۲۸ اردیبهشت ۱۴۰۳ |۹ ذیقعدهٔ ۱۴۴۵ | May 17, 2024
আয়াতুল্লাহ্ গুলপয়গনি (হাফিঃ)
আয়াতুল্লাহ্ গুলপয়গনি (হাফিঃ)

ইমাম জাওয়াদ (আঃ)-এর পূর্বে আহলে বাইতের পবিত্র ইমামগণের (আঃ) কেউই এত অল্প বয়সে ইমামতের দায়িত্ব গ্রহণ করেননি

হাওজা নিউজ এজেন্সি বাংলাঃ ইমাম জাওয়াদ (আঃ) এর শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়াতুল্লাহ্ গুলপয়গনি (হাফিঃ) এক শোকবার্তায় লিখেন,

কিশোর বয়সে ইমামতের দায়িত্ব গ্রহণঃ

ঐ সময়ে শৈশব বয়সে (যৌবনপ্রাপ্ত হওয়ার পূর্বে) ইমামত গ্রহণের ঘটনা বিরল; এবং কি ইমাম জাওয়াদ (আঃ)-এর পূর্বে  আহলে বাইতের পবিত্র ইমামগণের (আঃ) কেউই এত অল্প বয়সে ইমামতের দায়িত্ব গ্রহণ করেননি। তবে নবী-রাসূলগণের মধ্যে অল্প বয়সে নবুয়্যতের দায়িত্ব গ্রহণের ঘটনা উল্লেখযোগ্য। হযরত ঈসা ও হযরত ইয়াহিয়া (আঃ) ও অল্প বয়সে নবয়্যত প্রাপ্ত হয়েছিলেন। পবিত্র কুরআনে হযরত ঈসা (আঃ) সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছেঃ

'... اِنّی عَبْدُ اللهِ آتانِی الْکِتابُ وَ جَعَلنی نَبِیّاً'

অর্থঃ 'আমি তো আল্লাহর দাস। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং আমাকে নবী করেছেন।' [সূরা মরিয়ম- ৩০]

হযরত ইয়াহিয়া (আঃ) সম্পর্কে কুরআনে বর্ণিত হয়েছেঃ

'...وَ آتَیْناهُ الْحُکْم صَبِیّاً'

অর্থঃ '... আমি তাকে অল্প বয়সেই বিচারবুদ্ধি দান করেছিলাম!' [সূরা মরিয়ম- ১২]

ইমামগণের (আঃ) জ্ঞান ও শিক্ষা এবং তার মারেফাত বোঝার সক্ষমতা তাঁদের শারীরিক বিকাশ ও দীর্ঘ শিক্ষা জীবনের ফলে নয়, বরং তা বিশেষভাবে (ঐশ্বরিক) অর্জিত বলেই বিশ্বাস করা হয়।

তাঁদের (আঃ) প্রত্যেকের শৈশবকাল থেকেই তাঁদের সম্পর্কে অনেক বিস্ময়কর উপাখ্যান ও ঘটনা বর্ণিত হয়েছে, যা তাদের পরিপূর্ণতা, গুণাবলী এবং অসাধারণ প্রতিভার বাস্তব প্রকাশ করেছে। এমনকি মুয়াবিয়া, ইয়াজিদ এবং আবদুল্লাহ ইবনে উমরও তাঁদের এলমে লাদুনির গল্প বলতেন। যখন হযরত মুসা ইবনে জাফর (আঃ)-এর বয়স সাত বছর, তখন থেকেই

যেহেতু আবু হানীফা তাঁর কাছে আসতেন এবং তাঁর কাছে ফেকাহ শাস্ত্র সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন করতেন এবং উত্তর শুনতেন।

যে কেউ এই মহীয়সী ইমামদের (আঃ) জীবনী অধ্যায়ন করবে এবং তাঁদের শৈশব ও কৈশোরের জ্ঞান বিষয়ে গভীর পর্যবেক্ষণ করবে, বুঝতে সক্ষম হবে যে, এ সমস্ত জ্ঞান ও মারেফাত (প্রচলিত) শিক্ষাগ্রহণের মাধ্যমে অর্জিত হয়নি।

