হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, আঞ্চলিক দেশগুলোতে বিদেশি হস্তক্ষেপের কারণে এসব দেশের মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয় এবং এ দেশগুলোর মারাত্মক ক্ষতি হয়। তিনি ইরানের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে বিদেশি সেনা হস্তক্ষেপ ছাড়াই নিজেদের সমস্যা সমাধানের জন্য এসব দেশের প্রতি আহ্বান জানান।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, একটি দেশের উন্নয়নের চাবিকাঠি হচ্ছে সেদেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা। এ বিষয়টি ইরানের কাছে স্বাভাবিক হলেও বিশ্বের বহু দেশ এমনকি অনেক ইউরোপীয় দেশও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে মারাত্মক দুর্বল অবস্থায় রয়েছে।
আমেরিকা ও ইউরোপের মধ্যকার সাম্প্রতিক টানাপড়েনের কথা উল্লেখ করে সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ইউরোপের কোনো কোনো দেশ আমেরিকার পদক্ষেপকে ‘পেছন থেকে ছুরিকাঘাত’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। এসব দেশ একথা বলতে চেয়েছে যে, ইউরোপকে ন্যাটো তথা আমেরিকার ওপর নির্ভরশীলতা বাদ দিয়ে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, আমেরিকার মতো যে দেশটি ইউরোপের শত্রু নয় সে দেশটির ওপর নিজেদের নিরাপত্তার জন্য নির্ভরশীল অবস্থায় যখন ইউরোপীয় দেশগুলো নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে তখন যেসব দেশ সরাসরি নিজেদের সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ আমেরিকাসহ অন্যান্য বিদেশি শক্তির হাতে ছেড়ে দিয়েছে তাদের অবস্থা সহজেই অনুমেয়।
বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরতার মাধ্যমে যেসব দেশ নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায় তারা মারাত্মক ভুলের মধ্যে রয়েছে- উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিরাপত্তা, যুদ্ধ ও শান্তিতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরশীলতার পরিণতি মারাত্মক বিপর্যয় ছাড়া আর কিছু হয় না।
আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা অপসারণের প্রতি ইঙ্গিত করে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, আমেরিকা তালেবানকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ২০ বছর আগে আফগানিস্তান দখল করে এবং গত দুই দশকে তারা গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ ছাড়া দেশটিকে আর কিছু উপহার দেয়নি। অবশেষে তারা সেই তালেবানের হাতে আফগানিস্তানের ক্ষমতা হস্তান্তর করে চলে গেছে। এই ঘটনায় বিশ্বের বহু দেশের শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে।
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, মার্কিন সেনাবাহিনীর শক্তিমত্তা সম্পর্কে হলিউডে যেসব ফিল্ম তৈরি করা হয় সেগুলো যে কেবল সেলুলয়েডের পর্দায় আছে বাস্তবে নেই তা আফগানিস্তানে আরেকবার প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি আঞ্চলিক দেশগুলোকে নিজস্ব শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠন করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিরক্ষা শক্তির ভিত্তি গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি। সর্বোচ্চ নেতা বলেন, এ অঞ্চলের দেশগুলোর সেনাবাহিনীগুলো আঞ্চলিক নিরাপত্তা রক্ষা করতে সক্ষম। কাজেই বিদেশি সেনারা যাতে তাদের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে আঞ্চলিক বিষয়াদিতে হস্তক্ষেপ করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে।