হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, আয়াতুল্লাহ সৈয়েদ সিস্তানী সাহেব এর পূর্ণাঙ্গ ওয়াকিল, খোজা জামে মসজিদের ইমাম-এ-জুমা এবং জামিয়া আমির-উল-মোমিনীন (নাজাফি হাউস) মুম্বাইয়ের প্রিন্সিপাল, হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমীন সৈয়েদ আহমেদ আলী আবদী সাহেব ক্বিবলা সদ্য প্রয়াত আয়াতুল্লাহ আল উযমা সৈয়েদ মুহাম্মদ সাঈদ আল হাকীম সাহেব (রহঃ)-এর মৃত্যুবরণ কালে শোক পত্র জারি করেছেন যা নিম্নরূপ :
মহান মুজতাহিদ, ফক্বীহ এ আহলেবায়েত ও মুজাহিদ আয়াতুল্লাহ আল উযমা, হযরত সৈয়েদ মুহাম্মদ সাঈদ আল হাকীম (রহঃ)-এর মৃত্যু ইসলাম জাতি এবং বিশেষ করে শিয়া সম্প্রদায়ের জন্য তথা হাওজা এ নাজাফ আল আশরাফ এর জন্য এক বিরাট বিপদজনক ঘটনা। হাকীম বংশের এই বিশিষ্ট প্রতীয়মান ব্যক্তি কেবল হাকীম বংশের জন্য নয় বরং সমগ্র পৃথিবীর শিয়া সম্প্রদায়ের জন্য এক আদর্শ ব্যক্তি ছিলেন। যিঁনি তাঁর জীবনের বেশিরভাগ সময় বন্দী ও কষ্টের মধ্যে অতিবাহিত করেছেন। তবে নিজের কারাবাসের কষ্ট সত্ত্বেও, এই মহান ব্যক্তি তাঁর পাণ্ডিত্যপূর্ণ কাজ চালিয়ে গিয়েছেন, এমনকি বন্দী অবস্থায়ও মানুষের শিক্ষার তৃষ্ণা নিবারণ করেছেন। আর অভিশপ্ত সাদ্দামের কাছ থেকে তিনি যে নৃশংসতা সহ্য করেছিলেন, যার প্রভাব তাঁর স্বাস্থ্যের উপর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। এটি প্রকৃতপক্ষে ইসলামী উম্মাহ এবং শিয়া জাতির জন্য একটি বিরাট দুঃখজনক ঘটনা। আর প্রকৃতপক্ষে এটি এমন এক অমূল্য পদ যা সমগ্র ইসলামের জন্য এবং বিশেষ করে ওই মহান ইমামের জন্য, যাঁর প্রতিনিধিত্ব তিনি করেছেন এবং যাঁর সাধারণ প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে তিনি সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, তাঁর (আঃফাঃ) হৃদয়ের জন্য এক বড় ধাক্কা।
আমি সর্বপ্রথমে যুগের ইমামের খেদমতে, তারপর হাকীম পরিবারের খেদমতে এবং হাওজা-এ-ইলমিয়া নাজাফ আল আশরাফ এর খেদমতে সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
প্রকৃতপক্ষে, তিনি যে খেদমত করেছেন এবং যে সমস্ত গ্রন্থ সমূহ লিখেছেন তা খুবই বিস্ময়কর। তিনি কেবল ফিক্বহ এবং শব্দ প্রকরণ শাস্ত্রে দক্ষতা ও পারদর্শিতা ছিলেন না বরং অন্যান্য ক্ষেত্রেও নিজের কলমের কালি ব্যয় করেছেন। যেমন "ওয়াক্বেয়া আল-তাফ এবং ফি রিহাব আল-আক্বীদা" নামক তাঁর গ্রন্থকে অধ্যায়ন করুন। এই সমস্ত গ্রন্থ বিস্তৃত অধ্যয়নের উজ্জ্বল ছবি। ফিক্বহ শাস্ত্র ছাড়াও, আক্বায়েদ এবং ইতিহাসের প্রতি তাঁর গভীর দৃষ্টি ছিল। এ সব তাঁর গ্রন্থ থেকে সুস্পষ্ট এবং এই ধরনের ব্যক্তিত্ব অদ্বিতীয় হয়ে থাকেন।
কিছুদিন কারাগারে থাকার পরও তিনি তাঁর শিক্ষা অর্জনের যাত্রা অব্যাহত রাখেন। মানুষদের তারবিয়াতের শিক্ষা দেন। তাক্বওয়া ও ধার্মিকতা, সরলতা এবং নম্রতা এ সব বৈশিষ্ট্য তাঁর ব্যক্তিত্বের মধ্যে একত্রিত ছিল। এই ধরনের ব্যক্তিত্ব খুব কমই জন্মায়।
যাইহোক মহান আল্লাহ তাআলার কাছে তাঁর উচ্চস্থান কামনা করি এবং তার সাথে এটাও দোয়া করি যে, তাঁর পরিবারের কেউ একজন তাঁর উত্তরসূরী হোক যিনি তাঁর শিক্ষা সফর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। সমস্ত মুজতাহিদ এবং আলেমদের নিকটে সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আর সাথে সাথে দোয়াও করি যে, মহান আল্লাহ তাআলা তাঁকে সর্বোত্তম স্থান দান করুন এবং তাঁর শুভ জন্মদিন থেকে কেয়ামতের শেষ দিন পর্যন্ত আহলেবায়েত (আঃ)-এর শেফাআত নসিব হোক।
হুজ্জাতুল ইসলাম মাওলানা সৈয়দ আহমদ আলী আবদী (জামিয়া আমির-উল-মোমিনীন (নাজাফি হাউস) মুম্বাইয়ের প্রিন্সিপাল)