۱ خرداد ۱۴۰۳ |۱۳ ذیقعدهٔ ۱۴۴۵ | May 21, 2024
ফাতেমা জাহরা (সা:)
ফাতেমা জাহরা (সা:)

হাওজা / হজরত আবুবকর (রাঃ) ও উমর(রাঃ) কেন রাসুলের (সাঃ) কন্যাকে 'ফদকের' জমি থেকে বঞ্চিত করেছেন?

পর্ব ৭- ফাতিমার ইন্তেকালের পর ফদকের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসঃ

ঐতিহাসিক গ্রন্থ থেকে ফদকের ৩০০ বছরের ইতিহাস বর্ননা করার পেছনে মুলত ৩টি প্রশ্নের ব্যাখ্যা প্রদান করাই উদ্দেশ্য—

ক) আবুবকর বলেছেন রাসুল (সাঃ) নাকি তাকে বলেছেন, “নবীদের পরিত্যাক্ত সম্পদ তাঁদের ওয়ারিশগন প্রাপ্য হন না।“ এহেন অযৌক্তিক উক্তি রাসুলের (সাঃ) নামে চালিয়ে দিয়ে যে বিধির প্রচলন করতে চেয়েছিলেন তা বাতিল করা। আবুবকরের এ বক্তব্য পরবর্তী ২ জন খলিফা উমর ও উসমান দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে এবং উমাইয়া ও আব্বাসীয় অন্য বাদশাগন দ্বারাও প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।একথা মনে রাখতে হবে যে, আবুবকরের খেলাফতের বৈধতা ও সঠিকতা এবং তার কর্মকান্ডের ওপরই পরবর্তী খেলাফতের বৈ্ধতা ও ন্যায্যতা সম্পুর্নরুপে নির্ভর করে।

খ) আমিরুল মুমিনিন হযরত আলী ও ফাতিমার বংশধরগন কখনো তাদের দাবীর ন্যায্যতা, বৈধতা ও যৌক্তিকতা সম্পর্কে কোনরুপ দ্বিধা করেন নি। তাঁরা সব সময়ই সুনিশ্চিত ছিলেন যে, ফাতিমার ন্যাসঙ্গত অধিকার আবুবকর কেড়ে নিয়েছে এবং বৈধ দাবী আবুবকর প্রত্যাখ্যান করেছে। কারন ফাতিমা কখনো কোন কিছুর জন্য মিথ্যা দাবী উথথাপন করতে পারেন না।যদি এমনটি কেউ বলে যে, ফাতিমার দাবী মিথ্যা তবে নিশ্চয়ই মনে করতে হবে সে ( যে এমন করে ) মিথ্যাবাদী।

গ) যখনই খলিফা আল্লাহর আদেশ কার্যকর করার সিদ্বান্ত নিয়েছে এবং ন্যায়বিচার করার চিন্তা করেছে এবং ইসলামিক বিধানকে সমুন্নত করার চিন্তা করেছে, তখনই তারা ফাতিমাকে ফদক ফেরত দিয়েছে।

উমর ইবনে খাত্তাব ছিলেন তাদের মধ্যেও ১ম সারির লোক যারা ফাতিমাকে ফদক থেকে বঞ্চিত করার কাজে লিপ্ত ছিলেন। উমর নিজেই স্বীকার করেছিলেনঃ

যখন আল্লাহর রাসুল ইন্তেকাল করেন তখন আমি আবুবকরকে সঙ্গে করে আলীর কাছে গিয়ে বললাম, আল্লহর রাসুলের পরিত্যক্ত বিষপ্য-সম্পত্তি সম্বন্ধ্বে আপনি কি ভেবেছেন?” আলী বললেন, “রাসুলের সব কিছুরই একমাত্র উত্তরাধিকারী আমরা”। তখন আমি (উমর) বললাম, “খাইবারের সম্পত্তিতেও?” তিনি বললেন, “হাঁ, খাইবারের সম্পত্তিতেও” আমি বললাম, ”ফদকেও”? তিনি বললেন, “হাঁ,ফদকেও”। তখন আমি বললাম, “আল্লাহর কসম, আমরা তা হতে দেব না”। আপনি যদি করাত দিয়েও আমাদের কেটে ফেলেন আমরা তা হতে দেব না”। (শাফী,৯ম খন্ড,পৃঃ৩৯-৪০)।

আগেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, আবুবকর দ্বারা প্রদত্ত ফদকের দলিল উমর ফাতিমার হাত থেকে টেনে নিয়ে ছিড়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু উমর যখন খলিফা হলেন (১৩/৬৩৪-২৩/৬৪৪) তখন তিনি রাসুলের উত্তরাধিকারীদের ফদক ফেরত দিয়ে ছিলেন। প্রসিদ্ব ঐতিহাসিক ও ভৌগলিক ইয়াকুত হামাবি (৫৭৪/১১৭৮-৬২৬/১২২৯) লিকেছেনঃ

উমর ইবনে খাত্তাব খলিফা হবার পর যখন বিজয় লাভ করলেন এবং মুসলিমগন মোটামুটি সম্পদশালী হয়ে উঠলো এবং বায়তুল মাল জনগনের প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হলো তখন তিনি আগের খলিফা আবুবকরের সিধ্বান্ত বাতিল করে রায় দিলেন যে, ফদক রাসুলের (সাঃ) উত্তরাধিকারীদের হাতে ফেরত দেয়া হলো।।...........( হামাবি, ৪র্থ খন্ড,পৃঃ২৩৮-২৩৯); সামহুদী, ৩য় খন্ড,পৃঃ৯৯৯;আজহারী,১০ম খন্ড,পৃঃ১২৪;মঞ্জুর,১০ম খন্ড,পৃঃ৪৭৩; জাবিদী, ৭ম খন্ড,পৃঃ১৩৬)।

উপরে বর্নিত ইতিহাস থেকে থেকে বুঝা যায় যে, আবুবকর ও উমর কোন ধর্মীয় কারনে ফদক থেকে ফাতিমাকে বঞ্চিত করে আত্নসাত করেননি।শুধুমাত্র রাজনৈ্তিক ও অর্থনৈ্তিক অবস্থার কারনে তারা এটি করেছেন।যখন খেলাফতে তাদের আসন শক্তিশালী হয়েছে তখনই উমর তার সিদ্বান্ত পরিবর্তন করে ফদক ফেরত দেয়ার রায় দিয়েছিল। আমিরুল মুমিনিন হযরত আলীকে (আঃ) অর্থনৈ্তিক অসচ্ছলতায় রাখতে পারলে খেলাফত দখল কিছুটা নির্বিঘ্ন থাকবে বলে তারা এটি করেছেন।

সংগৃহীত।

আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদ ওয়ালা আলে মোহাম্মদ।

নিবেদক- মোহাম্মদ হোসাইন, সদস্য সচিব বাংলাদেশ ইমামিয়া জনকল্যাণ ফাউন্ডেশন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখা।

تبصرہ ارسال

You are replying to: .