار،من ابن رسول الله على بن موسى الرضا

"এটা রসূলের সন্তান আলি বিন মূসা আর রেযা'র পক্ষ থেকে জাহান্নামের পরিত্রাণ পত্র।"

লোকেরা জিজ্ঞাসা করল : আপনি কীভাবে এক ঘন্টার মধ্যে এত দীর্ঘ পথ অতিক্রম করলেন ?

ঐ ঈমানদার হায়দার জবাব দিলেন : আমি কয়েক কদম পথ অতিক্রম করলাম হঠাৎ দেখলাম যে, একজন সম্মানিয় ব্যক্তি এসে বললেন :

তুমি কষ্ট করো না, আমি তোমার জন্য পরিত্রাণ পত্র নিয়ে এসেছি। এটি নিয়ে ফিরে যাও ....।

হে গরীব ইমাম! সর্বদা আপনার উপর সালাম ও আল্লাহর করুণা বর্ষিত হোক।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .