۲۰ اردیبهشت ۱۴۰۳ |۱ ذیقعدهٔ ۱۴۴۵ | May 9, 2024
'জবেহ্ আজিম' বা 'মহান কোরবানি'
'জবেহ্ আজিম' বা 'মহান কোরবানি'

হাওজা / আনুষ্ঠানিক কোরবানি বিগত সাড়ে চার হাজার বছর ধরে সমগ্ৰ মুসলিম বিশ্বে চালু রয়েছে। এটা হজরত ইবরাহিম (আঃ) ও কিশোর পুত্র হজরত ইছমাইল (আঃ)-এর ঐশী প্রেমের চরম নিদর্শন।

হাওজা নিউজ এজেন্সি বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, পর্ব ৪- আল্লাহ্ পাকের দরবারে যে সর্বোচ্চ সম্মান শাহাদতে জাহেরী ও শাহাদতে ছিররী রক্ষিত আছে তা আল্লাহ্ পাক হজরত ইসমাইল (আঃ)-কে দেন নাই। তা শুধু হাসনাইন (আ.) পাক দ্বয়ের জন্য রক্ষিত আছে।

মাওলা হাসান (আঃ)-কে দান করবেন শাহাদতে ছিররী ও মাওলা হােছাইনকে দান করবেন শাহাদতে জাহেরী। বিনা দোষে গুপ্তভাবে যে কোনো উপায়ে নিহত হওয়াকে শাহাদতে ছিররী ও ধর্ম রক্ষার জন্য সম্মুখ যুদ্ধে জেনে শুনে আত্ম বিসর্জন করাকে বলা হয় শাহাদতে জাহেরী।

ইমাম বংশ হলেন করুনার কাওছার। হাসি মুখে গলায় ছুরি বরণ করে নিয়েছেন তবু আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেননি। ফরিয়াদ করলে বিরোধী দল সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংস হয়ে যেত। আঘাতের বিনিময়ে প্রেম বিতরণ করাই ইমাম বংশের আদর্শ। নবী করিম (দঃ) ও ইমাম বংশ কাউকে ধ্বংস করতে এ দুনিয়াতে আসেননি। তারা এসেছেন গড়তে। হাসি মুখে প্রাণ বলি দিয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গণ করে প্রেমের মূল্যবােধকে দাঁড় করাতে।

সুগভীর মননে একবার ভেবে দেখুন তো হযরত ইবরাহিম (আঃ) তাঁর আপনি পুত্রকে কোরবানি করতে গিয়ে হাত থর থর করে কাঁপছে। মমতার কাছে উৎসর্গ হার মানতে চাইছে। তাই কাপড়ে চােখ দুটাে বেঁধে নিতে হল, অথচ কারবলার ময়দানে আড়াই দিনের উপবাসী তৃষ্ণিত অবস্থায় থেকে পরিবার-পরিজনের মায়া ত্যাগ করে আল্লাহর রাহে হজরত ইমাম হােসাইন (আঃ) একটি একটি করে সন্তানদের কোরবানী দিয়ে চলেছেন। আপাদমস্তক হুবহু হজরত মোহাম্মদ (দঃ)-এর সঙ্গে মিল হজরত আলী আকবর (আঃ) যার কণ্ঠস্বর শুনতে নবী করীম (দঃ)-এর কণ্ঠস্বর বলে ভুল হয়; সেই সদ্য যৌবন প্রাপ্ত হররত আলী আকবর শাহাদত বরণ করলেন। শহীদ হলেন দুধের শিশু আলী আসগর। তবুও আল্লাহ পাকের কাছে করেননি কোনো ফরিয়াদ, কোনো কাতর যাঞ্চা। কেউ কি ভেবে দেখেছে সবাই জাহেরী ভাবে হজ্ব করে পশু কোরবানি দিচ্ছেন আর তাদেরকে বাঁচানোর জন্য কারবালায় কোরবানি হয়ে গেলেন আল্লাহ পাক ও রাসুলে পাক (দ:) প্রিয়জন। একটু চােখ বন্ধ করে ভেবে দেখুন তো, চিন্তা করুন তো সেই কারবালার দৃশ্য। সেই পানির পিপাসায় ছাতিফাঁটা আলী আসগরের শহীদ হবার দৃশ্য। তুলনা করতে গেলে কি হযরত ইবরাহিমের (আঃ) কোরবানি প্ৰদীপ হতে সূর্য খোঁজার মত তুলনা হয় না? হযরত ইসমাইল (আ:) এর প্রাণ দিতে হয়নি, তাঁর পরিবার পরিজনদেরকেও আল্লাহর পথে বিসর্জন দিতে হয়নি, তারপরেও হযরত ইসমাইল (আ:)'র স্মরণে পৃথিবী আজও কম্পমান। আর মাওলা হোসাইন (আ:) তাঁর ৬ মাসের শিশুটি সহ মোট ৭২ জনকে কোরবানি দেবার পরেও মুসলিম জাতির সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারেননি। হায় আফসোস, কতটা দূর্ভাগ্য! কারবালায় নবী পরিবারের আত্মোৎসর্গের কথা, মহা আত্মত্যাগের কথা মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ ছাড়া মুসলিম বিশ্বের তেমন কেউ জানে না, জানতেও চায় না।

আমার প্রশ্ন হল আলাহর হুকুমের কারনে সুন্নাতে ইব্রাহিম (আ:) খাতিরে মুসলমান হিসাবে সুন্নি-শিয়া, কাদিয়ানী, সালাফি, ওহাবী, মওদুদী, খারেজী-আহলে হাদীস সব ফেরকা মিলে শত লক্ষ কোটি পশু কোরবানি দিয়ে আল্লাহ কে খুশি করলাম; কিন্তু পৃথিবীর ইতিহাসে কুলকায়েনাতের সেরা কোরবানি হোসাইনী (আ:) (স্বপরিবার সবাই শহীদ) জন্য আমরা মুসলমান নামধারীরা কি করছি? ইসলামকে বাঁচনোর জন্য হোসাইনি কোরবানি (আ:) এত তুচ্ছ হয়ে গেল? সুন্নাতে ইব্রাহিমী কোরবানির জন্য যেখানে লক্ষ কোটিরপশু জবেহ করলাম সেখানে হোসাইনী কোরবানির (আ:) জন্য আমরা মুসলমানরা এতটা নীরব, নির্বাক? সমাপ্ত

(গ্রন্থসূত্রঃ- জবেহ আজিম এবং জিকিরে শাহাদাত- সাইয়্যেদ হোসাইন উল হক)

 সংকলন- রাসেল আহমেদ রিজভী

تبصرہ ارسال

You are replying to: .