হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের জিহাদী সংগঠনগুলো।
কিছু দেশে জিহাদীরা তালেবানের বিজয়ে আতশবাজি পুড়িয়েছে, সোমালিয়ায় মিষ্টি বিতরণ করেছে, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের ইসলামপস্থী সংগঠনগুলো অনলাইনে নানাভাবে এ ঘটনাকে স্বাগত জানিয়েছে।
মাটি কামড়ে লড়াই করতে পারলে কীভাবে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রবল সামরিক শক্তির বিরুদ্ধেও জয়ী হওয়া যায়, তারই এক দৃষ্টান্ত হিসেবে এই ঘটনাকে তারা দেখছে।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, আফগানিস্তানে তালেবানের জয়ের ফলে মধ্যপ্রাচ্য এবং মধ্য এশিয়ায় জিহাদী মতবাদের এক নতুন যুগের সূচনা হতে পারে।
সবচেয়ে বড় হুমকি আসতে পারে আল-কায়েদা এবং তথাকথিত ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর সাথে সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলোর দিক থেকে, যারা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুর্বল হয়ে পড়েছিল কিন্তু একেবারে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়নি।
তালেবান কিছুকাল আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি চুক্তি করেছিল যে তারা এমন কোন উগ্রপন্থী সংগঠনকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেবে না, যারা পশ্চিমা লক্ষ্যবস্তুর ওপর আক্রমণ চালাতে চায়। কিন্তু আল-কায়েদার সাথে তালেবানের এখনও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে।
অন্যদিকে আইএস হচ্ছে আল-কায়েদার প্রতিদ্বন্দ্বী। কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এই গোষ্ঠীটি এখন একটা চাপের মুখে থাকবে, এটা দেখানোর জন্য যে তারা এখনও প্রাসঙ্গিক।
ইসলামিক স্টেট অব খোরাসান প্রভিন্স (আইএস-কে অথবা আইএসকেপি) একটি আইএস সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠী এবং তারা এ ক্ষেত্রে কোন সময় নষ্ট করেনি।
তালেবান কাবুলে ঢোকার কয়েকদিনের মধ্যেই গত ২৬শে অগাস্ট তারা কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে একটি আত্মঘাতী আক্রমণ চালায়। এতে ১৩ জন মার্কিন সেনা সদস্যসহ অন্তত ১৭০ জন নিহত হয়।
তালেবান, ইসলামিক স্টেট, আর আল-কায়েদা একই আদর্শিক ভিত্তির ওপর গড়ে ওঠা তিনটি গোষ্ঠী, কিন্তু তাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এবং কার্যপদ্ধতিতে অনেক পার্থক্য আছে।
কিন্তু মৌলবাদী আদর্শগত মিল ছাড়া এই তিনটি গোষ্ঠীর মধ্যে পার্থক্যগুলো কী?
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের সুফ্যান সেন্টারের গবেষক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক কলিন ক্লার্ক বলছেন, আফগানিস্তানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হচ্ছে তালেবান।
তার মতে, আল-কায়েদা হচ্ছে এমন একটি জিহাদী গোষ্ঠী যারা জাতীয় সীমানার মধ্যে আবদ্ধ নয়, এবং তারা তাদের নেটওয়ার্ক নতুন করে গড়ে তুলতে চাইছে। "ইসলামিক স্টেটও তাই। কিন্তু তাদের এখন ওঠার জন্য একটা কষ্টকর সংগ্রাম করতে হবে, কারণ তারা আল-কায়েদা এবং তালেবান - উভয়েরই চরম শত্রু।"