আমিরুল মুমিনিন আলী (আঃ)-এর বিজ্ঞান, আইন, ধর্মতত্ত্ব... ইত্যাদিসহ ইসলামি সমস্ত শাখার অন্তহীন জ্ঞান কীভাবে (প্রচলিত) শিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত হত? এবং শেষ নবী (সা.) এর  বিশেষ মক্তব ব্যতীত কোনো মক্তব-মাদ্রাসাও ছিল কি যে সে সময় তিঁনি (আঃ) এমন একটি ডিগ্রি অর্জন করতে পারতেন এবং কোনো শিক্ষকও ছিলেন কি যিনি এই অনন্য ছাত্রকে প্রশিক্ষণ দিতে পারতেন? এবং আলী (আঃ) ব্যতীত এমন কোনো ছাত্রও কি ছিলেন যিনি নবুয়্যতের জ্ঞান বহন করতে পারতেন এবং নবীর জ্ঞান নগরীর প্রবেশ দ্বারে পরিণত হতে পারতেন?

রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সমস্ত সাহাবী ও অনুসারীদের জ্ঞান আলী (আঃ) এর জ্ঞানের নিকট সমুদ্রের বিপরীতে একফোঁটা পানির সমতুল্য ছিল।

এই জ্ঞান আল্লাহতালার বিশেষ অনুগ্রহ এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) এর উত্তরাধিকারী হিসেবে প্রাপ্ত। এই জ্ঞানের প্রকাশ যদি অপ্রাপ্ত বয়স্কের জন্য অবিশ্বাস্য হয়, তবে তা বয়স্কদের জন্যও তাই। বয়স্কদেরও কেউ কি আছেন যিনি এই জ্ঞান ধারণের সক্ষমতা রাখেন? এবং বয়স্ক জ্ঞানীদের কেউ কি নজিরবিহীন এবং অনড়ভাবে মানুষের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন?

এক্ষেত্রে আমাদের সাত বছরের শিশু এবং সত্তর বছরের বৃদ্ধের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই; উভয়কেই এই জ্ঞান অর্জনে সক্ষম হতে এবং এটি বোঝার জন্য ও যুগোপযোগী বর্ণনা করার জন্য অবশ্যই সক্ষমতা ও দক্ষতা থাকতে হবে।

যেমন মনসুর (খলিফা) ইমাম জাফর আস-সাদিক (আঃ) সম্পর্কে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন যে, 'এই ব্যক্তি তাদের একজন যাদের সম্মানে আল্লাহতালা বলেছেন,

'ثُمَّ اَوْرَثْنَا الْکِتابَ الَّذینَ اصْطَفَیْنا مِنْ عِبادِنا...'

অর্থঃ 'অতঃপর আমি কিতাবের অধিকারী করেছি তাদেরকে যাদেরকে আমি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে মনোনীত করেছি!...' [সূরা ফাতির- ৩২]

প্রত্যেক ইমামই আল্লাহতালার মনোনীত বান্দা ছিলেন, আল্লাহ্‌  যাদের কিতাব ও কিতাবের জ্ঞান দান করেছিলেন এবং উম্মত কখনই আহলে বাইতের সদস্য এমন ব্যক্তিদের থেকে বঞ্চিত হবে না।

হাদীসে "সাকালাইন", "সাফিনা", "আমান" এবং হাদীস "ফাই খল খালাফ মিন উম্মাতি" এবং অন্যান্য রেওয়ায়ত থেকে এই বিষয়টি স্পষ্ট ও প্রমাণিত হয়েছে এবং সময়ের সাথে সাথে তা অকাট্য হয়েছে যে, এই পবিত্র বংশ ধারা ব্যতীত অন্য কেউ এই হাদিসগুলির অংশ নয় এবং না তারা আল্লাহর জ্ঞানে গুণান্বিত এবং না তারা আল্লাহর বাসিরাতের বিশেষ উপহার। আর মুসলমানরা যদি পূর্ব থেকে পশ্চিমেও যায় তবুও তাঁরা (আঃ) ব্যতীত তাদের অন্বেষিত সঠিক জ্ঞান খুঁজে পাবে না।

অনুবাদ: রাসেল আহমেদ রিজভী

تبصرہ ارسال

You are replying to: .